দাবি মানলো ভারত, বেনাপোল বন্দর দিয়ে রফতানি শুরু
অবশেষে বেনাপোল বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ীদের চাপের মুখে আমদানিতে বাধ্য হয়েছে ভারতীয় পক্ষ। এর ফলে ১ জুলাই বন্ধ হয়ে যাওয়া দুই দেশের বাণিজ্য আবারও শুরু হয়েছে চারদিন পর আজ রবিবার (৫ জুলাই)।দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর বেনাপোল দিয়ে দীর্ঘ সাড়ে তিন মাস পর ভারতে রফতানি বাণিজ্য শুরু হয়েছে ।
এদিন বিকেল সাড়ে পাঁচটার সময় রফতানির জন্য দাঁড়িয়ে থাকা বাংলাদেশি পণ্যবাহী ট্রাকগুলো ভারতের পেট্রাপোল সীমান্তে রফতানির উদ্দেশে প্রবেশ শুরু করে।
বন্দরের একটি সূত্র জানায়, ভারতীয় পক্ষ সুযোগ পেলেই নানা ছুঁতোয় বাংলাদেশি পণ্য গ্রহণের ক্ষেত্রে নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে। এবারে করোনাভাইরাসের কারণে তারা তাদের পণ্য রফতানি করছিল। কিন্তু, সেই ভাইরাসের অজুহাতেই নিরাপত্তা ইস্যু দেখিয়ে বাংলাদেশি পণ্য গ্রহণ করছিল না। ফলে তাদের একচেটিয়া বাণিজ্য চলছিল। আর বাংলাদেশি রফতানিকারকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিলেন। কিন্তু, তাদের পণ্য আমদানি করা গেলে আমাদের পণ্য রফতানি কেন নয়? ফলে বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘ বৈঠক হয়েছে। অবশেষে তারা বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের তোলা দাবিগুলো আলোচনার বৈঠকে মেনে নিয়েছেন।
বেনাপোল বন্দরের একাধিক ব্যবসায়ী জানান, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ বিস্তাররোধে ভারত সরকারের দেওয়া একের পর এক লকডাউনের কারণে গত ২২ মার্চ থেকে দু'দেশের মধ্যে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য বন্ধ ছিল। বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠন ও উভয় দেশের বন্দর কর্তৃপক্ষ দফায় দফায় বৈঠক করে এক পর্যায়ে গত ৭ জুন থেকে আমদানি বাণিজ্য সচল করলেও ভারত বাংলাদেশ থেকে রফতানি পণ্য নিতে রাজি হচ্ছিল না। শুরুর দিকে ভারতের একতরফা বাণিজ্য মেনে নিলেও টানা দেড় সপ্তাহেও ভারতের আমদানি পণ্যের ব্যাপারে আগ্রহ না দেখে বিষয়টা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশি রফতানিকারক ব্যবসায়ীরা। কারণ, টানা তিন মাস ধরে রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে এদেশের রফতানি পণ্যের মান অক্ষত রাখাও কঠিন হচ্ছিল। তাছাড়া প্রতিনিয়ত বাড়ছিল ট্রাকভাড়াসহ নানা ধরনের খরচ। এরপর বেনাপোল বন্দর ব্যবহারকারীদের সঙ্গে রফতানিকারকরা আলোচনা করে সবাই মিলে ঐকমত্যে আসে ভারত বাংলাদেশি রফতানি পণ্য নিতে না চাইলে দেশটির আমদানি পণ্য আর গ্রহণ করা হবে না। বিষয়টি ভারতীয় পক্ষকে জানিয়ে দেওয়া হলে দুদেশের ব্যবসায়ে হঠাৎ করেই স্থবিরতা নেমে আসে। গত বুধবার (০১ জুলাই) সকাল থেকে দু-দেশের মধ্যে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যায়।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আলহাজ মফিজুর রহমান সজন জানান, ভারত আমদানি পণ্য দিলেও তারা বাংলাদেশি রফতানি পণ্য গ্রহণ করছিলেন না। যার জন্য রফতানিকারক ব্যবসায়ীরা ভারত থেকে আসা আমদানি বাণিজ্য গত ১ জুলাই সকাল থেকে বন্ধের ঘোষণা দেয়। আলাপ আলোচনা করে দীর্ঘ সাড়ে তিন মাস পর আজ থেকে ভারত বাংলাদেশি রফতানি পণ্য নিচ্ছে। তিনি জানান, বাংলাদেশি রফতানি পণ্য ভারতে ঢুকতে না পেরে মোটা অংকের ট্রাক ভাড়া গুনতে হচ্ছিল রফতানিকারকদের।