করোনায় আক্রান্ত যেসব রাজনৈতিক নেতা
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কয়েকজন নেতা। তাদের কেউ লাশ দাফন করতে গিয়ে, কেউবা ত্রাণ বিতরণ করতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্ত নেতাদের বেশিরভাগই বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। দু-একজন চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি আছেন। আবার ইতোমধ্যে কেউবা সুস্থও হয়েছেন।
দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হলে সরকার গত ২৬ মার্চ সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। পরবর্তীতে ছয় দফায় বাড়ানো এই ছুটি শেষ হয় ৩০ মে। ৬৭ দিনের এই সাধারণ ছুটিতে নিম্ন আয়ের বেশিরভাগ মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়ে। রাজনৈতিক নেতারা বলছেন, দুর্যোগের এই সময়ে রাজনৈতিক নেতা এবং জনপ্রতিনিধিরা ঘরে বন্দি হয়ে থাকতে পারেননি। কর্মহীন, অসহায় ও দরিদ্র মানুষের কাছে ত্রাণ ও ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী নিয়ে তাদের ছুটে যেতে হয়েছে। অনেককে করোনায় মৃত ব্যক্তিদের দাফনের কাজে এগিয়ে যেতে হয়েছে। আর এসব করতে গিয়ে অনেক রাজনৈতিক নেতা এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের নেতাদের মধ্যে দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এবং সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম নাদেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। মোহাম্মদ নাসিম হাসপাতালে ভর্তি হলেও নাদেল বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
গত ২১ মে করোনাভাইসে আক্রান্ত হন শফিউল আলম নাদেল। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, তিনি এখন মোটামুটি সুস্থ। তেমন কোনও সমস্যা নেই। বাসায় আছেন। বুধবার (৩ জুন) তার দ্বিতীয় করোনা টেস্টের রেজাল্ট ‘নেগেটিভ’ এসেছে।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমান সংসদ সদস্যদের মধ্যে পাঁচ জনের নমুনা টেস্টে করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। এরা হলেন—শহীদুজ্জামান সরকার (নওগাঁ-২), এবাদুল করিম (ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫), মোহাম্মদ নাসিম (সিরাজগঞ্জ -১), এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী (চট্টগ্রাম -৬) , ফরিদুল হক খান দুলাল (জামালপুর-২)। শহীদুজ্জামান সরকার ও ফজলে করিম চৌধুরী এরইমধ্যে সুস্থ হয়েছেন।
এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমি ভালো আছি। আল্লাহ ভালো রাখছেন। আমার জন্য দোয়া করবেন। আমার ভাই মারা গেছে। সে জন্য আমি এখন চট্টগ্রাম এসেছি।’
সংসদ সদস্য ফরিদুল হক খান বলেন, ‘ইসলামপুরবাসীকে করোনার সংক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য যে নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে মাঠে কাজ করেছি, দুঃখের সঙ্গ বলতে হচ্ছে—আমিসহ আমার প্রায় সব মূল নেতার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। আমার সব নেতাকর্মীই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ইসলামপুরের নিরীহ সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে অবিরাম কাজ করেছেন। আজ তারা সবাই রিপোর্ট পেয়ে ঘরবন্দি।’ তিনি বলেন, ‘ঘরে বসেই সবাইকে সচেতন হওয়ার জন্য এবং করোনা সংক্রমণের সংবাদে ভেঙে না পড়ার জন্য অনুরোধ করছি। আল্লাহ্র রহমতে এবং ইসলামপুরবাসীর দোয়ায় আমি এখন পর্যন্ত বেশ ভালো আছি। রিপোর্টে পজিটিভ আসা নেতাকর্মীদের ফোনে খোঁজ নিয়েছি। তারাও মানসিকভাবে ভীষণ শক্ত আছেন। তাদের জন্য সবার কাছে দোয়া চাই।’
বিএনপির সূত্রে জানা গেছে, দলের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আবদুর রেজ্জাক খান ও তার স্ত্রী, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির নেতা ও নারায়ণগঞ্জের সিটি কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ ও তার স্ত্রী আফরোজা খন্দকার, সিলেটের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর স্ত্রী শ্যামা হক চৌধুরী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত।