ছবি সংগৃহীত

পদোন্নতি নিয়ে ফুঁসে ওঠেছে সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তারা

priyo.com
লেখক
প্রকাশিত: ১৩ মে ২০১৪, ১৯:২৯
আপডেট: ১৩ মে ২০১৪, ১৯:২৯

(প্রিয়.কম) সোনালী ব্যাংকে পদোন্নতি নিয়ে ফুঁসে ওঠেছে কর্মকর্তারা। সম্প্রতি অটোমেশনের নামে কর্মকর্তাদের পদোন্নতির জন্য কম্পিউটার জ্ঞানের ওপর নম্বর বরাদ্দের শর্তারোপসহ কয়েকশ' বিষয় অন্তর্ভুক্ত করে নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। এটাকে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বৈষম্যমূলক বলে দাবি করছেন। এ জন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে চরম অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। জানা গেছে, সোনালী ব্যাংকের অর্গানোগ্রাম (জনবলের সাংগঠনিক কাঠামো) সেকেলেই রয়ে গেছে। ১০ বছর আগের অর্গানোগ্রাম এক বছর আগে পুনর্গঠনের উদ্যোগ নেয়া হয়। কিন্তু আজও তা আলোর মুখ দেখেনি। সম্প্রতি এই নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে ফুঁসে উঠছেন তারা। ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এ নীতিমালার বিরোধিতা করে ব্যাংকের চেয়ারম্যান বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন। তারা ব্যাংকের স্বার্থে যৌক্তিক অর্গানোগ্রাম পুনর্গঠন কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন এবং বর্তমান পর্ষদ প্রণীত ২০১৩ সালের নীতিমালার হুবহু বহাল রেখে ২০১৪ সালের পদোন্নতি কার্যক্রম শুরু করার দাবি জানান। সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, নতুন নীতিমালার আলোকে পদোন্নতি কারও জন্য মঙ্গলজনক হবে না। এতে বঞ্চিতদের কর্মস্পৃহা কমে যাবে যা ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। একাধিক কর্মকর্তা আলোকিত বাংলাদেশকে জানিয়েছেন, বৈষম্যমূলক এই নীতিমালা অবিলম্বে প্রত্যাহার না হলে তারা চেয়ারম্যানের কার্যালয় ঘেরাওসহ কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবেন। জানা গেছে, অবিলম্বে সোনালী ব্যাংকের অর্গানোগ্রাম যুগোপযোগী করা ও আগের পদোন্নতি নীতিমালা বহাল রাখতে সম্প্রতি সোনালী ব্যাংকে বিভিন্ন ফোরাম ও অ্যাসোসিয়েশন পুনর্গঠন করা হয়েছে। এগুলো হলো ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজারস ফোরাম, অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজারস ফোরাম ও সিনিয়র এক্সিকিউটিভ অফিসার্স ফোরাম। সংগঠনগুলো এরই মধ্যে চেয়ারম্যান বরাবর এ বিষয়ে স্মারকলিপি দিয়েছে। এছাড়া সোনালী ব্যাংক অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল, সোনালী ব্যাংক এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনও পৃথকভাবে চেয়ারম্যান বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের দুজন পরিচালক ও ব্যাংকের একজন ডিএমডি হাতেগোনা কিছু কর্মকর্তার স্বার্থরক্ষায় তড়িঘড়ি করে মনগড়া পদোন্নতি নীতিমালা প্রস্তুত এবং তা পরিচালনা পর্ষদের সভায় অনুমোদন করা হয়। যার বিরুদ্ধে স্বয়ং ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষও। ভুক্তভোগীরা বলেছেন, প্রতিযোগিতামূলক ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে অটোমেশনের বিকল্প নেই। কিন্তু হঠাৎ পদোন্নতির অন্যতম শর্ত কম্পিউটার জ্ঞানের জন্য ৫ নম্বর জুড়ে দেয়া গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। ২৫-৩০ বছরের চাকরির জ্ঞান এক্ষেত্রে কম নয়। জানা গেছে, অর্গানোগ্রামে পরিবর্তন না হওয়ায় একই এলাকায় বসবাসরত জনতা ও অগ্রণী ব্যাংকের শাখা প্রধানদের তুলনায় সোনালী ব্যাংকের শাখা প্রধানরা কম পদমর্যাদা সম্পন্ন। পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে জানা যায়, বর্তমানে অগ্রণী ব্যাংক ৮৯২টি শাখার মাধ্যমে ব্যবসা পরিচালনা করছে। এ ব্যাংকে বর্তমানে জিএম, ডিজিএম ও এজিএম পদে কর্মরত রয়েছে যথাক্রমে ২১, ১০৬ ও ৩০৩ জন। জনতা ব্যাংকের ৮৯৭টি শাখা পরিচালনার জন্য জিএম, ডিজিএম ও এজিএম কর্মরত রয়েছেন যথাক্রমে ২৭, ১০৬ ও ৩০৮ জন। অথচ সবচেয়ে বড় ব্যাংক হয়েও ১ হাজার ২০৪টি শাখা পরিচালনার জন্য সোনালী ব্যাংকে জিএম, ডিজিএম ও এজিএম হিসেবে কর্মরত রয়েছেন যথাক্রমে ২০, ১২০ ও ২৯৩ জন। এই পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে সোনালী ব্যাংকের অর্গানোগ্রাম কতটা সেকেলে। আবার ১ বছর ধরে আলোচনা করেও কেন সুষম ও ভারসাম্যমূলক অর্গানোগ্রাম করা সম্ভব হয়নি তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সূত্র : আলোকিত বাংলাদেশ