এপ্রিল-মে দেশের কৃষির জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুই মাস। বোরোর পাকা ধান এখন মাঠে। হাওরের ধান পেকে মাটিতে পড়ে যাচ্ছে। কারণ কাটার জন্য দক্ষিণাঞ্চলের কৃষিশ্রমিকেরা সেখানে যেতে পারছেন না। বোরো কাটা হলে বোনা হবে আউশ, আমন ও পাট। সেগুলোর বীজ বুনবেই বা কে, সেচই বা কোথা থেকে দেবেন কৃষক। করোনা সংক্রমের এই সংকটে নগদ টাকা, কাঁচামাল ও শ্রমিক—সবই তো ঘরবন্দী। অন্যদিকে পরিমাণের দিক থেকে দেশের সবচেয়ে বেশি ফল পাকে এই মাসে। তরমুজ ও বাঙ্গি পেকে গড়াগড়ি খাচ্ছে। এপ্রিলের শেষ থেকে পাকা আম বাজারে আসবে। কিন্তু তত দিনে করোনাভাইরাসের বিপদ কাটবে তো? সেই দুশ্চিন্তা দানা বাঁধছে ঘরে ঘরে। চিচিঙ্গা, ঝিঙে, পটোল, টমেটোসহ গ্রীষ্মকালীন সবজি মাঠ থেকে তোলা আর বাজারে পৌঁছানোর মতো শ্রমিক ও ব্যবসায়ী পাওয়া যাচ্ছে না। অন্যদিকে এই এপ্রিলে অন্য বছরের তুলনায় গরম বেশি। ফলে ফসলের মাঠ আর্দ্র রাখতে সেচও বেশি দিতে হচ্ছে। এতে করোনা সংক্রমণের সঙ্গে সঙ্গে ফসলের দাম না পাওয়া কৃষকের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ আরও বেড়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, দেশের পাটবীজের প্রায় পুরোটা, চার হাজার টন আসে ভারত থেকে। এর মধ্যে দুই হাজার টন আমদানি করা হয়েছে। বাকি বীজ আসেনি। সেগুলো না এলে এবার অর্ধেক পাটের জমি খালি পড়ে থাকবে। একই সমস্যা সবজির বীজ নিয়েও। চীন, দক্ষিণ কোরিয়া ও থাইল্যান্ড থেকে দেশের সবজি বীজের অর্ধেক আমদানি হয়। এই দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য এখন বন্ধ। ফলে গত দুই যুগে পাঁচ গুণ উৎপাদন বেড়ে যাওয়া সবজি এবার আদৌ দেশের ন্যূনতম চাহিদা মেটাতে পারবে কি না, তা নিয়ে দুশ্চিন্তা আছে। এ ব্যাপারে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক প্রথম আলোকে বলেন, কৃষির এই সংকট নিয়ে তিনি নিজেও উদ্বিগ্ন। বললেন, ‘মাঠে তরমুজ, বাঙ্গি নষ্ট হচ্ছে। এ ব্যাপারে আপাতত কিছু করার নেই। তবে হাওরে যাতে দ্রুত ফসল কাটা যায়, সে জন্য সেখানে প্রয়োজনীয় কৃষিযন্ত্র পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আর দেশের দক্ষিণাঞ্চলে থেকে যাতে কৃষিশ্রমিকেরা হাওরে যেতে পারেন, সে ব্যাপারে স্থানীয় জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে কথা হয়েছে। আশা করি, হাওরের ধান যথাসময়ে কাটা সম্ভব হবে।’ তবে বর্তমান পরিস্থিতির কারণে যেসব কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তাঁদের সহায়তার ব্যাপারে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলাপ চলছে বলে তিনি জানান। সংকট বাড়ছে, স্পষ্ট হবে জুনে দেশের গ্রামীণ অর্থনীতি ও কৃষি উদ্যোগে সবচেয়ে বড় অর্থায়ন করে থাকে বাংলাদেশ পল্লী কর্ম–সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)। সংস্থাটির পক্ষ থেকে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে দেশে খাতে করোনা পরিস্থিতির সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে একটি প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। সেখানে করোনা সংক্রমণের ফলে মার্চ-এপ্রিল মাসের কৃষি খাতের সংকটের চিত্র তুলে ধরে বলা হয়েছে, আগামী জুন থেকে আগস্ট—এই সময়ে কৃষির বিপদের প্রভাব আরও স্পষ্ট হবে। দেশের সামগ্রিক খাদ্য সরবরাহব্যবস্থার ওপরে এর প্রভাব পড়তে শুরু করবে। ফলে সম্ভাব্য ওই প্রভাব মোকাবিলায় করণীয় এখনই ঠিক করতে হবে।
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
We use cookies to ensure you get the best experience on our website.