ছবি সংগৃহীত

শিশুর কোষ্ঠ কাঠিন্য- কেন হয় ও কী করবেন?

প্রিয় লাইফ
লেখক
প্রকাশিত: ২২ জুন ২০১৪, ০৯:৩০
আপডেট: ২২ জুন ২০১৪, ০৯:৩০

(প্রিয়.কম) কোষ্ঠকাঠিন্য বা কনস্টিপেশন সম্পর্কে আমরা কম-বেশি জানি। মলত্যাগ করতে কারও যদি অসুবিধা হয় অথবা বেশি সময় লাগে, তাকেই আমরা কোষ্ঠকাঠিন্য বলে থাকি। অনেক সময় অসুস্থতার কারণে কম খাওয়ার ও অপর্যাপ্ত পানি পান করায় কিছুদিনের জন্য কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। তবে এই অসুখটি আসলে বয়স্কদের অসুখ হিসাবেই বেশি পরিচিত। শিশুদের কোষ্ঠকাঠিন্য কেন হয়, প্রতিকারই বা কী- সে সম্পর্কে ধারণা হয়তো আমাদের অনেকেরই নেই। অনেক শিশু আছে, দু-তিনদিন পায়খানা না করেও ভালো থাকে। আবার অনেকের একদিন পায়খানা না করার কারণেই পেট ফুলে যেতে পারে। তিন থেকে পাঁচ বছরের শিশুরা কোষ্ঠকাঠিন্যে বেশি ভোগে। এ শিশুর কয়েক মাস ধরে পায়খানার সমস্যা থাকে এবং বেশ কয়েক দিন পরপর পায়খানা হয়। সব সময় কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে এর কারণ বের করে চিকিৎসা করাতে হয়।

কারণ-

অনেকদিনের কোষ্ঠকাঠিন্য বা ক্রনিক কনস্টিপেশনের বেশকিছু কারণ রয়েছে। যেমন- * খাদ্যাভ্যাসজনিত কারণ : কম আঁশযুক্ত খাবার খেলে অনেক শিশু কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগতে পারে। গরুর দুধ খেলেও অনেক সময় কোষ্ঠকাঠিন্য হয়। * শারীরিক ত্রুটি : অ্যানোরেকটাল স্টেনোসিস বা মলদ্বার জন্মগতভাবে বন্ধ থাকলে। * স্নায়ুতন্ত্রের ত্রুটি * মানসিক প্রতিবন্ধী হলে। * স্নায়ুর সমস্যা বা সেরেব্রাল পলসি থাকলে। * জন্মগতভাবে পেটের সামনের মাংস না থাকলে। * শরীরের শক্তি কমে যাওয়া বা হাইপোটনিয়া হলে। * হাইপোথাইরয়েডিজম হলে। * বহুমূত্র রোগ হলে। * শরীরে ক্যালসিয়াম বেশি হলে। * রেনাল টিউবুলার অ্যাসিডোসিস হলে।

শিশুদের ক্ষেত্রে লক্ষণ-

* পেটে ব্যথা : মাঝে মধ্যে থাকবে, আবার কিছু সময় থাকবে না। * খাওয়া-দাওয়ায় অনীহা, ক্ষুধামন্দা ভাব দেখা দেবে। * বমি হতে পারে বা বমি ভাব থাকতে পারে। * শরীরের ওজন কম বাড়বে। * পরীক্ষা করলে দেখা যাবে পেটটা শক্ত ও ফুলে আছে। পেটের ওপর হাত দিলে মল শক্ত অনুভূত হবে। মলদ্বার আর্দ্র থাকবে এবং স্ফিংটার খোলা থাকবে। এর ওপরই মল আটকে থাকে।

অভিভাবক হিসাবে আপনার করনীয়-

  • -শিশুকে শান্তভাবে মলত্যাগ করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। শিশু যেন ব্যথা না পায় এবং মা-বাবা যেন চিন্তামুক্ত থাকেন, অস্থিরতায় না ভোগেন সেদিকে লক্ষ্য রাখা দরকার। প্রয়োজনে বাচ্চাদের মলত্যাগের জন্য পুরস্কৃত করে উৎসাহিত করতে হবে।
  • -শিশুকে প্রচুর পরিমাণে পানি খাওয়াতে হবে এবং আঁশযুক্ত খাবার দিতে হবে। শক্ত পায়খানা নরম করার জন্য ওষুধ দেয়া যেতে পারে।
  • -যদি এসবে পায়খানা না হয়, তাহলে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে সিম্পল এনেমা দিতে হবে। বাসায় গ্লিসারিন সাপোজিটরি দেয়া যেতে পারে। এক থেকে দুই চামচ মিথাইল সেলুলোজ খাওয়ার পর এ সাপোজিটরি দেয়া যেতে পারে।
  • -মলদ্বারে ফিসার থাকলে চিকিৎসা করাতে হবে। মানসিক কোনো সমস্যা থাকলে শিশু-মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
  • -এসব চিকিৎসায় ব্যর্থ হলে ধরে নিতে হবে শিশুর হারসপ্রং রোগ হয়েছে। এ ক্ষেত্রে দেখা যায় মলদ্বার থেকে বায়োপসি করলে প্যারা সিম্পেথেটিক গ্যাংলিওনিক সেল নেই। এ রোগ সাধারণত জন্মের প্রথম মাসে ৮০ শতাংশ এবং প্রথম বছরে ৯৫ শতাংশ ধরা পড়ে। এ রোগে পেট ফোলা, বমি, কোষ্ঠকাঠিন্য, খাবারে অনীহা, হলুদ বমি ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দেয়।
তথ্য সূত্র- ডা. মোঃ মুজিবুর রহমান