
ঈদে মুক্তিপ্রাপ্ত তিনটি সিনেমা। ছবি: সংগৃহীত।
কেমন হলো ঈদের ছবি?
আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৪:০৪
(প্রিয়.কম) এবারের ঈদে তিনটি ছবি মুক্তি পেয়েছে-রংবাজ, অহংকার ও সোনাবন্ধু। ঈদের প্রথম তিনদিন তিনটি ছবি দেখে লিখেছেন চিত্রনাট্যকার, উপস্থাপক, মাছরাঙা টেলিভিশনের ক্রিয়েটিভ ইন-চার্জ রুম্মান রশীদ খান।
অহংকার: পুকুর চুরি চলনসই
পরিচালক: শাহাদাত হোসেন লিটন
অভিনয়ে: শাকিব খান, বুবলী, তমা মির্জা, নূতন, সাদেক বাচ্চু, আফজাল শরীফ, চিকন আলী, গুলশান আরা
রেটিং: ২/ ৫
শুরুতেই স্বীকার করে নেই, ট্রেলার ও পোস্টার দেখবার পর অহংকার নিয়ে তেমন কোনো প্রত্যাশা ছিলনা। তারপরও যেহেতু সমালোচনা লিখবার দায়িত্ব পড়েছে, তাই প্রতিটি প্রেক্ষাগৃহে প্রবেশ করবার আগে শপথ নিয়েছিলাম, যা দেখবো নিরপেক্ষভাবে দেখবো। যা লিখবো, সত্য ছাড়া মিথ্যা লিখবো না। ঈদের দিন অহংকার দেখা শুরু করলাম সেই প্রতিজ্ঞা বুকে নিয়ে। পরিচালক শাহাদাত হোসেন লিটন বেশ কিছু হিট ছবি উপহার দিয়েছেন অতীতে। এবার শাকিব খান-বুবলী জুটি নিয়ে তিনি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন; আশা ছিল চমৎকার একটি ঈদের ছবি পাবো তাদের কাছ থেকে। কিন্তু হায়! ছবি শুরু হবার পাঁচ মিনিট পরেই বুঝে গেলাম, অহংকার-এর কাহিনি। কারণ আমি তখন শাকিব খানের চরিত্রে দেখছিলাম দক্ষিণ ভারতের অভিনেতা উপেন্দ্রকে। আর বুবলীর চরিত্রে দেখছিলাম শিল্পা শেঠিকে। ২০০৫ সালে মুক্তি পাওয়া দক্ষিণ ভারতের কান্নাড়া ছবি অটো শঙ্কর-এর কাট-কপি-পেস্ট হলো অহংকার। মূল ছবিটির পরবর্তীতে রিমেকও হয়েছিল তামিল (আনাভাকরি), হিন্দি (শিল্পা-দ্য বিগ ডন) এবং মালয়ালাম (সারাপ্পা সুন্দারী) ভাষায়ও। তবে অহংকার অফিসিয়াল রিমেক নয়, পুকুর চুরি। এ ছবি নিয়ে কিভাবে নির্মাতারা অহংকার করেছেন, বোধগম্য নয়।
অবশ্য নকল ছবি যদি সুনির্মিত হয়, আমি প্রায়ই অভিযোগ তুলে নেই। অহংকার-এর ক্ষেত্রেও দর্শক হিসেবে সে চেষ্টাই করছিলাম। খুঁজে বের করছিলাম, এ ছবির প্লাস পয়ন্টে কি। এ ছবির প্লাস আছে- যেমন: নকল হলেও মেহনতি মানুষরা, চলচ্চিত্রের নিয়মিত দর্শকরা, শাকিব খানের ভক্তরা এ ছবি দেখে বিনোদনই পাবেন। কারণ এ ছবিতে একটি গল্প আছে। ভারতীয় ছবির বাংলা করতে গিয়ে অবশ্য সংলাপ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই খেই হারিয়েছে, তবে এ ছবির প্রাণ হলো শিল্পীদের অভিনয়। শাকিব খানের চরিত্রটি যদিও অনেকের কাছে অবিশ্বাস্য ঠেকেছে, যেমনটি অবিশ্বাস্য মনে হয়েছে চড়া মেকআপে প্রতিদিন তমা মির্জার ফলের দোকানে বসে ফল বিক্রি করার বিষয়টি। তবে আমি বুঝে নিয়েছি, পরিচালকের হাত-পা বাঁধা। ভারতের মূল ছবিতেও যে পার্শ্ব-নায়িকা এভাবেই ফলের দোকানে বসেছিলেন! তমা মির্জা’র এন্ট্রি গান ‘তুই যে আমার সুপার হিরো’ মজা লেগেছে। বিশেষ করে তমা’র শিস আর দর্শকের শিস প্রেক্ষাগৃহে মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়েছিল। তমা মির্জার মেক-আপ অনেক ক্ষেত্রে খুব চোখে লেগেছে, তবে তিনি