ছবি সংগৃহীত

ঘুরে আসুন দর্শনীয় স্থান, জেনে নিন খুঁটিনাটি তথ্য (দ্বিতীয় পর্ব)

Toufikul Islam
লেখক
প্রকাশিত: ২২ জানুয়ারি ২০১৪, ১০:১৯
আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০১৪, ১০:১৯

শত ব্যস্ততার শহরে একটু খোলামেলা জায়গায় দম ফেলার যেন ফুসরত নেই। কাজের ফাঁকে একটু ছুটি পেলেই তাই অনেকেই ছুটেন একটু বিনোদনের জন্য। কিংবা ছুটির দিনে পরিবারের সবার সঙ্গে সময় কাটাতে একটু খোলা পরিবেশে ঘুরে বেড়ানো, সন্তানদের দৌড়ে বেড়ানো, প্রাণ খোলে নিঃশ্বাস নিতে রাজধানী ও এর আশেপাশে রয়েছে বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থান। এসব দর্শনীয় স্থান সপ্তাহে কয়দিন খোলা থাকে, কোন দিন বন্ধ থাকে, সময়সূচি, যাতায়াত ব্যবস্থা ও যোগাযোগ নম্বরসহ বিস্তারিত প্রকাশ করা হলো ভ্রমন পিপাসুদের জন্য। (দ্বিতীয় পর্ব)

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার

মেঘমুক্ত বিস্তীর্ণ আকাশে জ্বলজ্বল করছে লাখো কোটি তারা। একে একে চোখের সামনে হাজির সপ্তর্ষিমণ্ডলীর সব বিস্ময়কর সৃষ্টি। অপার বিস্ময় আর টানটান উত্তেজনা নিয়ে এমন দৃশ্য দেখতে হলে যেতে হবে দেশের প্রথম প্লানেটোরিয়াম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটারে। আর এমন অভিজ্ঞতায় নিজেকে সমৃদ্ধ করতে হলে সাপ্তাহিক ছুটি বুধবার ও সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটি ছাড়া যে কোন দিন যেতে পারেন। শুক্র ও শনিবার রয়েছে ৫টি শো। সপ্তাহের অন্যান্য দিন ৪টি প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়।
শুক্রবার সকাল ১০টা, ১১-৩০টা ও বিকাল ৩টা ও বিকাল ৫টা ও সন্ধ্যা ৭টায় রয়েছে শো। শনিবার সকাল ১১টা, ১টা, বিকাল ৩টা, বিকাল ৫টা এবং সন্ধ্যা ৭টায় শো প্রদর্শিত হয়। এ ছাড়া রবি, সোম, মঙ্গল বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা, বেলা ১টা, বিকাল ৩টা এবং বিকাল ৫টা। প্লানেটোরিয়াম শো-এর জনপ্রতি টিকিটের মূল্য ৫০ টাকা এবং ক্যাপসুল রাইড সিমুলেটর জনপ্রতি টিকিটের মূল্য ২০ টাকা। যে কোন তথ্যের জন্য যোগাযোগ করতে পারেন এই (৯১৩৮৮৭৮) নম্বরে। যাতায়াত ব্যবস্থা: রাজধানীর বিজয় সরণী মোড় থেকে খেজুর বাগানের দিকে এগুতেই হাতের পাশে পড়বে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার। রাজধানীর অন্যতম ব্যস্ত রাস্তার পাশে হওয়ায় এটি খুঁজে পেতে খুব বেশি অসুবিধে হবে না দর্শনার্থীদের।

সামরিক জাদুঘর

সামরিক বাহিনীর ইতিহাস, ঐতিহ্য, সাফল্য আর উন্নয়নের ক্রমবিকাশ সংরক্ষণ ও প্রচার করার জন্য ১৯৮৭ সালে ঢাকার মিরপুর সেনানিবাসের প্রবেশদ্বারে স্থাপন করা হয় বাংলাদেশ সামরিক জাদুঘর। সামরিক জাদুঘরের গুরুত্ব এবং দর্শকদের চাহিদার কথা বিবেচনা করে সামরিক জাদুঘরটি ১৯৯৮ সালে নগরের গুরুত্বপূর্ণ ও কেন্দ্রস্থল বিজয় সরণিতে স্থাপন করা হয়। মূল জাদুঘর ভবনের দোতলায় রয়েছে ৮টি গ্যালারি। এই জাদুঘরে প্রবেশের জন্য কোন টিকেট লাগে না।
সপ্তাহের পাঁচ দিন শনিবার, রবিবার, সোমবার, মঙ্গলবার ও বৃহস্পতিবার জাদুঘর খোলা থাকে। বুধবার এবং শুক্রবার জাদুঘরটি বন্ধ থাকে। গ্রীষ্মকালে সকাল ১০.৩০ টা থেকে সন্ধ্যা ৬.৩০ টা পর্যন্ত খোলা থাকে। শীতকালে ১০ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত খোলা থাকে। যাতায়াত ব্যবস্থা: রাজধানীর বিজয় সরণী মোড় থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার পার হয়ে খেজুর বাগানের দিকে এগুতেই হাতের পাশে পড়বে সামরিক জাদুঘর । রাজধানীর অন্যতম ব্যস্ত রাস্তার পাশে হওয়ায় এটি খুঁজে পেতে খুব বেশি অসুবিধে হবে না দর্শনার্থীদের।

জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যান(বোটানিক্যাল গার্ডেন)

বাংলাদেশের জাতীয় উদ্যান পরিচিত বোটানিক্যাল গার্ডেন হিসেবে। জাতীয় চিরিয়াখানার পাশেই বোটানিক্যাল গার্ডেন অবস্থিত। এই গার্ডেনে রয়েছে চেনা-অচেনা নানান ধরনের গাছ-গাছালি। ২০৮ একর জায়গার উপর প্রতিষ্ঠিত এই জাতীয় উদ্যানটি। প্রতিদিন শত শত সাধারণ মানুষ, দর্শনার্থী জাতীয় উদ্যান প্রদর্শন করতে আসে। এই বোটানিক্যাল গার্ডেনে রয়েছে ক্যাকটাস হাউস, অর্কিড হাউস। আরো রয়েছে টিস্যু কালচার রিসার্চ সেন্টার।
রয়েছে লিলি পন্ড ও লোটাস পন্ডসহ ছয়টি লেক এবং দুটি নার্সারি। পুরো বাগানের সৌন্দর্য দেখার জন্য দুটি টাওয়ার রয়েছে। এখানে ছোট-বড় লতা গুল্ম মিলিয়ে পাঁচ হাজার ৬০০ প্রজাতির উদ্ভিদ আছে। সপ্তাহের সাত দিনই সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকে। প্রকৃতি প্রেমীদের কাছে খুবই পছন্দনীয় এই স্থানটি। আর তরুন বয়সী প্রেমিক-প্রেমিকাদের সময় কাটানোরও উত্তম স্থান এটি। যাতায়াত ব্যবস্থা : ঢাকার মতিঝিল থেকে মিরপুর-১-এর উদ্দেশে যেকোনো বাসে চলে যেতে পারেন বোটানিক্যাল গার্ডেনে। এছাড়া গাবতলী বাসষ্ট্যান্ড থেকে ছোট লেগুনায় করে সরাসরি বোটানিক্যাল গার্ডেনে যাওয়া যায়।

ঢাকা চিড়িয়াখানা

ঢাকার মিরপুরে স্থাপিত বাংলাদেশের জাতীয় চিড়িয়াখানা। পশু-পাখি সম্পর্কে নিজের ছেলে-মেয়েদের পরিচয় করিয়ে দিতে জাতীয় চিড়িয়াখানার জুড়ি নেই। বর্তমানে ঢাকা চিড়িয়াখানায় ১৯১ প্রজাতির ২১৫০টি প্রাণী রয়েছে। ের মধ্যে বর্তমানে মিরপুর চিড়িয়াখানায় স্তন্যপায়ী ৪৪৭টি, সাপ ও সরিসৃপ ৬১টি, পাখি ৯৯২টি এবং ৭৯৭টি মাছ রয়েছে। এছাড়া চিড়িয়াখানার চত্বরে ১৩ হেক্টরের দুটি লেক আছে।
পুরো চিড়িয়াখানাটি ঘুরে দেখতে একটু সময় ও পরিশ্রম হবে ঠিকই কিন্তু আপন জনদের সাথে বাদাম খেতে খেতে ঘুরে বেড়াতে খুব একটা খারাপ লাগবে না। দেখতে পাবেন বানরের নানা দুষ্টুমি, বাঘের গর্জন, হরিণের ছুতা ছুটি, হাতির পিঠে চড়ে ঘুরে বেড়ানো আরও কতো কি রয়েছে যা আপনাকে মুগ্ধ করবে। যাতায়াত ব্যবস্থা : ঢাকার মতিঝিল থেকে মিরপুর-১-এর উদ্দেশে যেকোনো বাসে চলে যেতে পারেন জাতীয় চিড়িয়াখানায়। এছাড়া গাবতলী বাসষ্ট্যান্ড থেকে ছোট লেগুনায় করে সরাসরি জাতীয় চিড়িয়াখানায় যাওয়া যায়।

শহীদ জিয়া শিশু পার্ক :

কর্মব্যস্ত শহর রাজধানীতে যারা বসবাস করেন তাঁরা খুব সহজেই অবসর বা ছুটির দিনে প্রিয় সন্তানদের নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন ঢাকার প্রাণ কেন্দ্র শাহবাগে অবস্থিত শহীদ জিয়া শিশু পার্কে। স্বল্প সময় ও অল্প খরেচে বিনোদনের জন্য কিছুটা সময় কাটিয়ে আসতে পারেন এই শিশু পার্ক থেকে। ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের উত্তর পাশে গড়ে ওঠা শিশুপার্ক শিশু-কিশোরদের আনন্দের অন্যতম কেন্দ্র। টয় ট্রেন, ফাইটার জেট, মেরি গো রাউন্ড, ফেরিস হুইল স্কেটিং রিংক ছাড়াও এখানে আরও রয়েছে বেশ কিছু চমকপ্রদ রাইড।
শনিবার থেকে বৃহস্পতিবার বেলা ২টা থেকে ৭টা পর্যন্ত খোলা থাকে। তবে রোববার সাপ্তাহিক বন্ধ। শুক্রবার পার্ক খোলা থাকে আড়াইটা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা। পার্কের প্রবেশ ফি ৮ টাকা। প্রতিটি রাইড চড়া যাবে ৬ টাকার টিকিটে। প্রতি সপ্তাহে বুধবার দুস্থ ও গরিব শিশুদের জন্য পার্কে প্রবেশে কোন টিকিট লাগে না এবং একদম ফ্রি'তে চড়তে পারে সবগুলো রাইড। শিশু পার্কের বিভিন্ন প্রয়োজনীয় তথ্য জানা যাবে (৮৬১৯৩৯৬-৯৯) নম্বরে। যাতায়াত ব্যবস্থা: যে কোন জায়গা থেকে সরাসরি চলে আসুন রাজধানী ঢাকার প্রাণ কেন্দ্র শাহবাগে। আর এই শাহবাগের বুকেই অবস্থিত শহীদ জিয়া শিশু পার্ক।