বঙ্গবন্ধু সরকারের ওয়াদা পূরণ, গঠিত হলো শিক্ষা কমিশন
বাংলাদেশে গণমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা প্রবর্তনের জন্য প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৃঢ়-সংকল্প ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৭২ সালের ১৮ মে মন্ত্রিপরিষদ ড. কুদরত-ই-খুদার নেতৃত্বে একশ’ সদস্যের একটি শিক্ষা কমিশন গঠন করা হয়। এই শিক্ষা কমিশন দেশের ভবিষ্যৎ শিক্ষানীতি সম্পর্কে সরকারের কাছে সুপারিশ পেশ করবে বলে পরের দিনের পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হয়।
বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ড. সুব্রত আলী ও কবীর চৌধুরী এই নয়া শিক্ষা কমিশনের যথাক্রমে সহ-সভাপতি ও সম্পাদক নিযুক্ত হন। পরিকল্পনা অনুযায়ী নয়া শিক্ষা কমিশন দেশের ভবিষ্যৎ শিক্ষানীতি সম্পর্কে সব শ্রেণির মানুষের মতামত গ্রহণ করবে এবং তারই ভিত্তিতে সরকারের কাছে কমিশন সুপারিশ পেশ করবে। এখানে উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর আগেই বারবার ঘোষণা করেন যে, বাংলাদেশে একটি গণমুখী শিক্ষানীতি চালু করা হবে। সেইসঙ্গে অবসান ঘটানো হবে এতদিনের গণবিরোধী শিক্ষাব্যবস্থা। সংশ্লিষ্ট সব শ্রেণির মানুষের মতামত গ্রহণের উদ্দেশ্যে নবগঠিত শিক্ষা কমিশন সারাদেশ সফর করবে।
কৃত্রিম সংকটে উদ্বিগ্ন সরকারমন্ত্রিসভার পর্যায়ক্রমিক দ্বিতীয় দিনের বৈঠকে ১৮ মে বৃহস্পতিবার নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর ঠিক আগেই ন্যায্যমূল্যের দোকানের মাধ্যমে পণ্য বিক্রির ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। সংবাদ সংস্থা বাসসের খবরে প্রকাশ, বৈঠকের পরপরই তথ্য ও বেতারমন্ত্রী মিজানুর রহমান চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধি রোধে অবিলম্বে কতিপয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এসব ব্যবস্থার মধ্যে চিনির মতো বিভিন্ন পণ্যের সরবরাহ বৃদ্ধি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি না করার জন্য ব্যবসায়ীদের প্রতি বারবার আহ্বান জানানো সত্ত্বেও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির মূল্যবৃদ্ধির সাম্প্রতিক প্রবণতায় সরকার গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সরকার মনে করেন যে, বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে।’
মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই অশুভ প্রবণতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয় বলেও পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।ধরিয়ে দিলে পুরস্কারবাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্র দফতর একটা তথ্য সেল স্থাপন করেছে। এই তথ্য সেলে জনসাধারণের পক্ষ থেকে নিম্নোক্ত ধরনের খবরাখবর নেওয়া হবে। অবৈধ অস্ত্র লুকিয়ে রাখা হয়েছে এমন স্থান, যানবাহন ভাঙচুর করেছে এমন সব লোক বা এমনকিছু, বা চুরি করে নিজেদের দখলে রেখেছে। তেমনই কালোবাজারি মজুতদার সমাজবিরোধীদের কার্যকলাপ ও গতিবিধি, এখনও আত্মগোপন করে আছে বা অবাধে ঘুরেফিরে বেড়াচ্ছে— এমন আলবদর, রাজাকার কিংবা জোর করে টাকা-পয়সা আদায় বা ডাকাতি করছে, এমন সব ভুয়া মুক্তিবাহিনীর লোকদের কার্যকলাপ।পুলিশ বাহিনী আমূল পুনর্গঠনের উদ্যোগবাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর আমূল পুনর্গঠন ও উন্নয়নের জন্য একটি পরিকল্পনা তৈরি করা হয়। সংশ্লিষ্ট বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা এটি তৈরি করেছেন। স্বাধীনতার পরিপ্রেক্ষিতে একটি গণমুখী সংস্থা হিসেবে গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা এবং ভবিষ্যৎ প্রয়োজনগুলো সামনে রেখেই এ পরিকল্পনা তৈরি করা হয়।
বাসসের খবরে প্রকাশ, ১৮ মে উচ্চপদস্থ একটি সরকারি সূত্র থেকে বলা হয়, পুলিশ বাহিনীর পুনর্গঠনের কর্মসূচি কয়েকটি পর্যায়ে কাজ করা হবে এবং এর বাস্তবায়ন কয়েক বছর ধরে হবে। এই সূত্রের বরাত দিয়েই প্রতিবেদনে বলা হয়— পাকিস্তান থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত পুলিশ বাহিনী সম্পর্কে ধারণা পরিবর্তন সাধনের ব্যাপারে এই কর্মসূচি তৎপর থাকবে।