তার চরিত্রে যথেষ্ট সুঅভিনয় করার চেষ্টা করেছেন। যদিও তার চরিত্রটি দুর্বল হওয়ায় সব চেষ্টা বিফলে গিয়েছে। ছবি দেখা শেষ করে মনে হয়েছে, এ ছবিতে তমার চরিত্রটি না থাকলেও কাহিনিতে সমস্যা হতো না। শাকিব খান অহংকার ছবির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তার চরিত্রে ছিলেন। ‘সুপারস্টার’ সুলভ বাহুল্যতা ছিলনা তার মধ্যে। এমনকি কিছু দৃশ্যে নন গ্ল্যামারাসও থেকেছেন। শুধু একটাই অভিযোগ-‘তুই যে আমার এই অন্তরে’ গানে দক্ষিণ ভারতের নায়কের মত তিনি কানে সেইফটিপিন না পড়লেও পারতেন। ২০১৭ সালের স্টাইল নয় এটি। বেশ দৃষ্টিকটু লেগেছে। তবে শাকিব খানকেও যিনি এ ছবিতে ছাপিয়ে গেছেন, তিনি বুবলী। অহংকার বুবলী’র তিন নম্বর ছবি। আর ক্যারিয়ারের তৃতীয় ছবিতেই এতটা নেগেটিভ একটি চরিত্রে অভিনয় করার সাহস এবং দক্ষতা অনেক নায়িকাই দেখাতে পারতেন না। বুবলী দেখিয়েছেন। এর আগে বসগিরি এবং শ্যুটার ছবিতে বুবলী খুব একটা মুগ্ধ করতে পারেননি। তবে অহংকার-এ আমি বুবলী’র ধূসর চরিত্রে বিশ্বাসযোগ্য অভিনয় দেখেছি, শুদ্ধ-সুন্দর বাচনভঙ্গি, ভয়েস মড্যুলেশন, নাচ, কস্টিউম, মেকআপ-সবই পেয়েছি। এই চরিত্রে বুবলী চাইলেই এ কালের অনেক দেহসর্বস্ব নায়িকার মত অশালীন হতে পারতেন। তবে বুবলী তা হননি। তিনি বেশ সাবলীলভাবে শাকিব খানের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অভিনয় করে গেছেন। চিত্রনায়িকা নূতন এ ছবিতে ‘আম্মাজান’ চরিত্রে অভিনয় করেছেন। তিনি তার চরিত্রে বিশ্বাসযোগ্যতার পরিচয় দিয়েছেন ঠিক, তবে সব ছবিতেই ‘ওভার দ্য টপ’ অভিনয় করতে করতে তিনি একঘেয়ে হয়ে গিয়েছেন। সাদেক বাচ্চু, আফজাল শরীফ, চিকন আলী, গুলশান আরা’দেরও ব্যবহার করতে পারেননি পরিচালক।
গানের ক্ষেত্রে আগেই বলেছি ‘তুই যে আমার সুপার হিরো’ মজা লেগেছে। ছবির শিরোনাম গানও কাহিনির সঙ্গে মানানসই। তবে ‘তুই যে আমার এই অন্তরে’ গানটির আগে কাহিনিতে আরেকটি দৃশ্য প্রয়োজন ছিল। হুট করেই গানটি শুরু হয়ে যাওয়ায় দর্শকের কাছে কোনো উত্তাপ ছড়াতে পারেনি। ‘বুকের ভেতর’ গানটি অহংকার-এর ব্যাপ্তিই বাড়িয়েছে। এ গানটি না থাকলেও সমস্যা হতো না। সম্পাদনা এ ক্ষেত্রে সন্তুষ্ট করতে পারেনি। শিল্প নির্দেশনাও ব্যর্থ হয়েছে। চিত্রগ্রহণ চলনসই। আবহ সংগীত ভালো। ২০০৫ সালের ভারতীয় ছবির নকল নির্মাণ করতে গিয়ে ২০১৭ সালে পরিচালক শাহাদাত হোসেন লিটন আরেকটু আধুনিক নির্মাণ করতে পারতেন। মূল ছবির অযৌক্তিক বিষয়গুলো শুধরে নিতে পারতেন। যেমন: যখন তখন অটোরিকশা চালকদের সবাইকে একসঙ্গে ডাকলেই পাওয়া যায়। দিন নেই, রাত নেই-তারা সবসময়ই কাজ ফেলে একসঙ্গে থাকেন। এ বিষয়টি চোখে লেগেছে। তবে আশার কথা হলো, ভারতীয় ছবিগুলো না দেখে থাকলে এবং যুক্তি-তর্ক বাড়িতে রেখে আসলে অহংকার দর্শকের মন্দ লাগবে না। অবশ্যই শিকারী, রাজনীতি, নবাব-এর চেয়ে পিছিয়ে থাকবে অহংকার। তবে বুবলীর অভিনয়, অজয় কুমার-বি এল ভেনু’র গল্প-সব মিলিয়ে অহংকার’কে পুরোপুরি তিরস্কার করা যায়না। এক বাক্যে বললে-‘অহংকার’ চলনসই!
রংবাজ: পুরোটাই ছন্দপতন
পরিচালক: আব্দুল মান্নান
অভিনয়ে: শাকিব খান, বুবলী, নূতন, সাদেক বাচ্চু, কাজী হায়াত, অমিত হাসান, শিবা শানু লিয়ানা লিয়া, চিকন আলী
রেটিং: ১.৫/ ৫
অহংকার নিয়ে যেমন আমার কোনো প্রত্যাশাই ছিলনা, রংবাজ নিয়ে প্রত্যাশা ছিল উল্টো। রোজার ঈদের আগে থেকেই অপেক্ষা করছিলাম, কবে রংবাজ দেখবো? কারণ এ ছবিটি মুক্তির আগেই নানাবিধ কারণে বেশ আলোচিত ছিল। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত বেশ ক’টি ছবি এর আগে আমাকে মুগ্ধ করতে পারায় রংবাজ নিয়ে প্রত্যাশার পারদও বেশি ছিল। যদিও রংবাজ দেখবার আগে কিছু সংশয় এবং অভিযোগও ছিল মনে। শুরুতেই ছবির নাম নিয়ে ছিল অভিযোগ। সদ্য প্রয়াত নায়ক রাজ রাজ্জাক রংবাজ নামে ছবি করেছেন। বাংলাদেশের ওমরসানি থেকে ভারতে মিঠুন চক্রবর্তী, এমনকি ২০১৩ সালে দেব-ও রংবাজ হয়েছেন। একাধিকবার একই নামের চলচ্চিত্র নির্মাণ অপরাধ নয়, তবে অতি সম্প্রতিই যেহেতু পাশের দেশেরই একটি বাংলা ছবিতে রংবাজ হয়েছে, এ নামটি পরিবর্তন করে অন্য কোনো নাম রাখা যেতে পারতো। বলিউডের সালমান খানকে সবাই ‘সাল্লু ভাই’ বলেন। তাই বলে এ ছবিতেও শাকিব খানের নাম ‘সাল্লু ভাই’ রাখতে হবে? শুধু নামই নয়, গোটা রংবাজ চলচ্চিত্র নিয়ে বেশ কিছু সংশয়ও ছিল। আমরা জেনেছি ছবিটি যৌথভাবে বাংলাদেশের মেসার্স রূপরঙ চলচ্চিত্রের সঙ্গে ভারতের শীর্ষস্থানীয় প্রযোজনা সংস্থা শ্রী ভেঙ্কটশ ফিল্মস প্রযোজনা করেছে। তবে ছবির ট্রেলার কিংবা মূল চলচ্চিত্রেও ভেঙ্কটশ-এর কোনো লোগো খুঁজে পেলাম না। এর আগে ভারতের এসকে মুভিজ কিংবা জীতজ্ ফিল্মওয়ার্কস’দের দেখেছি ইউটিউব, ফেসবুক, টুইটারে যৌথ প্রযোজনার ছবির প্রচারণা করতে। কিন্তু রংবাজ নিয়ে ভেঙ্কটশ-এর একটি পোস্টও দেখিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এর কারণ কি? তাছাড়া ছবির বেশ কিছু পোস্টারে (সব পোস্টারে নয়) লেখা শাকিব খানের রংবাজ। পরিচালক আব্দুল মান্নানের নামও নেই। এর কারণ কি? তারপরও স্টার সিনেপ্লেক্সে ঈদের পরদিন প্রবেশের আগে মাল্টিপ্লেক্সের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টরকে এই আশাবাদ ব্যক্ত করলাম, গতকাল নকল কাহিনির অহংকার মন ভরাতে পারেনি। তবে রংবাজ হয়তো ভালো হবে। যদিও পাশে দাঁড়িয়ে থাকা স্ত্রী, কাজিন বোকার মত জিজ্ঞাসা করছিল, রংবাজ কি অহংকার-এর সিকুয়েল? কারণ এ ছবিতেও তো শাকিব খান, বুবলী, নূতন, সাদেক বাচ্চু, চিকন আলীরা আছেন!
