গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মানা সম্ভব হচ্ছে কি?
পহেলা জুন থেকে বাংলাদেশে চালু হয়েছে সব ধরণের বাস ও বিমান চলাচল। এর আগে গতকাল ট্রেন ও লঞ্চ চলাচল শুরু হয়। সরকারি শর্ত মতে বলা হয়েছিল যে, স্বাস্থ্য বিধি মেনে সব ধরণের গণপরিবহন চলাচল করবে।
কিন্তু যারা আজ বাসে উঠেছেন তাদের অনেকেই বলছেন যে, বাসে চলাচলের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলা কোনভাবেই সম্ভব হচ্ছে না। এমনি একজন অঙ্কন আরা। তিনি সাভারের ইপিজেড এলাকায় একটি কারখানায় ব্যবস্থাপনা বিভাগে কাজ করেন।
সাভারের জিরানী এলাকা থেকে বাসে করে কর্মস্থলে যান তিনি। অঙ্কন আরা বলেন, বাসে উঠার পর সামাজিক দূরত্ব মানাটা বেশ কষ্টকর। বেশিরভাগ সময়েই তা সম্ভব নয়। এছাড়া যাত্রীদের মধ্যেও অসচেতনতা আছে বলে জানান অঙ্কন আরা।
"আমি বাসে উঠার পর এক লোক বললো যে, আপনি চাপেন। আমি বললাম যে, এখন তো এক সিটে একজনকেই বসতে হবে। আপনি পেছনের সিটে গিয়ে বসুন। উনি আমার সাথে তর্ক জুড়ে দিলেন। পরে অবশ্য গিয়ে পেছনে বসলেন।"
"যাত্রীরাই এমন করলে তো বাসের কর্মীরাও এর সুযোগ নেবে, এক সিটে দুজনকে বসাবে," তিনি বলেন।
একই ধরণের অবস্থা ছিল রাজধানী ঢাকাতেও। মহাখালী বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, ঢাকা থেকে অন্য জেলাগুলোর উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া বাসগুলোতে স্বাস্থ্য বিধি মানার তেমন কোন তোড়জোড় নেই। যাত্রীদের তোলার সময় কোনধরনের হ্যান্ড স্যানিটাইজার দেয়া হচ্ছে না। মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্বও।
তবে মহাখালী বাস টার্মিনালে একটি ডিসইনফেকট্যান্ট টানেল চোখে পড়ল। যদিও সেটিও ব্যবহার করতে দেখা যায়নি যাত্রীদের। বেশ কিছুক্ষণের মধ্যে মাত্র একজন যাত্রীকে সেটি ব্যবহার করতে দেখা গেছে।
ঢাকার ভেতরে চলাচলকারী যেসব লোকাল বাস রয়েছে, সেগুলোতে যারা উঠছেন তাদের অনেককেই টেনে তুলছেন গাড়ির হেল্পাররা। সবচেয়ে চোখে পড়ার মতো বিষয়টি হচ্ছে, যাত্রীরা বাসে ওঠা এবং নামার সময় গেটের সামনেই এসে জড়ো হচ্ছেন। আর একই হাতল সবাই স্পর্শ করছেন কিন্তু তেমন কারো হাতে কোন গ্লাভস নেই।
বাসগুলো ছোট হওয়ায় একটি করে আসন ফাঁকা রাখলেও দুই মিটার দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব হচ্ছে না। তবে প্রথম দিন হিসেবে বাসযাত্রী অনেক কম চোখে পড়েছে।
আজ থেকে চালু হয়েছে অভ্যন্তরীণ রুটে বিমান চলাচল। বেসরকারি বিমান কোম্পানি নভোএয়ার জানিয়েছে, বিমানবন্দরে প্রবেশ থেকে শুরু করে বিমানে তোলা সর্বত্রই স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে চলছেন তারা।