ভালোবাসাপূর্ণ উষ্ণ এ ছোঁয়াই ডুবিয়ে রাখুক সারাক্ষণ, ছবি কৃতজ্ঞতা: সোহানা

লাভ ডায়েরি: ওরা ভালোবাসার কথাও স্পষ্টভাবে বলেনি কেউ কাউকে...

বুশরা আমিন তুবা
ফিচার লেখক, প্রিয়.কম
প্রকাশিত: ২০ আগস্ট ২০১৭, ২২:২১
আপডেট: ২০ আগস্ট ২০১৭, ২২:২১

(প্রিয়.কম) পাঠকের জন্যপাঠকেরই ভালোবাসার কাহিনী নিয়ে শুরু হলো "প্রিয় লাভ ডায়রি"। মিষ্টি একটা প্রেম বা বিয়ের গল্প সবার জীবনেই থাকে। আপনারও কি আছে এমনই একটি দুষ্টু-মিষ্টি ভালোবাসার কাহিনীতাহলে দারুণ কিছু ছবি সহ যোগাযোগ করতে পারেন আমাদের সাথে। আপনার ভালোবাসার সেই মিষ্টি কাহিনী ছাপা হবে প্রিয়.কমের পাতায়জানবে সারা বিশ্ব। নিজের ভালোবাসার কথা সকলকে জানাতে চাইলে ছবি সহ যোগাযোগ করুন আমাদের ফেসবুক পেজের ইনবক্সে। 

প্রেম মানুষের জীবনে এক আশীর্বাদের মতন। এমন এক আশীর্বাদ যা মুহুর্তের মধ্যেই জীবনকে বদলে দেয়। অপরিসীম এক ভালোলাগার ছোঁয়ায় চারপাশ রাঙিয়ে দেয়। কিন্তু আজকাল খাঁটি ও নিখাদ প্রেম যেন বড় একটা দেখাই যায়না! সেখানে জায়গা করে নিয়েছে হিংসা, ছলনা ও হৃদয়ের ভাঙন। ভালোবাসার মানুষগুলোর মধ্যে কোথায় যেন একটা তাল কেটে গিয়েছে। কাঁচের এক দেয়াল মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে তাদের মাঝে। তারপরেও, এতোসব নেতিবাচকতার মধ্যে অল্প হলেও ইতিবাচকতা তো থাকেই। তেমনই এক জুটি সোহানা ও সফেনের গল্প নিয়ে আজ আমাদের এ আয়োজন। 

আমি তোমার সঙ্গে বেঁধেছি আমার প্রাণ সুরের বাঁধনে, ছবি কৃতজ্ঞতা: সোহানা 

সোহানা ও সফেনের পরিচয় ছোটবেলা থেকেই। সোহানার স্কুল বন্ধুর কাজিন ছিলো সফেন। দেখা হলে প্রায়ই তাদের মধ্যে কথা-বার্তা হতো। কিন্তু ওই পর্যন্তই। জীবন তার আপন নিয়মেই কেটে যাচ্ছিলো। ইতোমধ্যে সোহানা কলেজ শেষ করে ভার্সিটিতে ভর্তি হয়। প্রথম প্রথম ওর সময়গুলো খুব খারাপ যেতো। বিভিন্ন রকমের ঝামেলা ওকে একাই সামাল দিতে হতো। মনটা ছিলো বড্ড ভবঘুরে। কোন একটা নতুন জায়গার সন্ধান পেলেই হলো,  যাওয়া লাগবেই সেখানে। কিন্তু কার সাথেই বা যাবে মেয়েটি? বন্ধুদের তো খুব একটা সময় হতোনা। যে যার মতন ব্যস্ত।

সেদিন দুজনে দুলেছিনু বনে ফুলডোরে বাঁধা ঝুলনা, ছবি কৃতজ্ঞতা: সোহানা। 

এর মধ্যে ফেবুতে কথা হতো দু'জনের। সফেনের তখন পড়াশোনা প্রায় শেষ। তার আবার ঘোরাঘুরির প্রচন্ড নেশা এবং সেই সাথে ছবি তুলতেও ভীষণ পছন্দ করে সে। শেষমেষ সোহানা একদিন খুব সুন্দর একটা জায়গার ছবি দেখে সফেনকে মেসেজ দিলো এবং সেখানে যাওয়ার ইচ্ছাটা প্রকাশ করলো। সাথে কিছু বন্ধুবান্ধব ও যাওয়ার জন্য রাজি হলো। সোহানা-সফেনের ঘোরাঘুরির শুরু সোনারগাঁও পানাম সিটিতে। ছেলেটির ছিলো ছবি তোলার শখ এবং মেয়েটির ঘোরাঘুরির। দুটো মন বুঝি এভাবেই মিলে গেলো!

হয়নি বলা কোন কথা, শুধু হয়েছে অনুভূতি। ছবি কৃতজ্ঞতা: সোহানা 

দুজনার পরিচয় তো ছিলোই। এবার ধীরে ধীরে বন্ধুত্ব গড়ে উঠা শুরু করলো। তারা একে অপরের সমস্যাগুলো খুব সুস্থ ও সুন্দরমতন ভাগাভাগি করা শুরু করলো। তবে সর্বাগ্রে ছিলো 'একে অপরের স্বাধীনতা'। তাদের কথা ছিলো একটাই, 'এখন আমরা পরিণত বয়সের তাই একে অপরকে ছোট করা, বিশ্বাস ভাঙ্গা বা কষ্ট দেয়ার মতো কিছু করা আমাদের মানায় না'। সোহানা-সফেন দুজনেরই চিন্তা ছিলো ভবিষ্যত নিয়ে। সময়ের কাঁটা গড়াতে গড়াতে এক বছর পার হয়ে গেলো। সফেন চাকরীজীবনে প্রবেশ করলো। দিন-রাত প্রচণ্ড পরিশ্রম করতো স্বপ্নগুলো পূরণ করার জন্য। এতো কষ্টের মধ্যেও তাদের দেখাসাক্ষাত হতো ঠিকই।

এই পথ যদি না শেষ হয়... ছবি কৃতজ্ঞতা: সোহানা 

বন্ধু হিসেবে তারা দুজন এতোটাই মিশে গিয়েছিলো যে মনের কথা খুলে বলার প্রয়োজন হতোনা। একে অপরকে দারুণভাবে বুঝে নিতে পারতো। তাই হয়তো এ জুটি ভালোবাসার কথাও স্পষ্টভাবে বলেনি কেউ কাউকে। কিছুদিনের মধ্যে সোহানা-সফেন দুজনেই যার যার পরিবারের সদস্যকে জানায় সম্পর্কের কথা এখন ভাগ্যক্রমে তারাও বেশ সহজভাবে নেন ব্যাপারটি।

এভাবেই সময় কেটে যাচ্ছে। দু'জন-দু'জনকে এখনো বুঝতে চেষ্টা করছে ও জানছে। সম্পর্ক দৃঢ় হচ্ছে দিনের পর দিন। এখনও বিয়ে করেন নি তাঁরা, তবে সবকিছু ঠিক থাকলে অচিরেই হয়তো শুনতে পাওয়া যাবে বিয়ের সানাই। প্রিয়.কমের পক্ষ থেকে শুভকামনা থাকবে এ জুটির জন্য।

সম্পাদনা: রুমানা বৈশাখী