(প্রিয়.কম) ভ্রমণের খরচের একটা বড় অংশজুড়ে থাকে যাতায়াত ভাড়া। আর এই যাতায়াত ভাড়া থেকে আপনাকে মুক্তি দিতে পারে যে বাহনটি তার নাম বাই সাইকেল। বাই সাইকেল নিয়ে আপনি চলে যেতে পারবেন পৃথিবীর প্রায় সব দেশে। কারণ বাই সাইকেলের যেহেতু লাইসেন্স লাগে না তাই এটি নিয়ে সীমান্ত পার হওয়ার জন্যেও কোনো বিশেষ ধরনের অনুমতি দরকার পড়ে না। তাই যারা বাই সাইকেল চালাতে পারেন তারা নিশ্চিন্তে নিজের বাই সাইকেলটিকে করে নিতে পারেন ভ্রমণসঙ্গী।

বাই সাইকেলকে ভ্রমণের সঙ্গী করে বহু দেশ ভ্রমণ করেছেন আল নূর। বাই সাইকেলকে ভ্রমণের সঙ্গী করতে হলে কী কী জিনিস বা সরঞ্জাম সঙ্গে রাখতে হবে সে সম্পর্কে আল নূর যা বলেন তা হলো-

হেলমেট 

এটি যেকোনো বাই সাইকেল আরোহী ও চালকের জন্য অত্যাবশ্যক। বাই সাইকেলের যে কোনো দুর্ঘটনায় যদি আপনি আপনার মাথাকে রক্ষা করতে পারেন তাহলে আপনি অর্ধেক বিপদমুক্ত হয়ে যাবেন। আর এই মাথা বাঁচানোর কাজটি করে থাকে হেলমেট। বাজারে নানা নামের, নানান ধরনের হেলমেট পাওয়া যায়। এগুলো যেমন নানা নামের, নানান ধরনের হয় তেমনি হয়ে থাকে নানান মানেরও।

আল নূর বলেন, এই ক্ষেত্রে টাকা বাঁচানোর চেষ্টা না করাই ভালো। খরচ একটু বেশি হলেও কেনা উচিৎ ভালো মানের হেলমেট। যদি আপনি এমন হেলমেট কেনেন যা কিনা সামান্য হাতের চাপেই ভেঙ্গে যায় তাহলে ভাবুন যে আপনি যখন সারা শরীরের ভাড়ের সঙ্গে দুই থেকে গুণ বেশি ওজনের চাপ তৈরি করে ছিটকে পড়বেন তখন আপনার হেলমেটের কী অবস্থা হবে? বাজারে আপনি ৬৫০ টাকা থেকে শুরু করে ১০ হাজার টাকার হেলমেট পাবেন। এমনকি এর চাইতে বেশি দামেরও হেলমেট অনেকে দেশের বাইরে থেকে আনিয়ে ব্যবহার করেন। 

গ্লাভস

বাই সাইকেলে ভ্রমণের জন্য হাতের গ্লাভস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অনেকেই মনে করেন এটি দুর্ঘটনার সময় হাতকে রক্ষার জন্য কাজে আসে। কিন্তু এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। কারণ গ্লাভস আপনাকে হাত ঘামার কারণে সৃষ্ট দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা করবে। পাশাপাশি হাতে ঠাণ্ডা লাগার হাত থেকেও রক্ষা করবে। ২৫০ টাকা থেকে শুরু করে ৩ হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে আপনি পাবেন বাই সাইকেলের জন্য হ্যান্ড গ্লাভস। 

 
গ্লাভস আপনাকে হাত পিছলে যাওয়া থেকে বাঁচাবে। ছবি: সংগৃহীত

হেড লাইট 

যেখানেই যান না কেনো রাত হয়ে যাওয়া খুবই স্বাভাবিক। আর তখনই অন্ধকারে আপনি পড়বেন নানান বিপত্তিতে। আর এই সকল বিপত্তির হাত থেকে আপনাকে রক্ষা করবে হেডলাইট। একটি ভালো মানের হেডলাইট অন্ধকারে আপনাকে পথ দেখাবে। পাশাপাশি আপনার অবস্থান সম্পর্কে অন্যান্যদের সংকেত প্রদান করবে। যা আপনাকে অনেক নিরাপদে রাখবে। বাজারে আপনি ৫৫০ টাকা থেকে শুরু করে ৩ হাজার টাকার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের হেডলাইট পাবেন। 

এই রকম একটি উজ্জ্বল আলোর হেডলাইট আপনাকে ভ্রমণে এনে দিবে নিরাপত্তা। ছবি: সংগৃহীত

টেল লাইট

বাই সাইকেলেই পেছন দিকে লাইটটি ব্যবহৃত হয় তাকে টেল লাইট বলে। এটার ব্যবহার হয় সাইকেলের নিরাপত্তার জন্য। অন্ধকারে সাইকেল পেছন থেকে দেখা যায় না। অর্থাৎ পেছনে থাকা গাড়িগুলো সাইকেল দেখত পায় না। তাই পেছনে লাইট থাকলে তা আপনার নিরাপত্তার জন্য খুবই কার্যকর হবে। এই লাইটগুলো সাধারণত লাল রঙের আলো দেয়। বাজারে বিভিন্ন দামের টেল লাইট পাওয়া যায়। 

 
টেল লাইটের মাধ্যমে এভাবে আপনার সাইকেলের অবস্থান নিশ্চিত হবে। ছবি: সংগৃহীত  

কেরিয়ার

এটা তো সবারই পরিচিত। সাইকেলের পিছনে থাকে। বছরখানেক আগেও যখন নতুন মডেলের গিয়ারসহ সাইকেল বাজারে আসেনি তখন পর্যন্ত সব সাইকেলের পেছনেই এই কেরিয়ার লাগানো থাকত। কিন্তু এখন আর সেটা থাকে না। কিন্তু ভ্রমণে যেতে চাইলে তা অত্যন্ত জরুরি। এটা না থাকলে আপনাকে আপনার ভ্রমণের সময়ের ভারি ব্যাগগুলো নিজের কাঁধে বহন করতে হবে। এটি একটি দুরুহ কাজ হবে। তাই ভ্রমণে বের হবার আগেই আপনার বাই সাইকেলের পেছনে একটা কেরিয়ার লাগিয়ে নিন। 

লেগব্যান্ড 

নানান রকমের লেগ ব্যান্ড পাওয়া যায়। এর মূল কাজ হলো যারা ফুলপ্যান্ট পরে বাই সাইকেল চালান তাদের প্যান্ট পেঁচিয়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করা। আবার বেশিরভাগ লেগব্যান্ডে আলো পড়লে তা আলোকে প্রতিফলিত করে। যা অন্যান্য চালকদেরকে সাইকেলের অবস্থান জানান দেয়। অনেকে এটি হাতেও পরে থাকে।   

অবস্থান জানাতে অনেকে হাতেই পড়েন এই লেগব্যান্ড। ছবি: সংগৃহীত

এসব জিনিস ছাড়াও প্যাচকিট, পাম্পার, অতিরিক্ত টিউব এসব কিছু সাথে রাখা উচিত। তাহলে আশা করা যায় আপনি সাইকেল নিয়ে ভ্রমণে গিয়ে সাইকেল বিষয়ক কোনো বিড়ম্বনায় পড়বেন না। 

প্রিয় ট্রাভেল/জিনিয়া

প্রিয় ট্রাভেল সম্পর্কে আমাদের লেখা পড়তে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেইজে। যে কোনো তথ্য জানতে মেইল করুন [email protected] এই ঠিকানায়। ভ্রমণ বিষয়ক আপনার যেকোনো লেখা পাঠাতে ক্লিক করুন এই লিংকে - https://www.priyo.com/post।