
জুন শেষে দেশে বন্যার আশঙ্কা
মৌসুমী বায়ু দেশের ওপর বিস্তার লাভ করায় দেশে ও ভারতে প্রচুর বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এর কারণে দেশের সবক'টি নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এক-দু’দিনের মধ্যে কোনোটি বিপদসীমার উপরে চলে যাবে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, জুনের শেষে ও জুলাইয়ের প্রথম দিকে দেশে মধ্যমেয়াদি বন্যা হতে পারে।
সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক মো. আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া বাংলানিউজকে জানান, ব্রক্ষ্মপুত্র ও যমুনা লাগোয়া কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, জামালপুর, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, পাবনা জেলার নিম্নাঞ্চলে এ বন্যা দেখা দিতে পারে। পাশাপাশি তিস্তা ও ধরলার অববাহিকাতেও হতে পারে বন্যা। এসময় দেশের অন্যান্য অঞ্চলের নদীর পানি বিপদসীমার উপরে উঠতে পারে।
বন্যা পূর্বাভাস সম্পর্কিত প্রতিবেদনে (১৭ জুন) বলা হয়, দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু দেশের উপর বিস্তার লাভ করেছে। এর প্রভাবে বাংলাদেশ ও ভারতের অববাহিকাগুলোর অনেক স্থানে বৃষ্টিপাতসহ কতিপয় স্থানে ভারী বৃষ্টিপাত পরিলক্ষিত হচ্ছে। ফলে দেশের প্রধান নদীগুলোর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ব্রক্ষ্মপুত্র অববাহিকা: ব্রক্ষ্মপুত্র-যমুনা নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আগামী ২ সপ্তাহ পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। পানি বৃদ্ধির কারণে জুনের শেষ সপ্তাহ অথবা জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে ব্রক্ষ্মপুত্র-যমুনা নদীর পানি বিভিন্ন স্থানে বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। এ সময়ে কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, জামালপুর, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, পাবনা জেলার নিম্নাঞ্চলে স্বল্প থেকে মধ্যমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।
এছাড়া দেশের উত্তরাঞ্চলের তিস্তা এবং ধরলা নদীর পানি আগামী দুই সপ্তাহে সময় বিশেষে দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে এবং বৃষ্টিপাত পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে চলতি সপ্তাহের প্রথমভাগ এবং পরবর্তী সপ্তাহের প্রথমভাগে কিছু স্থানে বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। এরফলে তিস্তা ও ধরলা অববাহিকার নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।
গঙ্গা অববাহিকা: গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আগামী ২ সপ্তাহ পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। আগামী ২ সপ্তাহে গঙ্গা নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করার সম্ভাবনা নেই। পদ্মা নদীর পানি জুনের শেষ বা জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে।
মেঘনা অববাহিকা: মেঘনা অববাহিকার উজানে প্রধান নদী সুরমা ও কুশিয়ারার পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আগামী ১ সপ্তাহ পর্যন্ত অবাহত থাকতে পারে এবং সময় দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে। বৃষ্টিপাত পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে চলতি সপ্তাহের শেষে সুরমা-কুশিয়ারা এবং আপার মেঘনা অববাহিকার নদ-নদীর (সারিগোয়াইন, যদুকাটা, সোমেশ্বরী, ভুগাই-কংস, মনু, খোয়াই) পানি কোথাও কোথাও বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে।
দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় পার্বত্য এলাকা: আগামী ১ সপ্তাহে এসব অঞ্চলের পানি দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে। বৃষ্টিপাত পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে হালদা, সাঙ্গু, মাতামুহুরী নদীর পানি কোথাও কোথাও বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে।