
চলতি বছরে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীর সংখ্যা ১৩ লাখে পৌঁছাতে পারে
বিশ্ব শরণার্থী দিবস ২০ জুন। প্রতিবছরই ক্যালেন্ডার ধরে দিনটি আসে, চলেও যায়। দিবসটিতে দুনিয়াজুড়ে শরণার্থীদের পক্ষে দাঁড়াতে যুদ্ধ-নির্যাতন বন্ধ করার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে নানা আঙ্গিকে আলোচনা হয়। তারপর যেমন চলার, চলে তেমনই। যুদ্ধ ও তীব্র নির্যাতন ক্রমান্বয়ে শরণার্থী বানাচ্ছে। প্রতিবছরই বিশ্বে শরণার্থীর সংখ্যা বাড়ছে।
বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশেও শরণার্থীর সংখ্যা বাড়ছে। মিয়ানমারে সামরিক নির্যাতনের মুখে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে রোহিঙ্গারা রাখাইন থেকে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশের কক্সবাজারে আশ্রয় নিতে শুরু করে। দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, রোহিঙ্গা শিবিরে প্রতিদিন প্রায় ৯৫টি শিশুর জন্ম হয়। ২০২৫ সালের মধ্যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ১২ থেকে ১৩ লাখ পর্যন্ত হতে পারে। শিবিরে ৫২ থেকে ৫৫ শতাংশ নারী-শিশু রয়েছে। শরণার্থীদের মধ্যে নারী-শিশুদের দুর্ভোগ সবচেয়ে বেশি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারপারসন ও অভিবাসন খাতের বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিসার্চ ইউনিটের (রামরু) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ার ড. তাসনিম আরেফা সিদ্দিকী যুগান্তরকে বলেন, বাংলাদেশে কী পরিমাণ শরণার্থী আছে তার সঠিক কোনো হিসাব নেই। তবে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী চরম যুদ্ধে নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে এসেছে। শুধু রোহিঙ্গা নয়, বিশ্বের সব শরণার্থীর পক্ষে কাজ করতে হবে। এদের উন্নয়নে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা দিতে হবে। শরণার্থীদের জীবনের প্রতিটি ইঞ্চি দুঃখ আর কষ্টে ভরা। যুদ্ধ আর দেশে দেশে সংঘাত, চরম নির্যাতনের ফলে শরণার্থীর সৃষ্টি হয়। বিশ্বে কেবল শান্তি প্রতিষ্ঠিত হলেই এ পৃথিবী থেকে শরণার্থী শব্দটি উঠে যাবে। মানুষ তার পূর্ণ অধিকার নিয়ে বাঁচবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী সমাজ-ইতিহাস, সাহিত্য ও চলচ্চিত্র দেখলেই চোখে পড়বে-বিশ্বযুদ্ধের সময়ের শিশুরা হৃত স্বদেশ ও শৈশবের মূল্য চুকিয়েছে দীর্ঘকাল, এমনকি একাধিক প্রজন্ম ধরে। সেই বিষাদগাথায় হিরোশিমা-নাগাসাকির শিশু যেমন ছিল, তেমন ব্যতিক্রম নয় আজকের ইউক্রেনীয় শিশুরাও। নতুন করে যুদ্ধ চলছে ইরান-ইসরাইলের মধ্যে। সমরাঙ্গনের সমান্তরালেই আরও বড় একটা যুদ্ধ চলছে-অত্যাচার, পাচার, শোষণ, বিভেদের হাত থেকে শিশুদের বাঁচানোর যুদ্ধ; মাথার ওপর একটা ছাদ, থালায় একটু খাবার, স্কুলের শিক্ষা জোগানোর সংগ্রাম।