ছবি: রাজীন চৌধুরী
(প্রিয়.কম) দেশের আনাচে-কানাচে লুকিয়ে থাকা অনিয়ম-দুর্নীতি আর অপরাধ চিত্র মানুষের সামনে তুলে আনার কাজটি দীর্ঘ দশ বছর ধরে করে চলেছেন মুঞ্জুরুল করিম। তিনি বর্তমানে ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনে সিনিয়র স্টাফ করেসপন্ডেন্ট হিসেবে কর্মরত আছেন। পাশাপাশি তিনি দেশের জনপ্রিয় অপরাধ অনুসন্ধান বিষয়ক অনুষ্ঠান তালাশ-এর উপস্থাপনা ও পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন। এর আগে তিনি বাংলাভিশন ও এনটিভিতে কাজ করেছেন।
প্রিয়.কম-এর মুখোমুখি হয়েছেন মুঞ্জুরুল করিম। এসময় তাঁর কর্মজীবনের নানা অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করেছেন এবং পরামর্শ দিয়েছেন বিভিন্ন বিষয়ে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন নাজমুল হাসান শান্ত।
শৈশব ও শিক্ষাজীবন
আমার বাড়ি হচ্ছে বগুড়া জেলার নন্দিগ্রাম থানার দোহার গ্রামে। আমি পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত গ্রামে ছিলাম। আমাদের গৃহস্থ পরিবার। আমাদের পাশের গ্রামে একটি স্কুল ছিল। প্রতিদিন প্রায় দুই আড়াই কিলোমিটার হেঁটে আমাদের স্কুলে যেতে হতো। আমাদের গ্রামে আমার ভাই প্রথম মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি চেয়েছিলেন আমি শহরে পড়ি। সেজন্য আমাকে রাজশাহী কলিজিয়েট স্কুলে ভর্তি করা হয়। সে স্কুল থেকেই আমি এসএসসি পরীক্ষা দেই। এসএসসিতে আশানুরূপ ফলাফল করতে না পারায় শাস্তিস্বরূপ আমাকে বাড়ির সামনের জমিতে পনেরো দিন কাজ করতে হয় এবং বগুড়া আজিজুল হক কলেজে ভর্তি করা হয়। সেখানে প্রথমে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হলেও পরে আমি বাণিজ্য বিভাগে চলে যাই। এরপর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হই। সেখান থেকে ইকোনমিকস বিষয়ে অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করি। ফলে শিক্ষা জীবনের মাত্র দুই বছর আমি পরিবারের সঙ্গে ছিলাম। আমি একজন ভ্রাম্যমাণ ছাত্র।
কর্মজীবন
মাস্টার্স শেষ করার আগেই আমি সাংবাদিকতায় যোগ দেই। কারণ ষষ্ঠ শ্রেণি থেকেই পরিবারের কাছে টাকা নিতাম। কিন্তু মাস্টার্সের শেষের দিকে এটা করতে আমার বেশ বিরক্ত লাগছিল। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে সাধারণত সবাই টিউশনি করে। কিন্তু আমি জীবনে একটা টিউশনি করতে পারি নাই। কারণ আমাকে দেখে কেউ বুঝতে চাইত না, আমার টিউশনি করা দরকার। পরে হাসান বুক ডিপো প্রকাশনীতে কিছুদিন কাজ করি।

এরপর একটি নতুন টেলিভিশন চ্যানেলের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখে আমি সেখানে আবেদন করি। ২০০৫ সালের শেষের দিকে
