শেষ পর্যন্ত রিকন্ডিশন্ড বা একবার ব্যবহৃত গাড়ি আমদানি নিয়ে বাজেটে নতুন কোনো নির্দেশনা মিলল না। আগের শুল্কহার ও অবচয় সুবিধাই বহাল রাখা হয়েছে নতুন প্রস্তাবিত বাজেটে। এতে চরম হতাশ হয়েছেন এই খাতের গাড়ি ব্যবসায়ীরা। নতুন কোনো সুখবর আনতে ব্যর্থতার জন্য তারা বর্তমান নেতৃত্বকেই দুষছেন।
উল্লেখ্য, গত ১০ জুন কালের কণ্ঠের বাণিজ্য পাতায় ‘বাজেটে রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানি নিয়ে সুখবর নেই’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সেখানে বিদ্যমান শুল্কহার ও অবচয় সুবিধা বহাল রাখার ইঙ্গিত দেয়া হয়। গতকাল বৃহষ্পতিবার বাজেট প্রকাশের পর সেটিই বহাল থাকলো।
জানতে চাইলে বারভিডার সাধারণ সম্পাদক ও এইচ এন এস অটোমোবাইলসের কর্ণধার শহীদুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা ডিউটি স্ট্রাকচারের চেয়েও ভ্যালুয়েশন নিয়ে কাজ করতে চেয়েছিলাম। ৩০ বছরের পুরনো পদ্ধতি বদলে আধুনিক একটি পদ্ধতি প্রবর্তনের চেষ্টা করেছিলাম; কাজও হয়েছিল কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে সরকার আর আগায়নি। এরপরও যে বাজেটে যে শুল্কহার ও অবচয় সুবিধা বহাল রাখা হয়েছে তাতে করোনাপরিস্থিতিতে মোটামুটি সন্তুষ্ট বলবো।’
ব্যবসায়ীরা বলছেন, করোনাভাইরাস মহামারির কারণে গত তিনমাস ধরে গাড়ি বিক্রি বন্ধ রয়েছে; চট্টগ্রাম বন্দর ও মোংলা বন্দর এবং সারাদেশের বিভিন্ন শোরুমে ১২ হাজার গাড়ি অবিক্রিত অবস্থায় পড়ে আছে। বন্দর থেকে গাড়ি ছাড় করতে না পারায় প্রতিদিন মাশুল গুনতে হচ্ছে। আবার নির্দিষ্ট সময়ে গাড়ি ছাড় না নিলে নিলামে তোলার ঝুঁকি আছে। এ ছাড়া গাড়ির শো রুম বন্ধ থাকলেও ব্যাংক ঋণের বোঝা বাড়ছেই। এই অবস্থায় ২৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের এই ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে বন্দর মাশুল ছাড়, সরকারি প্রণোদনা এবং ব্যাংক ঋণের কিস্তি পরিশোধের সীমা বাড়ানোর দাবি জানিয়েছিল গাড়ি ব্যবসায়ীদের সংগঠন বারভিডা। কিন্তু বাজেটে এবং এর আগে কোন দাবিই পুরণ না হওয়ায় হতাশা ব্যবসায়ীরা।
বারভিডার সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ফোর হুইলার্সের কর্ণধার হাবিবুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, আগে থেকেই ব্যবসার খারাপ যাচ্ছিল। কভিড-১৯ এর কারণে ব্যবসায় ধ্বস নেমেছে। ‘এখন বাজেট দেখে মনে হচ্ছে এটা আমাদের জন্য ‘মরার ওপর খড়ার ঘাঁ’। আগামী বছরটা আমাদের জন্য আরও খারাপ যাবে।’
গাড়ি ব্যবসায়ীরা বলছেন, রিকন্ডিশন্ড গাড়ির দাম কম-বেশি নির্ভর করে প্রধানত দুটি কারণে। একটি হচ্ছে গাড়ি আমদানিতে সিসি অনুযায়ী সম্পূরক শুল্কহার কমানো; দ্বিতীয়টি হচ্ছে গাড়ি আমদানিতে অপচয় সুবিধা বাড়ানো। এর কোনোটিই এবার প্রস্তাবিত বাজেটে মিলেনি। বাজেটে আগের শুল্কহারই বহাল রাখা হয়েছে।
বর্তমান বাজেটে, অবচয় বা ডেপ্রিসিয়েশন হার হচ্ছে এক বছরের পুরনো গাড়ির জন্য ০ শুন্য শতাংশ অর্থ্যাৎ কোনো অবচয় সুবিধা নেই। দুই বছরের পুরনো গাড়ির জন্য ১০ শতাংশ, তিন বছরের পুরনো গাড়ির জন্য ২০ শতাংশ, চার বছরের পুরনো গাড়ির জন্য ৩০ শতাংশ এবং পাঁচ বছরের পুরনো গাড়ির জন্য ৩৫ শতাংশ। ৫ বছরের বেশি পুরনো গাড়ি আমদানির সুযোগ নেই। গাড়ির অবচয় সুবিধা যত বেশি থাকবে; গাড়ির দাম ততই কম হবে।
বর্তমানে রিকন্ডিশন্ড গাড়ির শুল্কহার অনুযায়ী, ১৬শ সিসি পর্যন্ত আমদানিকৃত গাড়ির সম্পুরক শুল্ক ৪৫ শতাংশ, ২ হাজার সিসি পর্যন্ত সম্পুরক শুল্কহার ১শ শতাংশ, ৩ হাজার সিসি পর্যন্ত ৩৫০ শতাংশ, ৪ হাজার সিসির উর্ধে ৫শ শতাংশ। আর ১৮শ সিসি পর্যন্ত মাইক্রোবাস আমদানিতে শুল্কহার ৪৫ শতাংশ এবং ২ হাজার সিসি পর্যন্ত মাইক্রোবাসের ক্ষেত্রে সম্পুরক শুল্কহার ৬০ শতাংশ। এই শুল্কহার এবারও বহাল থাকছে।
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
We use cookies to ensure you get the best experience on our website.