নাহ, রংবাজ, অহংকার-এর সিকুয়েল নয়। যদিও অবিশ্বাস্য শোনালেও সত্যি, অহংকার-এর মত এ ছবিতেও চিত্রনায়িকা নূতনের চরিত্রের নাম ‘আম্মাজান’। ছবির প্রথম দৃশ্যে তার মারকুটে এন্ট্রি মজাই লাগছিল। আরো মজা লেগেছে শিরোনাম গানের মাধ্যমে ‘রংবাজ’ শাকিব খানের এন্ট্রি। গানের সঙ্গে আমি রীতিমত নাচছিলাম আর শিস বাজাচ্ছিলাম। শাকিব খানের অসাধারণ নাচ দেখে সম্পূর্ণ বিনোদন নিংড়ে নেবার চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু সুখের সময় যে বড় অল্প- কে জানতো? কাহিনিতে বুবলী এন্ট্রি নেবার পর থেকেই বুঝে গেলাম-এ তো বুবলী নয়, ঐশ্বরিয়া রাই! শাকিব খান হলেন সঞ্জয় দত্ত! আর কাজী হায়াত অমিতাভ বচ্চনের বেশ ধরে আছেন! খোলাসা করেই বলি-২০০২ সালে মুক্তি পাওয়া ডেভিড ধাওয়ানের হিন্দি ছবি হাম কিসিসে কাম নেহি, যে ছবিটি পরবর্তীতে কান্নাড়া ভাষায়ও অফিসিয়ালি ধান ধানা ধান নামে নির্মিত হয়েছিল, সে ছবির বাংলা নকল সংস্করণ হলো ‘রংবাজ’। যদিও মূল ছবিতে অমিতাভ বচ্চনের বোন ছিলেন ঐশ্বরিয়া রাই, আর এ ছবিতে কাজী হায়াতের মেয়ে বুবলী। কাহিনিতেও অনেক সংযোজন-বিয়োজন হয়েছে। তবে বেশ কয়েকটি দৃশ্য অন্ধের মত নকল করেছেন চিত্রনাট্যকার। বানিজ্যিক মসলা ছবি আমি দেখতে ভালোবাসি। তবে ‘না উড়াইয়া না নাচাইয়া না কাপাইয়া, অনলি ফাটাইয়া’ এ ধরনের সংলাপ আমি কেন, কোনো দর্শকের মাঝেই উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারেনি। ছবি সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকেই শুনেছিলাম, এ ছবিটি নাকি শিশুদেরও অনেক বিনোদন দেবে। কিন্তু নাটকীর পো, মান্দার পো, জাউড়ার পো-এ ধরনের সংলাপের বারংবার ব্যবহার শিশুদের কোন ধরনের বিনোদন দিয়েছে, আমি নিশ্চিত নই। বাদ দিলাম শিশুদের কথা, আমরা কিশোর কিংবা তরুণদের কি শেখাচ্ছি? ঢাকাইয়া ভাষায় তো অতীতেও অনেক নাটক-চলচ্চিত্র দেখেছি। বিনোদনের নামে ছবি জুড়ে গালিগালাজ কত ভাগ দর্শককে আনন্দ দিতে পেরেছে, আমি সন্দিহান। তাছাড়া গণহারে প্রায় সবাইকে ঢাকাইয়া ভাষা বলতে হবে কেন? দু-একজন তো ভাঙা ভাঙা উচ্চারণে ঢাকাইয়া ভাষা রপ্ত করতে গিয়ে দর্শকদের বিরক্তির কারণ হয়েছেন।