বাংলাভিশন তিন পর্বে পরীক্ষা নিয়ে লোক নিয়োগ করে। কিন্তু আমাকে শুধু চূড়ান্ত ভাইভার জন্য ডাকে। আমি তখন আশানুরূপ করতে না পারা সত্বেও আমাকে নিয়ে নেয়। কিন্তু
বাংলাভিশন পরীক্ষামূলক সম্প্রচারে থাকাবস্থায় আমি
এনটিভিতে চলে আসি।
এনটিভির ভাইভাতেও আমার একটাই উত্তর ছিল- আমি পারি না, আমি জানি না। সেখানকার প্রধান বার্তা সম্পাদক বিরোধিতা করা সত্বেও এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর আমাকে কাজ করার সুযোগ দেন।
এনটিভিতে আমি ক্রাইম বিটে কাজ করা শুরু করি। সাংবাদিকতাকে পেশা হিসেবে নেয়া যায় কিনা বা এটা থেকে অন্য কোনো পেশায় যাব কিনা এভাবে কখনো ভাবি নাই। একটা সময় দেখা গেল এটাই আমার পেশা হয়ে গেছে। আমার কোনো পেশাই জীবনের লক্ষ্য ছিল না। আমার লক্ষ্যগুলো ছিল ছোট ছোট যেমন এসএসসি, এইচএসসি ও ভর্তি পরীক্ষা। এসব পরীক্ষায় ভাল করাই আমার লক্ষ্য ছিল। সাংবাদিকতা যে একটা বিষয় বা পেশা আমি জানতামই না। আমি একেবারে পিছিয়ে পরা জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি। একটা চাকরি খুঁজতে খুঁজতে আমার সাংবাদিকতায় আসা। সাংবাদিকতার কোনো ব্যাকরণ বা সাংবাদিকতার ‘স’ আমি জানি না। আমার অভিজ্ঞতা থেকে আমি যা জানি তা হলো সাংবাদিকতার জন্য সাধারণ জ্ঞান (কমনসেন্স) থাকা জরুরি।
রিপোর্টার হয়ে ওঠা
এনটিভিতে আমার একটি নির্দিষ্ট চরিত্র গড়ে ওঠে। আমি কখনই প্রধান স্টোরিগুলো করতাম না। আমি সাইড স্টোরি করতে বেশি পছন্দ করতাম এবং সেগুলোই মানুষের কাছে বেশি গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে।
এনটিভিতে ক্রাইমে কাজ করার এক পর্যায়ে আমাকে ক্লাইমেট চেঞ্জ নিয়ে কাজ করতে বলা হয়। পরে দেড় দুই মাস সারাদেশ চষে ১৩টি রিপোর্ট করি জলবায়ু পরিবর্তনের উপরে। পরে সেগুলো নিয়ে বাংলা ও ইংরেজি ভার্সনে ডকুমেন্টারি তৈরি করা হয়। এটা নিয়ে আমি ২০০৯ সালে ডেনমার্কের জলবায়ু সম্মেলনে যাই।

ওখানে একটা বড় চ্যালেঞ্জ ছিল, কারণ সেখানে প্রধানমন্ত্রী গিয়েছেন। সুতরাং আমাদের দেশের সাংবাদিকরা প্রধানমন্ত্রী কখন ও কোথায় কার সঙ্গে বৈঠক করছেন এসব খবর দিচ্ছেন। আমি যেহেতু প্রধানমন্ত্রী বিট বা পরিবেশ বিটের সাংবাদিক না, সুতরাং আমি চলে যাই সেখানে এক সাগর পাড়ে যেখানে উইন্ডমিল রয়েছে। প্রাকৃতিক সম্পদ থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে তারা উন্নতি করছেন। আমি এসব ভিন্নধর্মী রিপোর্ট করি। পরে সহকর্মী ও বড় ভাইয়ের মাধ্যমে জানতে পারলাম জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে আমার ছবি প্রকাশ করেছে। প্রথমে বিশ্বাস না করলেও চেক করে দেখি তারা একটি রিপোর্ট করেছে, বাংলাদেশি একজন সাংবাদিক এখানে এসে রিপোর্ট করছে। আমার একটা দুর্ভাগ্য আমার করা একটা ডকুমেন্টরি সিসিটিভিতে সম্প্রচার করেছে কিন্তু আমি দেখতে পারি নাই। তখন আমার ক্রাইম রিপোর্টারের পরিচয়টা একপাশে সরে যায়। অনেকে আমাকে পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ক সাংবাদিক ভাবতে শুরু করে। পরে অফিস থেকে আমাকে সব বিটের ইভেন্ট কাভার করতে পাঠাত। এটা আমার জন্য একটি বড় টার্নিং পয়েন্ট।
ক্রাইম রিপোর্টার হয়ে ওঠা
তখন
এনটিভিতে সুপন রায়ের সঞ্চালনায়
ক্রাইম ওয়াচ নামের একটি অনুষ্ঠান হতো। তিনি চলে গেলে সে দায়িত্ব আমার ওপর এসে পরে। আমার উপস্থাপনায় ক্রাইম ওয়াচের প্রথম পর্ব প্রচারের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধুরা বলে, ‘তোর নূন্যতম লজ্জা থাকা উচিত। সুপন রায় যা করতো, তুই তা করতে গেছিস। তোরটা কিছুই হয় নাই।’ এই মন্তব্যটা আমার সবসময় মনে থাকবে। কারণ এটা আমার পরিবর্তনে অনেক ভূমিকা রেখেছে। কিন্তু তার তিন-চার মাসের ব্যবধানে আমি প্রমাণ করতে পেরেছি আমিও পারি। আমি কোট-টাই পরে বা মেক আপ নিয়ে উপস্থাপন করা একদমই পছন্দ করি না। পরে আস্তে আস্তে আমি নিজেকে এসব কিছু থেকে বের করে নিয়ে আসি।
জীবন সংগ্রাম
আমার বড় ভাইদের সাথে গিয়ে ক্যামেরা-ট্রাইপড টানাসহ তাদের কাজে সাহায্য করার অনেক অভিজ্ঞতা রয়েছে। একবার পহেলা বৈশাখে বড় ক্যামেরা আর ট্রাইপড কাঁধে নিয়ে বটতলায় যেতেই আমার বন্ধুদের সাথে দেখা হয়। তখন তারা বলেছিল ‘তুই তো আমাদের মান-সম্মান ডুবালি’। পরে ওই বন্ধুরাই এখন ফোন ও ফেসবুকে বলে প্রাউড অব ইউ (তোমার জন্য গর্বিত)।
তখন এগুলো না করলে আমি কাজ করার সুযোগই পেতাম না। এখন যে পর্যায়ে আসছি, তার কারণ কাজের নেশা আমাকে পাগল করে দেয়। আমার একটা সন্যাসজাতীয় রোগ আছে। কিছুদিন পর পর আমার কাছে মনে হয় সাগরে-পাহাড়ে চলে যাই। এখানকার চাকরি ছেড়ে দিয়ে সেখানে গিয়ে স্কুলে বাচ্চাদের পড়াই। বৃত্ত থেকে বের হয়ে আবার কোনো বৃত্তে আটকে যাই।
ইন্ডিপেনডেন্ট টিভিতে আসা এবং তালাশ
২০১১ সালে আমি
এনটিভি ছেড়ে দেই। সেখানে আমি ক্রাইম প্রোগ্রামের উপস্থাপনা করতাম। যার কারণে প্রায় কন্টেন্ট আমার পছন্দ হতো না। দেখা গেছে শুধু খুনের ঘটনার ওপর কাজ হচ্ছে। সাম্প্রতিক কোনো বিষয় নিয়ে কাজ হচ্ছে না এমন মনে হতো। সেখান থেকেই আমার মধ্যে একটি ক্ষুধা তৈরি হয়।
ইন্ডিপেনডেন্ট টিভিতে আমি রিপোর্টার হিসেবে যোগ দেই। এখানে তত্ব-তালাশ নামে একটি অনুষ্ঠান করার কথা ছিল। যার এটি করার কথা ছিল তিনি
