সারাদেশে বিচারাধীন পৌনে দুই লাখ মানবপাচার মামলা

বাংলা ট্রিবিউন প্রকাশিত: ১০ জুন ২০২০, ১০:০০

দেশে মানবপাচারের অভিযোগ নতুন কোনও ঘটনা না হলেও সম্প্রতি লিবিয়ায় ২৬ বাংলাদেশিকে হত্যার পর পুনরায় তা আলোচনায় উঠে এসেছে। দেখা গেছে, মানবপাচারের অনেক অভিযোগই মামলা পর্যন্ত গড়ায় না, আড়ালে থেকে যায়। আবার মামলা হলেও তার বিচার শেষ হতে লেগে যায় দীর্ঘ সময়। সুপ্রিম কোর্ট থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশের ৬৪ জেলায় মানবপাচারের অভিযোগে দায়ের হওয়া এক লাখ ৭৫ হাজার ৬৭৫টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এর মধ্যে পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে বিচারাধীন রয়েছে ৩০ হাজার ৭১১টি মামলা।

মামলা ঝুলে থাকার বিষয়ে মোটা দাগে চারটি কারণকে চিহ্নিত করেছেন বিভিন্ন জেলার পাবলিক প্রসিকিউটর ও বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, অভিযোগকারীর চেয়ে আসামিপক্ষ অর্থ-বিত্তে ক্ষমতাশালী হওয়া ও আসামিপক্ষ বেশি তৎপর থাকায় মামলার ওপর প্রভাব ফেলে। বাদীপক্ষ আদালতের বাইরে মীমাংসা করতে বাধ্য হয় এবং সেটি সম্ভব হয় অপরাধটির ভয়বহতা নিয়ে প্রচার-প্রচারণা বেশি না থাকার কারণে। তারা এও বলছেন, কোনও অপরাধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির নজির না থাকলে, সেটি খুব বেশি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনায় নেয় না কোনও পক্ষই। তারা আরও বলছেন, মানবপাচারের মামলাগুলো বিচারের জন্য আলাদা ট্রাইব্যুনাল গঠন এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর সমন্বয় খুব জরুরি।

সম্প্রতি লিবিয়ায় মানবপাচারকারীদের গুলিতে নিহত ২৬ জন বাংলাদেশি মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ ও যশোরের অধিবাসী ছিলেন। এসব জেলার মানবপাচার বিষয়ক আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটরদের সঙ্গে কথা বলেও মানবপাচারের চলমান মামলার দীর্ঘসূত্রতাসহ এই চার কারণ জানা যায়।

মাদারীপুরের পাবলিক প্রসিকিউটর সিদ্দিকুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মানবপাচারের অভিযোগে খুব বেশি যে মামলা হয়, এমন না। এখন আদালত বন্ধ। কয়েকটি মামলা আছে এখনও তদন্তনাধীন। জরুরি কিছু ছাড়া এসব মামলা আবার কবে বিচারের মুখোমুখি হবে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না।’

যশোর জেলা আদালতের ট্রাইব্যুনাল-২ এর পাবলিক প্রসিকিউটর রহমান মুকুল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আসামিপক্ষের তৎপরতায় মামলাকে ভিন্ন রূপ দেওয়া হয়।’ তিনি মার্চে এই দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই আদালত লকডাউনে চলে যাওয়ায় কত মামলা চলমান, সেসব তথ্য দিতে পারছেন না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এ ধরনের মামলা আদালতের বাইরে মীমাংসা হয়। টাকা-পয়সা লেনদেন করে পরস্পর মামলা তুলে নেওয়া, সাক্ষী হাজির না করা, সাক্ষী না পাওয়ার মতো বিষয়গুলো ঘটায় এবং মাঝখান থেকে প্রক্রিয়াটা প্রশ্নবিদ্ধ হয়।’

মানবপাচারের ঘটনাবহুল জেলা সুনামগঞ্জের পাবলিক প্রসিকিউটর শাহানা রাব্বানী উল্লিখিত কারণগুলো উল্লেখ করে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘অনেক মামলা আটকে আছে তা নয়। তবে ক্ষমতার প্রভাবের কারণে শেষ পর্যন্ত মামলা চালানোর আগ্রহ বা সামর্থ্য বাদীপক্ষের থাকে না।’ অপরাধটি যে জঘন্য তেমন কোনও প্রচার- প্রচারণা না থাকাও সচেতনতার অন্তরায় বলে উল্লেখ করেন তিনি।

রংপুরের আইনজীবী আব্রাহাম লিংকন, যিনি বহুল আলোচিত ফেলানি হত্যা মামলায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি মনে করেন, মানবপাচারের মামলাগুলো সাধারণত দীর্ঘদিন ঝুলে থাকতে দেখা যায়, কিংবা দৃষ্টান্তমূলক বিচার দেখি না। এর বড় কারণ সাক্ষী আদালতে এসে মামলার পক্ষে বলে না।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও