
ভালোবাসার শুরুটা হয়েছে বিয়েরও অনেক পরে! ছবি কৃতজ্ঞতা: তানজিনা আফরোজ মীম
প্রিয় লাভ ডায়রি: যে ভালোবাসায় হার মেনে যায় সব দুরত্ব...
আপডেট: ২৫ আগস্ট ২০১৭, ২১:০২
(প্রিয়.কম) পাঠকের জন্য, পাঠকেরই ভালোবাসার কাহিনী নিয়ে শুরু হলো "প্রিয় লাভ ডায়রি"। মিষ্টি একটা প্রেম বা বিয়ের গল্প সবার জীবনেই থাকে। আপনারও কি আছে এমনই একটি দুষ্টু-মিষ্টি ভালোবাসার কাহিনী? তাহলে দারুণ কিছু ছবি সহ যোগাযোগ করতে পারেন আমাদের সাথে। আপনার ভালোবাসার সেই মিষ্টি কাহিনী ছাপা হবে প্রিয়.কমের পাতায়, জানবে সারা বিশ্ব। নিজের ভালোবাসার কথা সকলকে জানাতে চাইলে ছবি সহ যোগাযোগ করুন আমাদের ফেসবুক পেজের ইনবক্সে। পেজ লিঙ্ক-https://www.facebook.com/priyolife
ভালোবাসার গল্প বলতেই আমরা বুঝি ভালোলাগা, ভালোবাসা, কম-বেশি কিছুটা সময় প্রেমের পর একটা ঝলমলে ভালবাসার গল্প। বিয়ের পরের গল্পটা কেমন? পরিবার থেকে অ্যারেঞ্জ করে যাদের বিয়ে হয়, তাদের বুঝি ভালোবাসা নেই জীবনে? আছে অবশ্যই। আর তাই আজকের লাভ ডায়েরি একটি অ্যারেঞ্জড ম্যারেজকে ঘিরে, যেখানে ভালোবাসার শুরুটা হয়েছে বিয়েরও অনেক পরে!
আজকের গল্পের নায়িকা হলেন তানজিনা আফরোজ মীম। আর সময়টা হলো ২০১২ সাল। তখন তিনি বয়সে ছিলেন খুবই ছোট, মাত্র দশম শ্রেণীতে পড়ছিলেন। এই বয়সে বিয়ে তো দুরের কথা, ভালোবাসার কথাও মাথায় আসেনি তার কখনো।
এই সময়েই দৃশ্যপট পরিবর্তন, তার জীবনে আগমন রাকিবুল ইসলামের। মীমের মায়ের প্রিয় বান্ধবী ছিলেন রাকিবুল ইসলামের খালা, তাই মেয়ে দেখার সময়ে প্রথমেই তার খোঁজ নেওয়া হয়। কিন্তু বয়স অনেক কম থাকায় পরপর দুই বার তাতে না করে দেন মীমের পরিবার। অবশেষে বিয়েটা হয় ঠিকই, মীম কিছু বুঝে ওঠার আগেই। বিয়ের দুদিন আগে তারা হঠাৎ মেয়ে দেখতে আসেন, সে সময়ে রাকিবকে প্রথম এক পলক দেখেন মীম।
খারাপ লাগেনি মানুষটিকে। কিন্তু বিয়ে ব্যাপারটাই তার কাছে অনেক নতুন। সবার ওপরে খুব রাগ হচ্ছিলো মীমের। দুজনের বয়স অল্প হবার কারণে প্রথম প্রথম রাকিবকে একেবারেই পাত্তা দিতেন না মীম। ঠিকমতো কথা বলতেন না, ভালো করে তাকিয়ে দেখেন না, এমনকি বকাঝকা করতেও ছাড়েন না!
এমন করলে অনেক মানুষই হয়তো বিরক্ত হয়ে যেত স্ত্রীর ওপরে, পাল্টা দুর্ব্যবহার করতো। কিন্তু রাকিব তা করেননি। কোনোদিন খারাপ ব্যবহার তো দুরের কথা, স্ত্রীকে দিয়েছেন অসীম ধৈর্যের পরিচয়, পাশে থেকেছেন বন্ধুর মতো।
তখনো মীম বুঝে উঠতে পারেননি ভালোবাসা শেকড় ছড়াচ্ছে তার হৃদয়ে।বিয়ের ৫ মাসের মাথায় রাকিব ইটালি চলে গেলেন চাকরির জন্য। তখনই মীম টের পান, ভীষণ ভালোবেসে ফেলেছেন নিপাট এই ভদ্রলোকটিকে। বিয়ের আগে কখনো ভালোবাসা বুঝেই উঠতে পারেননি, কাউকে ভালোলাগেনি, ছিলেন অনেকটা যন্ত্রের মতো। কখনো ভাবেননি তাকে কেউ ভালোবাসবে। তাকে একটু একটু করে ভালোবাসায় ডুবিয়ে ভালোবাসতে শিখিয়েছেন এই মানুষটিই।
বিয়ের পর ৫ বছর ভীষণ কষ্টে ছিলেন তারা। কারণ রাকিব ছিলেন ইটালিতে আর মীম বাংলাদেশে। ভালোবাসার মানুষটির থেকে এতটা সময় দূরে থাকার যন্ত্রণা বলে বোঝানো যায় না। ভালোবাসার পুরোটাই ছিল ফোন নির্ভর। কিন্তু দুরত্ব আর সময় তার ভালোবাসাকে ম্লান করেনি, করেছে আরও গাড়। এখন মীম ইটালিতে, সাজাচ্ছেন নিজের ছোট্ট সংসারটি।
টোনাটুনির ছোট্ট সংসার সাজাতে গিয়ে মীম বুঝেছেন, ভালো প্রেমিক ও ভালো বন্ধু হিসেবে স্বামীকে পেয়ে কতটা ভাগ্যবতী তিনি। তাই তিনিও সর্বশক্তি দিয়ে চেষ্টা করে মানুষটিকে খুশি রাখার। তার সংসারে কোনো অভিযোগের সুযোগই আসে না! অ্যারেঞ্জড ম্যারেজকে যারা ভাবে লাভ ম্যারেজের তুলনায় কম বর্ণীল, তাদের ভুল প্রমাণ করে দেয় মীম ও রাকিবের এই ভালোবাসা।
সম্পাদনা : রুমানা বৈশাখী