ইন্ডিপেনডেন্ট টিভি সম্প্রচারে আসার আগেই চাকরি ছেড়ে দেন। এটি করার জন্য তার একটি ডিজাইন থাকে যা আমি পরিবর্তন করে নিজের মতো করে নেই। নাম পরিবর্তন করে আমি দেই
তালাশ। কারণ আমি টেলিভিশনে তত্ব দেখাতে বা শেখাতে আসি নাই। পুরনো ডিজাইনে ছিল কয়েকটা স্টোরি জোড়া দিয়ে একটি অনুষ্ঠান করা। যেটা ক্রাইম ওয়াচে ছিল। কিন্তু আমি সেটা পরিবর্তন করে সিদ্ধান্ত নিই একটি বিষয় বা গল্পেই একটি অনুষ্ঠান করার। পরবর্তীতে অনেক চ্যানেল আসছে তখন সবাই দেখলাম একটি বিষয়ের উপরেই অনুষ্ঠান করছে। এতে আমাদের মধ্যে একটি প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হচ্ছে এবং মানুষ আরও বেশি জানতে পারছে। এমন কি কোনো অপরাধ বিষয়ক অনুষ্ঠান পুরস্কার পেলেও বলা হয়
তালাশকে টপকে পুরস্কার পেল। আমার কাছে এটা বেশ ভাল লাগে। কারণ
তালাশকে বাদ দেয়ার কোনো সুযোগ নেই।
আমরা চলতি বছরের ডিসেম্বরে শততম পর্ব প্রচার করতে যাচ্ছি। তালাশ টিমে আমি ছাড়াও আরও চারজন রিপোর্টার কাজ করে। কিন্তু তালাশ টিমে যে ক্যামেরাম্যানরা কাজ করে তাদেরকে ঈশারা না দিলেও বুঝতে পারে কোন ছবিটা লাগবে। আবার যে ড্রাইভাররা গাড়ি চালান তাদেরকে না বললেও তারা বোঝেন কখন দ্রুত বা আস্তে চালাতে হবে। আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি হচ্ছে গ্রাফিক্স, প্রডাকশনে যারা কাজ করেন তাদেরকে তো আমরা বাদ দিতে পারি না। এরকম সব মিলিয়ে বেশি সংখ্যক মানুষই কাজ তালাশ টিমে কাজ করে। আমরা তালাশে খুন ও ভূমি সংক্রান্ত পর্ব করি না, কারণ এগুলো অনেক দীর্ঘ মেয়াদী বিষয়।
তালাশের তুলে আনা গল্পগুলো নিয়ে ঐতিহ্য প্রকাশনী থেকে আমার লেখা একটি বই প্রকাশিত হয়। আমি মনে করি, বেদ বাক্য বলার চেয়ে গল্পের মধ্যে শিক্ষণীয় বিষয়গুলো অনেক দিন মনে থাকে।
চ্যালেঞ্জ ও হুমকি
আমার কাছে নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়া ছাড়া আর কিছুকে কখনো চ্যালেঞ্জ মনে হয় নাই। হুমকি-ধমকি নিয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না। কারণ আপনাকে যদি প্রতিদিনই ভয় দেখানো হয়, তাহলে একসময় আপনার ভয় বলে কিছু থাকবে না। গতকালও আমার মা ফোনে বললেন, আমি যেন চাকরিটা ছেড়ে দেই। কিন্তু আমি মাকে বলেছি এত দিন ধরে একটি কাজ করে আমি অভ্যস্থ হয়ে গেছি। এখন অন্য পেশায় গেলে আবার নতুন করে শুরু করতে হবে। আমি মজা করে অনেক সময় বলি, প্রয়োজন হলে কেউ যেন আমাকে খুন করে, কারণ পঙ্গু করে বাঁচিয়ে রাখলে একটা সমস্যা।
স্বপ্ন ও সাধ
আমার মাথায় সবসময় নিত্য নতুন আইডিয়া, ডিজাইন চলে আসে। আমি ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হতে চাই নাই। তবে আমি যুদ্ধ সাংবাদিক হতে চেয়েছিলাম। আমার এই স্বপ্ন হয়তো অন্য কারো জন্য সফল হতে পারে কিন্তু আমার দ্বারা সফল হবে না। কারণ চ্যানেলগুলোর সক্ষমতা ওই পর্যায়ে যেতে আরও ১০-১৫ বছর লেগে যেতে পারে। কিন্তু তখন আমার আর এই শক্তি সমর্থ থাকবে না।
টেলিভিশন সাংবাদিকতা
বাংলাদেশের টেলিভিশন সাংবাদিকতা একটি নির্দিষ্ট ফরমেটে আটকে গেছে। এখন যা হচ্ছে দর্শকদের প্রচুর পরিমান তথ্য দেয়া হচ্ছে। এখনকার প্রচলিত সিস্টেমে কোনো রিপোর্টারকে আর আলাদা চেনা যায় না। কিছু ঘটলে সবাই ছুটে যাচ্ছে, সবাই সরাসরি দেখাচ্ছে। সব টিভির প্রচার একই রকম। তাছাড়া প্রতিযোগিতা করতে গিয়ে দ্রুত সংবাদ প্রচার করতে ভুল তথ্য দেয়া হয়। ব্যাপারটা এমন হয় যেন আগে সংবাদ ছেড়ে দেয়া হয় পরে শুদ্ধ করা হয়। এতে করে মানুষ দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পরে। বৈচিত্রতা খুব কম।
ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবন
পারিবারিক জীবনে আমার স্ত্রী আছে। আমার মা আছেন কিন্তু বাবা বেঁচে নেই। আমি পাঁচ বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট। সবাই বগুড়া কেন্দ্রিক, আমি শুধু ঢাকায় থাকি। আমার মাকে ঢাকায় আনতে চাইলেও তিনি গ্রামের ভিটে-বাড়ি ছেড়ে ঢাকায় আসতে চান না।
সাংবাদিকদের ব্যক্তিগত জীবনের চেয়ে পেশাগত জীবনেই বেশি সময় দিতে হয়। এতে করে পরিবারের সদস্যরা অনেকটা বঞ্চিত হয়। আমার স্ত্রী এখনও কথা বলার সময় দু’বার ফোন করল। প্রথমবার এসএমএস করতে ভুলে গিয়েছিলাম কিন্তু দ্বিতীয়বারের পর এসএমএসে বললাম মিটিংয়ে আছি। আবার কখনো আমার স্ত্রীকে নিয়ে মার্কেটে গেলে যতই সাধারণভাবে যাই মানুষজন আমাকে চিনতে পারলে শুরু করে দেয় সেলফি তুলতে। আমি অনেক অস্বস্তিতে থাকি যখন মনে হয় কেউ আমাকে ফলো করছে। আজকে অনেক মাধ্যম হওয়ার কারণে ব্যক্তি জীবন নিয়ে আলোচনা সমালোচনা বেশি হচ্ছে। এতে মানুষের ব্যক্তিগত জীবনে অনেক সমস্যা সৃষ্টি করে। অনেকে বলে আপনাকে অনেক ভাল লাগে কিন্তু জিজ্ঞাসা করলে উত্তর আসে তালাশকে ভাল লাগে।
পাঠকদের সম্পর্কে
পাঠকরা রগরগে বিষয় বেশি পছন্দ করে। আমার অভিজ্ঞতা থেকে জানি তারা তালাশে ড্রাগ, ইয়াবা, ভারতীয় সিরিয়ালের বিরুদ্ধে পর্ব বেশি দেখতে চায়। কিন্তু যখন এসব বিষয় নিয়ে নিউজ বা পর্ব করা হয় তখন তারা মোবাইল বা ল্যাপটপ থেকে ঠিকই দেখে। আবার সমালোচনা করার সময় বলে এগুলো কোনো দেখানোর বা বলার মতো বিষয় হলো। আগে নিজে দেশ ও সমাজের জন্য ক্ষতিকর বিষয়গুলো মন থেকে এড়িয়ে চলুন, পরে অন্যের সমালোচনা করুন।