কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

ছবি সংগৃহীত

পুরস্কার-টুরস্কার নিয়ে আমি তেমন মাথা ঘামাই না: তানভীর মোকাম্মেল

মিঠু হালদার
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১৩:৪৫
আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১৩:৪৫

তানভীর মোকাম্মেল/ ছবি: প্রিয়.কম। 

(প্রিয়.কম) চলচ্চিত্রকার তানভীর মোকাম্মেল। ২০১৭ সালে ঘোষিত একুশে পদকের তালিকায় চলচ্চিত্রকার হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছেন তিনি। রাষ্ট্রীয় এতো বড় সম্মান, দায়িত্ব, বর্তমান ব্যস্ততা, চলচ্চিত্রের জীবনসহ বিভিন্ন বিষয়ে সম্প্রতি প্রিয়.কমের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। যা প্রিয়.কমের পাঠকদের জন্যে তুলে ধরা হলো-

প্রিয়. কম:  কেমন আছেন ?

তানভীর মোকাম্মেল: ভাল আছি।

প্রিয়. কম: প্রথমেই প্রিয়.কমের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানাই আপনাকে।

তানভীর মোকাম্মেল: ধন্যবাদ।

প্রিয়. কম: নিশ্চয়ই অনেকের কাছ থেকে শুভেচ্ছাবার্তা পেয়েছেন ?

তানভীর মোকাম্মেল: হ্যাঁ পেয়েছি। এবং এখনও পাচ্ছি। তার মধ্যে অচেনাও অনেকে আছেন। এত মানুষ আমাকে ভালবাসে বা শ্রদ্ধা করে এটা নিঃসন্দেহে আমার জন্যে এক আনন্দময় অভিজ্ঞতা।

প্রিয়. কম: পদক প্রাপ্তির খবর পাওয়ার পর প্রথমে কার কথা মনে পড়েছে আপনার ?

তানভীর মোকাম্মেল: আমি যখন প্রথম খবরটা শুনি তখন আমি দার্জিলিং শহরের একটা রেস্তোঁরায় চা খাচ্ছিলাম। খবরটা শুনে প্রথমে আমার মায়ের কথা মনে পড়েছিল। মা বেঁচে থাকলে এ খবরটা শুনে খুব খুশি হতেন। আর মনে পড়ছিল আমার স্কুলের দু’একজন শিক্ষকের কথা যাদের কাছ থেকে আমি শুদ্ধভাবে বাংলা ও ইংরেজি লিখতে শিখেছি।

প্রিয়. কম: পদক তো দায়িত্বও বাড়িয়ে দেয়...

তানভীর মোকাম্মেল: হ্যাঁ, তা দেয়। আসলে আমি তো সব সময় কাজের মধ্যে থাকি। কাজই আমার ধ্যান-জ্ঞান বলতে পারেন। পুরস্কার-টুরস্কার নিয়ে আমি তেমন মাথা ঘামাই না। এ ব্যাপারে আমি গীতার ওই উপদেশটায় বিশ্বাস করি-কর্মেই তোমার অধিকার, ফলে নয়। তারপরও পুরস্কার বা কাজের স্বীকৃতি এক রকম আনন্দ তো দেয়ই। সঙ্গে সঙ্গে দায়িত্ব সম্পর্কেও আরো সচেতন করে। দায়িত্ববোধ বাড়ায়।

প্রিয়. কম: আপনার বর্তমান ব্যস্ততা...

তানভীর মোকাম্মেল: এই মূহুর্তে আমি ১৯৪৭ সালের দেশভাগের উপর ‘সীমান্তরেখা’ নামে একটা বড় প্রামাণ্যচিত্র তৈরি করছি। ২০১৭ সাল, মানে এ বছরটি হচ্ছে, দেশভাগের ৭০তম বার্ষিকী। আমি তাই এ বছরেই দেশভাগের উপর এই মেগা প্রামাণ্যচিত্রটা তৈরি করতে চেয়েছিলাম। ছবিটার আশি ভাগ সমাপ্ত হয়েছে। আগামী দু’তিন মাসের মধ্যে ছবিটার পুরো কাজ শেষ হবে।

প্রিয়.কম: আপনি তো দীর্ঘদিন ধরেই বিকল্প সিনেমা নিয়ে কাজ করছেন। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বর্তমানে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিটা আসলে কেমন ?

তানভীর মোকাম্মেল: খুব গর্ব করে বলার মতো কিছু নয়। তবে বাংলাদেশেও যে মাঝে মাঝে দু’একটি ভালো ছবি তৈরি হয় এটা সংশ্লিষ্ট বিদেশিরা জানেন।

প্রিয়.কম: জীবনের অনেকটা সময় পার করে ফেললেন, যদি একটু পিছন দিকে তাকান, আপনার কী সেই সময়গুলো মনে পড়ে যখন আপনি একজন তানভীর মোকাম্মেল হতে চাইতেন ?

তানভীর মোকাম্মেল: আসলে ওভাবে ঠিক পরিকল্পনা করে তো কিছু ভাবিনি। আমি আমার মতো কাজ করে গেছি। তারপর এক সময় লক্ষ্য করেছি যে কিছু মানুষের আমার সেসব কাজ ভাল লাগছে। পুরস্কার-টুরস্কার দিচ্ছে। বাংলাদেশ ছোট দেশ। ফলে কিছুটা পরিচিতিও ঘটেছে। আসলে আমি সেই ছেলেবেলা থেকেই ছবি তৈরি আর লেখালিখি করতে চেয়েছিলাম। আমি ভাগ্যবান যে তা করতে পেরেছি এবং এখনও করে চলেছি।

প্রিয়. কম: আপনার স্বপ্নীল জীবনের সঙ্গে বর্তমান জীবনের কোন মিল খুঁজে পান ?

তানভীর মোকাম্মেল: স্বপ্ন তো দু’রকম থাকে-ব্যক্তিগত ও সমষ্টিগত। আমার ব্যক্তিজীবনে আমার কোনো অতৃপ্তি নেই। আমার অধিকাংশ স্বপ্নই সফল হয়েছে। তবে সমষ্টিগত বা জাতিগত স্বপ্নের ক্ষেত্রে আমার কিছু অতৃপ্তি রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় যেসব স্বপ্ন দেখা হয়েছিল আজকের বাংলাদেশ তা থেকে অনেকটাই সরে গেছে। তাছাড়া বিশ্ব জুড়ে সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের পিছু হঠাটাও আমাকে ব্যথিত করে। কারণ আমি সেই তরুণ বয়স থেকেই এই আন্দোলনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত ছিলাম।

প্রিয়. কম: প্রিয়কে সময় দেওয়ার জন্যে ধন্যবাদ।

তানভীর মোকাম্মেল: আপনাদেরকেও ধন্যবাদ।

সম্পাদনা: গোরা