হাম কিসিসে কাম নেহি’র খিচুড়ি বানাতে গিয়ে চিত্রনাট্যকার ও নির্মাতারা ভেবেছিলেন, দর্শকদের যা দেখানো হবে দর্শক তাই মেনে নেবেন। বাস্তবতা হলো, একজন সাধারণ দর্শকও ছবির অযৌক্তিক বিষয়গুলো মেনে নেননি। কাজী হায়াত তো শাকিব খানকে বলেছিলেন তার মেয়েকে বাঁচাবার জন্য। শাকিব খান অমিত হাসানের সামনে গিয়ে কি করে বলেন, আমার জানকে ছেড়ে দে! শাকিব খান কি করে জানলেন গাড়ির ভেতর তার জান বুবলী আছেন? নূতন ২৫ বছর আগে তার স্বামী হত্যার প্রতিশোধ নেবার জন্য শাকিব খানকে ছোটবেলা থেকে রংবাজ হিসেবে তৈরি করেন। নূতন জানতেন তার স্বামীর হত্যাকারীর নাম। তারপরও কেন ২৫ বছর শাকিব খানকে হত্যাকারীর নাম বলেননি? যদি নামটি জানাতেন, শাকিব খান অনেক আগেই তো প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে বাবা হত্যার প্রতিশোধ নিতে পারতেন। নূতনকে কেন ছবির ক্লাইমেক্সে এসে হত্যাকারীর নাম জানাতে হলো? আরেকজন খল চরিত্র (সঙ্গত কারণেই নামটি জানাচ্ছি না) ২৫ বছর আগেই শাকিব খানের বাবাকে হত্যা করেন। তিনি ২৫ বছর কিসের আশায় শাকিব খানদের পরিবারের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন? কাজী হায়াত অপারেশন থিয়েটারে জরুরী অপারেশন করছেন। ঠিক ঐ মুহূর্তে তার দিকে পিস্তল তাক করে বাইরে এনে শাকিব খানের প্রেমের গল্প বলাটা অসংবেদনশীলতা পরিচয় দিয়েছে। মুন্নাভাই এমবিবিএস কিংবা হাম কিসিসে কাম নেহি ছবিতে এ ধরনের দৃশ্যগুলো সংবেদনশীল ভাবেই উপস্থাপন করা হয়েছিল, যার ঘাটতি রয়েছে আমাদের রংবাজ-এ। বিশেষ করে ছবির শেষ দৃশ্যে অমিত হাসান ছাদ থেকে পড়ে যাবার সঙ্গে সঙ্গে বুবলী ঢাকাইয়া ভাষায় কথা বলে শাকিব খানের সঙ্গে কমেডি করেন। একটা মানুষ (সে মন্দ মানুষই হোক) মারা যাবার সাথে সাথে নায়ক-নায়িকা কি করে হাসি-তামাশা, মশকরা করেন? বুবলীর সামনে শাকিব খানের নাচের পরীক্ষা দেবার দৃশ্যটিতে আমি আরো ‘ফায়ারওয়ার্কস’ আশা করেছিলাম। দুজনের নাচ দেখে মন্ত্রমুগ্ধ হতে চেয়েছিলাম। কিন্তু খুব সাদামাটা নাচ দেখে হতাশ হয়েছি। যদিও বুবলীকে প্রথম দেখার পর থেকে শাকিব খানের বুবলী-হ্যংওভার দৃশ্যগুলোতে শাকিবরে অভিনয় দর্শকদের আনন্দ দিয়েছে। বুবলীকে বাঁচানোর গুরুদায়িত্ব নিয়ে শাকিব খানের রেললাইনের মাঝ দিয়ে যাবার দৃশ্যটি ছিল অসাধারণ। ছবিতে একজন প্রভাবশালী ব্যক্তির নাম ব্যবহার করে খুব সম্ভবত সেন্সরের আপত্তির মুখে পড়েছিলেন নির্মাতা। যে কারণে ছবিতে প্রায় ১০-১৫ বার তার নামের পরিবর্তে বিপ টোন ব্যবহার করতে হয়েছে। বিরক্তিকর অভিজ্ঞতা হয়েছে দর্শকদের। এমনকি ছবি জুড়ে ‘ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর’ সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তিতেও ধূমপানকে ‘ধুমপান’ লেখা হয়েছে। এ বিষয়টিও আপত্তিকর।
