জ্যোতিষ শাস্ত্রের ভাগ্যে কী লিখেছে করোনাভাইরাস?
সেই সন্ধ্যায় সিবিএস নিউ ইয়র্কে হাজির হলেন বিখ্যাত মার্কিন জ্যোতিষ সুসান মিলার। বললেন, “২০২০ সাল হবে দারুণ এক বছর, বয়ে আনবে অতুল সমৃদ্ধি।” সবাই খুব মন দিয়েই শুনছিলেন। সুসান মিলার ভবিষ্যদ্বাণী করছিলেন, বছর জুড়ে বৃহস্পতি তুঙ্গে থাকবে মকরের। কর্কটের জন্য গাঁটছড়া বাঁধার শুভলগ্ন উঁকি দিচ্ছে। তুলা রাশির জাতক-জাতিকারা আবাসন ব্যবসায় তরতর করে সাফল্য পেতে যাচ্ছেন। আর বৃষের জন্য বছরজুড়ে থাকছে নানা দেশে ভ্রমণ।কিন্তু কদিন বাদেই মানুষের ভ্রু কুঁচকে উঠল, কারণ চোখে না দেখা এক ভাইরাস এসে এলোমেলো করে দিল নক্ষত্রের এই ভাগ্যলিপি।
সুসান মিলারের ফ্রি অ্যাপের একজন সাবস্ক্রাইবার দিব্যা বাব্বার বৃশ্চিক রাশির জাতিকা। ভবিষ্যতবাণী অনুযায়ী এ বছর ব্যবসায় লাভের কড়ি গোনার কথা তার। সে সবকিছু ওলট-পালট হয়ে যাওয়ার পর দিব্যা বললেন, “গত মাসেও আমি ভাবছিলাম, সবাই কি এরইমধ্যে তাদের জ্যোতিষীকে বাদ দিয়েছেন?”দিব্যার মত আরো অনেকেই অভিযোগ বর্ষণ করে চলেছেন সুসান মিলারের ইউটিউব আর ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে।একজন তো বেশ কড়া ভাষাতেই লিখেছেন, “সুসান, আপনি একজন ভালো লেখক, সন্দেহ নেই। কিন্তু আপনি কোভিড-১৯ আর এর প্রভাবে মানুষের চাকরি হারানোর কথা লিখতে ভুলে গেছেন।”আরেকজন লিখেছেন, “আপনার ভবিষ্যদ্বাণীতে এটা কেন এল না সুসান? কোভিড-১৯ এতটাই বড় ঘটনা, যেটা গণনায় না আসার কথা নয়।”
জ্যোতিষ শাস্ত্রের অনুসারীরা বিশ্বাস করেন, গ্রহ-নক্ষত্রের অবস্থান আর চলাচল মানুষের প্রতিদিনের জীবনের নানা ঘটনায় সরাসরি প্রভাব ফেলে।তবে বিজ্ঞান সব সময়ই এ বিশ্বাসকে খারিজ করে এসেছে। অধিকাংশ মনস্তত্ববিদ এ বিষয়ে একমত যে, জ্যোতিষ শাস্ত্রের এই আবেদনের মূলে রয়েছে নিজের জন্য সুবিধাজনক তথ্য খোঁজার প্রবণতা, যাকে বলে ‘কনফরমেশন বায়াস’। নিজের বিশ্বাস আর আদর্শের সঙ্গে মেলে, সেরকম তথ্য খোঁজা, যে কোনো ঘটনাকে সেভাবে ব্যাখা করা কিংবা সমর্থন দেওয়া মানুষের সহজাত প্রবণতা।