
ছবি সংগৃহীত
মাথার তালুতে র্যাশ হওয়ার কারণ
আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০১৭, ১৬:৫৪
বিভিন্ন কারণে হয়ে থাকে মাথার তালুর র্যাশ। ছবি: নূর, প্রিয়.কম।
(প্রিয়.কম) র্যাশ হওয়া সাধারণত মারাত্মক কোন সমস্যা নয়। পরিবেশগত কারণ অথবা ত্বকের লুকানো কোন সমস্যার কারণেও হতে পারে র্যাশ। র্যাশ হওয়ার কারণ বুঝতে পারলে এর থেকে দ্রুত নিরাময় লাভ করা যায়। মাথার তালুতে র্যাশ হওয়ার কারণগুলোর বিষয়ে জেনে নিই চলুন।
১। অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া
সাবান, ডিটারজেন্ট বা কসমেটিক এর অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়ার কারণে মাথার তালুতে র্যাশ হতে পারে। শ্যাম্পু, কন্ডিশনার, হেয়ার জেল, হেয়ার ডাই অথবা চুলের যত্নে ব্যবহার করা হয় বিভিন্ন পণ্য। এগুলোর মধ্যে উগ্র উপাদান থাকে যার কারণে মাথার তালুর ত্বক ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। মাথার তালুর র্যাশগুলো ফুলে যেতে পারে এবং চুলকানির সৃষ্টি হতে পারে। এই সমস্যা থেকে মুক্ত হতে ক্রিম, জেল বা অয়েন্টমেন্ট ব্যবহার করতে পারেন দুই থেকে তিন সপ্তাহ যাবৎ।
২। সিস্ট
কখনো কখনো মাথার তালুর র্যাশ হয়ে থাকে সিস্টের কারণেও। এগুলো চেনা খুবই সহজ। সিস্টের মত দেখতে এই র্যাশগুলো অক্ষতিকর এবং জেনেটিক কারণে হয়ে থাকে বলে চিন্তিত হওয়ার কারণ নেই। খুব কম ক্ষেত্রেই এরা যন্ত্রণাদায়ক হয় অথবা মাথার তালু সংক্রমিত হয়। এর ফলে র্যাশগুলো থেকে পানি বের হয় এবং ব্যথা হয়। এর থেকে পরিত্রাণের সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে এদের উপেক্ষা করা।
৩। দাদ
এগুলো ভাইরাসের দ্বারা সৃষ্ট র্যাশ। সাধারণত ৫০ এর বেশি বয়সের মানুষদের হয়ে থাকে। দাদ হলে টনটন করে, ব্যথা করে, চুলকায় এবং জ্বালাপোড়ার অনুভূতি হয়। ভাইরাস সংক্রমণের দুই সপ্তাহের মধ্যে র্যাশ দেখা দেয় এবং এর ব্যথা ফুসকুড়ি ভালো হয়ে যাওয়ার পরেও কয়েকমাস পর্যন্ত থাকে।
৪। ফলিকিউলাইটিস
এ ধরণের র্যাশ হলে চুলের গোঁড়া বা ফলিকল ফুলে উঠে। ব্যাকটেরিয়ার ইনফেকশনের কারণে অথবা হেয়ার ডাই বা ঘন কন্ডিশনার ব্যবহার করলে হয়ে থাকে ফলিকিউলাইটিস। এ ধরণের র্যাশের মধ্যে পুঁজ জমতে পারে এবং ব্যথাযুক্ত হয়। মাথার তালুর এ ধরণের ফুসকুড়ি নিরাময়ের জন্য স্টেরয়েড ক্রিম এবং লোশন ব্যবহারের পরামর্শ দেন চিকিৎসক।
৫। রিংওয়ার্ম
সাধারণত শিশুরাই এ ধরণের র্যাশ এর সমস্যায় ভুগে থাকে। কিছুক্ষেত্রে বয়স্কদের ও হতে পারে। এ ধরণের ছত্রাকের সংক্রমণ জীবজন্তু থেকে মানুষে, মানুষ থেকে মানুষে, অন্য বস্তু থেকে মানুষের মধ্যে আসতে পারে। এ ধরণের র্যাশের ক্ষেত্রে চামড়া উঠে এবং ব্যথা হয়। এর ফলে চুল ভেঙ্গে যায় এবং কালো দাগ দেখা যায়। মাথার তালুর রিংওয়ার্ম অ্যান্টি-ফাংগাল ঔষধের দ্বারা ভালো করা যায়।
৬। সেবোরিক ডারমাটাইটিস
মাথার তালুতে লাল দাগের মত দেখা যায় এ ধরণের র্যাশ। তৈলাক্ত চুল, বয়স, ঘন ঘন শ্যাম্পু ব্যবহার করা, ক্লান্তি, চরম আবহাওয়া, মানসিক চাপ, অ্যালকোহল সমৃদ্ধ লোশন ব্যবহার করলে ইত্যাদি কারণে হতে পারে সেবোরিক ডারমাটাইটিস। এ ধরণের র্যাশ অক্ষতিকর হয়, তবে খুবই বিরক্তকর হয়। কারণ এ ধরণের র্যাশের ক্ষেত্রে মাথার তালু শুষ্ক হয়ে যায়, চামড়া উঠে এবং চুলকায়। খুশকি নিরাময় করা গেলে এ ধরণের র্যাশ দূর হয়ে যায়।
৭। সোরিয়াসিস
এটাও এক ধরণের র্যাশ যা মাথার তালুতে হয়। যেকোন বয়সের মানুষেরই হতে পারে এ সমস্যা। সোরিয়াসিসের কারণে র্যাশ হলে গোলাপি রঙের আঁশ দেখা যায় এবং এর পাশাপাশি রুপালী রঙের চামড়া উঠতে দেখা যায়। এর ফলে চুলকায়, ব্যথা হয় এবং রক্ত ও পড়তে পারে।
৮। ক্রিব ক্যাপ
কোন চিকিৎসা ছাড়াই এই সমস্যাটি ৬ মাসের মধ্যে ভালো হয়ে যায়। যদিও অনেক যন্ত্রণা সৃষ্টি হয়। সাধারণত শিশুরাই আক্রান্ত হয় এই সমস্যায়। আপনার শিশুর মাথা ও চুল ভালো করে কোমল শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে দিন। শ্যাম্পু করার আগে চুলে অলিভ অয়েল ব্যবহার করে নিতে পারেন।
সূত্র: বোল্ডস্কাই
সম্পাদনা: কে এন দেয়া