বুলবুলের চেয়ে আম্পানের আঘাতে সুন্দরবনে ৩ গুণ বেশি ক্ষতি
ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের চেয়ে আম্পানের আঘাতে বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের ৩ গুণ বেশি ক্ষতি হয়েছে। আম্পানে এ বনের ১২ হাজার ৩৫৮টি গাছ ভেঙেছে। আর বন বিভাগের অবকাঠামোর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ২ কোটি ১৫ লাখ টাকা। ২০১৯ সালের ১০ নভেম্বর ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে সুন্দরবনের ৪ হাজার ৫৮৯টি গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। আর বন বিভাগের অবকাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ছিল ৬২ লাখ ৮৫ হাজার টাকা।
ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাতের পর সুন্দরবনের ক্ষয়ক্ষতি নিরুপনে বন বিভাগের গঠিত ৪টি কমিটির রিপোর্ট থেকে এ তথ্য জানা গেছে। বনবিভাগের ৪ কমিটি রবিবার (২৪ মে) বিকালে খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষকের কাছে প্রতিবেদনটি দাখিল করে।
প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, আম্পানের আঘাতে পশ্চিম সুন্দরবনের ২টি রেঞ্জ এলাকায় ১২ হাজার ৩৩২টি গাছ ভেঙে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত এ সব গাছের মধ্যে গরান গাছের সংখ্যা বেশি। যার মূল্য ১০ লাখ ১০ হাজার ৫৬০ টাকা। এ ছাড়া স্থাপনা, জেটি, উডেন ট্রেইল, ওয়াচ টাওয়ার ও অবকাঠামোর ৪৭ লাখ ৫০ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে বাঘ, হরিণসহ অন্য কোনও বন্যপ্রাণীর ক্ষতি হয়নি। এসব প্রাণী প্রকৃতি দত্ত ক্ষমতায় ঝড়ের বিষয়টি বুঝতে পেরে নিজেদের মতো আত্মরক্ষা করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আর পূর্ব সুন্দরবনের ২টি রেঞ্জ এলাকায় ২৬টি গাছ ভেঙেছে। এ বিভাগের আওতায় জব্দ থাকা বেশ কিছু কাঠ জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে। এতে আর্থিক ক্ষতি ৭ লাখ ৬ হাজার ৮৩০ টাকা। পাশাপাশি পূর্ব বনবিভাগে ১ কোটি ৬০ লাখ টাকার অবকাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে।
সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. বশিরুল আল মামুন জানান, সুন্দরবনে সব ধরনের গাছ কাটা নিষিদ্ধ রয়েছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও গাছগুলো ওইভাবেই থাকবে। কোনও গাছ কাটা হবে না।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. বেলায়েত হোসেন জানান, সুন্দরবন নিজ থেকেই বুলবুলের ক্ষতি কাটিয়ে উঠেছে। আম্পানের ক্ষয়ক্ষতিও সুন্দরবন নিজেই কাটিয়ে উঠবে। আমাদের কেবল বন বিভাগের প্রয়োজনে ক্ষতিগ্রস্ত অবকাঠামোগুলো মেরামত করতে হবে।
বনবিভাগের খুলনা অঞ্চলেরর বন সংরক্ষক (সিএফ) মো. মঈনুদ্দিন খাঁন বলেন, সুন্দরবনকে সময় দিলে সিডর, আইলা ও বুলবুলের আঘাতের ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার মতো করেই আম্পানের ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠবে।