রেস্তরাঁয় গিয়ে কচুপাতা আর সর্ষে বাটা দিয়ে ভাপানো কুচো চিংড়ি খাওয়ার ভক্ত নেহাত কম নয়। কিন্তু বাড়িতে কচুশাক বা কচুর ডাঁটা দিয়ে তরকারি রাঁধার কথা মনে করলেও মনে ভয় ধরে। প্রচুর পরিশ্রম! আর এই ভাবনা থেকেই বাংলার বহু প্রাচীন রান্না ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে।
অথচ ওই ধরনের রান্না সব সময়ই যে পরিশ্রমসাধ্য, তা নয়।
ঘণ্ট বাঙালির প্রাচীন রন্ধনপ্রণালীর একটি। এই ধরনের রান্নার বৈশিষ্ট্য হল, এতে মশলা বেশি পড়ে না। সামান্য ফোড়নের গন্ধ আর একটু সময় দিয়ে ভাজা। তাতেই ঝাল-মিষ্টি এই তরকারির স্বাদ মুখে লেগে থাকে।
কী ভাবে বানাবেন?
উপকরণ:
- ৫০০ গ্রাম কচুর ডাঁটা বা কচুর লতি ছোট টুকরোয় কেটে নেওয়া
- ২-৩ টেবিল চামচ সর্ষের তেল
- ১ টেবিল চামচ কালোজিরে
- ৩-৪টি শুকনো লঙ্কা ফোড়ন
- ১২-১৪ কোয়া রসুন থেঁতো করে নেওয়া
- ৭-৮টি কাঁচালঙ্কা
- ১ কাপ ছোলা সারা রাত জলে ভেজানো
- ১/২ চা চামচ হলুদ গুঁড়ো
- ১/২ কাপ নারকেল কোরানো
- স্বাদমতো নুন
- স্বাদমতো চিনি
প্রণালী:
কচুর ডাঁটা বা কচুর লতি টুকরো করে কেটে পরিষ্কার করে ধুয়ে নিয়ে একটি বড় পাত্রে জল গরম করে তার মধ্যে নুন দিয়ে সেদ্ধ হতে দিন। ঢাকা দিয়ে অন্তত দশ মিনিট সেদ্ধ হতে দিতে হবে। যখন দেখবেন কচুর পরিমাণ কমে প্রায় অর্ধেক হয়ে গিয়েছে তখন ওর মধ্যে ৫-৬টি কাঁচালঙ্কা সামান্য চিরে দিয়ে আরও মিনিট পাঁচেক আঁচে রাখুন। তার পরে নামিয়ে নিয়ে জল ঝরিয়ে নিন।
কড়াইয়ে সর্ষের তেল গরম করে তাতে শুকনো লঙ্কা এবং কালোজিরে ফোড়ন দিন। সামান্য নেড়ে দিয়ে দিন থেঁতো করা রসুন। রসুন ভাজা হলে ওর মধ্যে দিন বাকি কাঁচালঙ্কা বাটা এবং সেদ্ধ করা কচুর লতি, ভিজিয়ে রাখা ছোলা এবং প্রয়োজনমতো নুন আর মিষ্টি।
এর পরে তেলে ভাল ভাবে কচুর লতি ভাজা ভাজা করে নিতে হবে। কিছু ক্ষণ অন্তর কচুর লতি নাড়তে থাকুন। এই পর্যায়ে কচুর লতি একেবারে মিহি হয়ে আসবে। নুন আর মিষ্টি পরখ করে নিন। এই রান্নাটিতে একটু মিষ্টি ভাব থাকবে।
নাড়তে নাড়তে কড়াই থেকে তেল ছেড়ে এলে আর কচুর লতি পরিষ্কার ভাবে উঠে এলে বুঝবেন রান্না হয়ে গিয়েছে। আঁচ বন্ধ করে উপরে কোরানো নারকেল ছড়িয়ে গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন।