শেকলে বাঁধা শিশুটি উদ্ধার
কখনও প্রখর রোদ, কখনও বৃষ্টি আবার কখনও ঠান্ডা। শেকলে বাঁধা তার ছোট্ট জীবন। ক্ষুধায় কাতর হলেও কিছুক্ষণ কান্নার পর থেমে যায় কিংবা কান্না করতে করতে ঘুমিয়ে পড়ে। ভাগ্যের নির্মমতার সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিয়েছিলো শিশুটি। সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় নদী বন্দর এলাকায় শেকল দিয়ে বাঁধা শিশুটির ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ফেসবুকে ছবিটি দেখে নারায়ণগঞ্জ লঞ্চ টার্মিনালে শেকলে বেঁধে রাখা দেড় বছরের শিশু ও তার মাকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল দুপুরে লঞ্চ টার্মিনাল ঘাট থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। পরে আদালতে পাঠানো হলে বিচারক তাদের গাজীপুরের ভোগড়ায় নারী ও শিশু হেফাজত কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।শিশুটির মা দাবি করেছেন, তার নাম শ্রীদেবী ও তার মেয়ে শিশুটির নাম আলিফ। কাজে যাওয়ার সময় বা রাতে ঘুমানোর সময় শিশুটি যাতে হারিয়ে না যায় এজন্য লঞ্চের পন্টুনের পাশে শেকল দিয়ে তাকে বেঁধে রাখতেন।বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. হারুন-অর-রশিদ। তিনি জানান, স্থানীয় গণমাধ্যমে লঞ্চ টার্মিনালে এক শিশুকে শেকলে বেঁধে রেখে কাজে যান মা- এমন একটি সংবাদ প্রকাশের পর সদর থানা পুলিশকে নির্দেশ দেয়া হয় শিশুটিকে উদ্ধার করার। এরপর বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে লঞ্চ ঘাট থেকে শেকলে বাঁধা শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। পরে তার মাকেও খুজে বের করা হয়।তিনি আরও জানান, ওই নারী দাবি করেছে শিশুটির বাবার নাম আয়াত আলী। কিন্তু বাবা কোথায় জিজ্ঞেস করলেই শিশুটির মা জানায়, সে বিদেশে আছে। তার কথাবার্তা অসংলগ্ন। প্রশ্ন করলে সে তার নিজের বয়স বলছে ৭০ বছর, আর দেড় বছরের শিশুকে বলছে পাঁচ বছর। আমাদের ধারণা শিশুটির মা কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন যে কারণে জিজ্ঞাসাবাদে সে একেক সময় একেক কথা বলছে।এসপি জানান, শিশুটিকে উদ্ধার করার পর প্রাথমিক চিকিৎসা ও কিছু জামাকাপড় কিনে দেয়া হয়। দুপুরে তাদের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। পরে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মিল্টন হোসেনের আদালতে পাঠানো হয় তাদের। বিচারক তাদের গাজীপুরের ভোগড়া নারী ও শিশু-কিশোর হেফাজত কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।