আলোচিত ভাস্কর মৃণাল হকের চিরপ্রস্থান
.tdi_2_1ad.td-a-rec-img{text-align:left}.tdi_2_1ad.td-a-rec-img img{margin:0 auto 0 0} (adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});ঢাকা নগরীর বিভিন্ন স্থানে স্থাপিত ভাস্কর্যের জন্য আলোচিত ভাস্কর মৃণাল হক আর নেই। গতকাল শনিবার প্রথম প্রহরে গুলশানের বাসায় তিনি মারা গেছেন বলে জানিয়েছেন তার সহযোগী গ্রাফিক্স ডিজাইনার মো. আলমগীর। তিনি বলেন, উনার ডায়াবেটিসসহ বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগ ছিল। গত শুক্রবার রাতে উনার সুগার লেভেল কমে গিয়েছিল, পাশাপাশি অক্সিজেন মাত্রাও কমে গিয়েছিল। মৃণাল হকের বয়স হয়েছিল ৬২ বছর। মতিঝিলের ‘বলাকা’র ভাস্কর মৃণাল হক সবচেয়ে বেশি আলোচিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণের লেডি জাস্টিসের আদলে গড়া ভাস্কর্যের জন্য। ধর্মীয় সংগঠনগুলোর বিরোধিতার কারণে ওই ভাস্কর্যটি সুপ্রিম কোর্টের সামনে থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। বিএনপি আমলের মন্ত্রী ব্যারিস্টার আমিনুল হকের শ্যালক মৃণাল হকের অনেকগুলো ভাস্কর্য রয়েছে ঢাকা শহরে; সেগুলো নন্দনতাত্ত্বিক দিক নিয়ে শিল্পীদের সমালোচনা যেমন রয়েছে, তেমনি সেগুলো স্থাপনে অস্বচ্ছতার অভিযোগও আছে। খবর বিডিনিউজের। মৃণাল হকের জন্ম রাজশাহীতে। ১৯৭৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটে ভর্তি হন। ১৯৮৪ সালে তিনি মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। তিনি ১৯৯৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান এবং সেখানে ভাস্কর্যের কাজ শুরু করেন। ২০০২ সালে তিনি দেশে ফিরে আসেন এবং স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। দেশে ফিরে নিজ উদ্যোগে নির্মাণ করেন মতিঝিলে বিমান অফিসের সামনে ‘বলাকা’ ভাস্কর্যটি। ২০০৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে নির্মিত গোল্ডেন জুবিলি টাওয়ার তাঁরই শিল্পকর্ম। ঢাকায় তাঁর ভাস্কর্য রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে ‘রত্নদ্বীপ’, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে ‘রাজসিক’, পরীবাগ মোড়ে ‘জননী ও গর্বিত বর্ণমালা’, ইস্কাটনে ‘কোতোয়াল, সাতরাস্তায় ‘বর্ষারাণী’, মতিঝিলের ‘বলাকা’, নৌ সদর দফতরের সামনে ‘অতলান্তিকে বসতি,’ সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড়ের ভাস্কর্য ও বঙ্গবাজারে মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য। বিখ্যাত সব ব্যক্তির ভাস্কর্য বানিয়ে গুলশানে ‘সেলিব্রেটি গ্যালারি’ তৈরি করেছিলেন শিল্পী মৃণাল হক। তবে শাহরুখ খান, লিওনেল মেসিসহ অনেকের চেহারার ‘বিকৃতি’ নিয়ে সমালোচনার মুখে সেগুলো নতুন করে নির্মাণের কাজ শুরু করেছিলেন তিনি। ২০১৬ সালে রোমান যুগের ন্যায়বিচারের প্রতীক ‘লেডি জাস্টিস’ এর আদলে মৃণাল হকের ভাস্কর্যটি সুপ্রিম কোর্টের মূল ভবনের প্রধান ফটকের বাইরে লিলি ফোয়ারার সামনে স্থাপন করা হয়েছিল। এরপর হেফাজতে ইসলামসহ কয়েকটি ইসলামী সংগঠন ভাস্কর্যটির বিরোধিতায় নামে। ২০১৭ সালের ১১ এপ্রিল হেফাজতের আমির শাহ আহমদ শফী নেতৃত্বাধীন একদল ওলামার সঙ্গে গণভবনে এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভাস্কর্যটি সরাতে পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। পরে সুপ্রিম কোর্টের মূল ভবনের সামনে থেকে ভাস্কর্যটি অপসারণ করা হয়। সেটি নিয়ে রাখা হয়েছিল এনেক্স ভবনের পেছনে। ভাস্কর্যটি অপসারণে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে সেটি আবার আগের জায়গায় পুনঃস্থাপনের দাবি জানিয়ে আসছিল বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ছাত্র সংগঠন। দেশের শীর্ষস্থানীয় লেখক, অধ্যাপক, শিল্পী, সাহিত্যিকরাও ভাস্কর্য সরানোয় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। একে ‘মৌলবাদী শক্তির কাছে আত্মসমর্পণ’ আখ্যায়িত করে আগের জায়গায় পুনঃস্থাপনের দাবি জানিয়েছিলে তারা। এর আগে ২০০৮ সালে ইসলামী সংগঠনগুলোর দাবির মুখে বিমানবন্দরের সামনে থাকা মৃণাল হকের লালন ভাস্কর্য সরিয়ে নেয় সরকার। সেই বছরই মতিঝিলের বলাকা ভাস্কর্যে ভাঙচুর করে উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত নামে একটি সংগঠন।.tdi_3_b47.td-a-rec-img{text-align:left}.tdi_3_b47.td-a-rec-img img{margin:0 auto 0 0} (adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});