কাঠবাদাম চুল ও ত্বকের জন্যেও সমানভাবে উপকারী। ছবি: মিট মনষ্টার।

দুধ ছাড়াও যে খাবারগুলো থেকে পাবেন প্রচুর ক্যালসিয়াম

ফাওজিয়া ফারহাত অনীকা
সহ-সম্পাদক
প্রকাশিত: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৭, ২২:২৫
আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৭, ২২:২৫

(প্রিয়.কম) ক্যালসিয়াম হলো হাড় ও দাঁতের জন্য অন্যতম প্রয়োজনীয় প্রাকৃতিক ও প্রয়োজনীয় খনিজ। যা হাড় ও দাঁতকে শক্ত রাখতে এবং শক্তি প্রদানে সাহায্য করে থাকে। এ কারণে প্রতিটি মানুষের প্রতিদিনের খাদ্য থেকে প্রয়োজনীয় ক্যালসিয়াম গ্রহণ করা জরুরি। সাধারণ, প্রাকৃতিক খাদ্য উপাদানের মাঝে দুধ হলো সবচাইতে বেশী ক্যালসিয়াম যুক্ত খাদ্য। এক গ্লাস পরিমাণ দুধে রয়েছে প্রায় ৩০০ মিলিগ্রাম পরিমাণ ক্যালসিয়াম।

যে কারণ, প্রতিটি শিশুকে প্রতিদিন এক গ্লাস পরিমাণ দুধ পান করানোর কথা বলা হয়ে থাকে। কারণ, বাড়ন্ত বয়সে শিশুদের হাড় ও দাঁত গঠনে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম প্রয়োজন হয়। তবে অনেক শিশু এবং পূর্ণবয়স্ক মানুষ দুধ পান করতে পছন্দ করেন না। যার ফলে তাদের প্রতিদিনে গ্রহণ করা খাদ্য উপাদানের মাঝে ক্যালসিয়ামের অভাব দেখা দেয়। এছাড়াও, দুধে থাকা ল্যাকটোজ অনেকেই সহ্য করতে পারেন না। অর্থাৎ দুধ পানের সাথে সাথেই বিভিন্ন ধরণের শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে থাকে। এই সমস্যাকে বলা হয়ে থাকে ল্যাকটোজ ইন্টলারেন্স। কারণ, তাদের পাকস্থলী দুধের ল্যাকটোজকে হজম করতে পারে না।

যাদের এমন সমস্যা রয়েছে তাদেরও শারীরিক গঠনের জন্য, হাড় ও দাঁতের সুরক্ষার জন্য ক্যালসিয়ামের প্রয়োজন রয়েছে। দুধ পান ছাড়া তারা কীভাবে তাদের প্রতিদিনের ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণ করবেন? প্রকৃতি অকৃপণ। যে কারণে অন্যান্য বেশ কিছু প্রাকৃতিক খাদ্য উপাদান থেকেও শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ক্যালসিয়াম গ্রহণ করা সম্ভব। তেমনই দারুণ কিছু উপাদানের নাম তুলে ধরা হলো।

ছোলা

ছোলা আমাদের দেশে খুবই জনপ্রিয় ও পরিচিত একটু খাদ্য। রান্না করে, ভেজে অথবা সিদ্ধ করে ছোলা খেতে দারুণ ভালো লাগে। দেখা গেছে যে, দেড় কাপ পরিমাণ ছোলাতে রয়েছে ৩১৫ মিলিগ্রাম পরিমাণ ক্যালসিয়াম এবং প্রচুর পরিমাণে আঁশ। একইসাথে রয়েছে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় প্রোটিন। যে কারণে ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণের জন্য ছোলা হলো সবচেয়ে দারুণ একটি খাদ্য।

ওটস

স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাদ্য হিসেবে বহু আগে থেকেই ওটসের সুখ্যাতি রয়েছে। ওটসে রয়েছে উচ্চমাত্রায় ক্যালসিয়াম, আঁশ, ভিটামিন-বি এবং শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় অন্যান্য গুরুতপূর্ণ পুষ্টি উপাদান। ডায়টেশিয়ানদের মতে, শুধু আধা কাপ পরিমাণ ওটসে রয়েছে ২০০ মিলিগ্রাম পরিমাণ ক্যালসিয়াম। যেটা অনেকটাই দুধের সমপরিমাণ। সাধারণত ওটস সয়ামিল্ক অথবা আমন্ডমিল্কের সাথে খাওয়া হয়। তবে রান্না করে অথবা অন্যভাবেও ওটস খাওয়া যাবে।

কাঠবাদাম

বিভিন্ন ধরণের বাদামের মাঝে কাঠবাদাম সকলের কাছেই বেশ প্রিয় বাদাম। গবেষণা জানায়, এক কাপের তিন-চতুর্থাংশ পরিমাণ কাঠবাদামে রয়েছে ৩২০ মিলিগ্রাম পরিমাণ ক্যালসিয়াম যা দুধে থাকা ক্যালসিয়ামের চাহিদা খুব সহজেই পূরণ করতে পারে। এছাড়াও কাঠবাদাম চুল ও ত্বকের স্বাস্থ্য রক্ষা করতে এবং মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে থাকে।

সবুজ শাক-সবজী

যেকোন ডাক্তার উপদেশ দিয়ে থাকে সুস্বাস্থ্যের জন্য সবসময় তাজা ও সবুজ শাক-সবজী গ্রহণ করার জন্য। বিভিন্ন ধরণের শাকের মাঝে পালং শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম। প্রায় দুই কাপ পরিমাণ পালং শাকে রয়েছে ৩০০-৩৫০ মিলিগ্রাম পরিমাণ ক্যালসিয়াম। বিভিন্ন ধরণের সুস্বাদু সবজীর স্মুদি যে কারণে পান করা যাবে ইচ্ছামত।

কমলালেবু

কমলালেবু

সকল উপাদানের মাঝে কমলালেবুর নাম পড়ে নিশ্চয় খুশি হচ্ছেন! প্রাকৃতিক এই চমৎকার ফল শুধু খেতেই দারুণ না, এর পুষ্টিগুণও দারুণ। ভিটামিন-সি ও ক্যালসিয়াম পূর্ণ কমলালেবু যে কোন সময়েই খাওয়া যেতে পারে। একটি কমলালেবুতে রয়েছে ৬৫ মিলিগ্রাম পরিমাণ ক্যালসিয়াম।

শুকনো ডুমুর

সকালের নাস্তায় অথবা বিকালের হালকা খাবারে শুকনো ডুমুর ফল খাওয়া যেতে পারে নির্দ্বিধায়। দেড় কাপ পরিমান শুকনো ডুমুরে রয়েছে ৩২০ মিলিগ্রাম পরিমাণ ক্যালসিয়াম। একই সাথে এতে রয়েছে অনেক উচ্চমাত্রায় স্বাস্থ্যকর অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস।

পনীর

পনীর খেতে কে না ভালোভাসে! বিভিন্ন খাদ্য তৈরিতে পনীর একটি আবশ্যিক উপাদান। জেনে খুশি হবেন, এক কাপের তিন-চতুর্থাংশ পরিমাণ পনীরে রয়েছে ৩০০-৩৮০ মিলিগ্রাম পরিমাণ ক্যালসিয়াম। এবং ২১ গ্রাম পরিমাণ প্রোটিন। যা শিশু থেকে পূর্ণবয়স্ক যে কারোর জন্য উপকারী খাদ্য।

সয়ামিল্ক

গরুর দুধ পানে সমস্যা হয় অথবা পান করতে পছন্দ করেন না। সেক্ষেত্রে সয়ামিল্ক হলো ল্যাকটোজ ইন্টলারেন্টদের জন্য সবচাইতে ভালো একটি উপাদান। সয়ামিল্কে ক্যালসিয়ামের পাশাপাশি রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন। যা একজনের শরীরের প্রতিদিনের চাহিদা পূরণে সক্ষম।

সূত্র: BoldskyGreatist

প্রিয় লাইফ/কে এন দেয়া