তবে রংবাজ-এর ভালো দিকও আছে। ‘ঘুম আমার’ গানটি বাংলাদেশের সংগীত পরিচালক আলী আকরাম শুভ সৃষ্টি করেছেন বলে লেখা হয়েছে। যদিও আলী আকরাম শুভ’র সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে আমি কথা বলে জেনেছি, তিনি এ ছবির আবহ সংগীত করেছেন মাত্র। কোনো গানের সুর করেননি। ছবির শুরুতে গীতিকার হিসেবে ওয়ার্নিং, বসগিরি ছবির প্রযোজক টপি খানের নামও দেখেছি। তিনি কবে থেকে গান লেখা শুরু করেছেন এবং সত্যিই এ ছবির গান লিখেছেন কিনা, আমি নিশ্চিত নই। তারপরও ঘুম আমার গানটি এবং শিরোনাম গান, রিমঝিম, তুই চাঁদ ঈদের-প্রতিটি গানই শুনতে ও দেখতে চমৎকার লেগেছে। শাকিব খান বরাবরের মতই নেচেছেন ভালো। তবে রিমঝিম গানটির ছবিতে সংযুক্তি হুট করেই হয়েছে। তাছাড়া কোনো গানেই বাংলাদেশের কোনো শিল্পীর উপস্থিতি নেই-এ বিষয়টি পীড়াদায়ক। ছবির আবহ সংগীত বেশ ভালো হয়েছে। কালার গ্রেডিং এবং রাজু রাজের ক্যামেরার কাজ অসাধারণ লেগেছে। লোকেশনের ভিন্নতা ছিল। পাবনার সুন্দর সুন্দর জায়গা, বিশেষ করে পাবনার একটি রিসোর্টের পূর্ণ ব্যবহার করেছেন নির্মাতা। গানে সুইজারল্যন্ড কিংবা ইতালির দৃশ্যগুলোও দর্শক চোখের পলক না ফেলে উপভোগ করেছেন।
অমিত হাসান রবীন্দ্রপ্রেমী চরিত্রে অভিনয় করেছেন। কিন্তু না তাকে কোনো দৃশ্যে রাবিন্দ্রিক সাজে পাওয়া গেছে, না কখনো তাকে রবীন্দ্রসংগীত শুনতে দেখা গেছে কিংবা রবীন্দ্রসাহিত্য পড়তে দেখা গেছে। দুই-তিনটি দৃশ্যে তিনি রবীন্দ্রনাথের চরণ আওড়িয়েছেন ঠিক, কিন্তু প্রতিটি দৃশ্যে তিনি যদি কাহিনির সঙ্গে সংযোগ করে রবীন্দ্র উদ্বৃতি দিতেন, চরিত্রটি জমে যেত। অনেক সম্ভাবনা ছিল অমিত হাসানের চরিত্রটির, তবে চরিত্রায়ণের দুর্বলতার কারণে শেষ পর্যন্ত হতে হতেও কিছু হয়নি। বরং বার বার ‘রবীন্দ্রনাথ ছন্দপতন পছন্দ করেনা’-এ সংলাপ বলে তিনি বিরক্তির উদ্রেক করেছেন। একটি দৃশ্যে তো তিনবার অকারণে এ সংলাপ বলেছেন। আচ্ছা রবীন্দ্রনাথ ছন্দপতন পছন্দ করেনা-এ কথা তাকে কে বলেছেন? আর যদি বিষয়টি সত্যিও হয়, রবীন্দ্রনাথ কি গোলাগুলি, খুন-খারাবি পছন্দ করতেন? অহেতুক কবি গুরু’কে এ চরিত্রে টেনে আনার যৌক্তিকতা খুঁজে পাইনি। তবে অমিত হাসানকে এ ছবিতে দেখতে বেশ ভালো লেগেছে।
শাকিব খান ‘রংবাজ’ চরিত্রে যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন। তবে তার কাছ থেকে আমাদের প্রত্যাশা আরো অনেক বেশি ছিল। দুর্বল চিত্রনাট্য, পরিচালনা শাকিব খানকে ডুবিয়েছে। শাকিব খান যেহেতু আমাদের দেশের শীর্ষ জনপ্রিয় তারকা, আমরা প্রত্যাশা করি তিনি তার আগের ছবির চেয়ে পরের ছবিতে নিজেকে ছাপিয়ে যাবেন। কিন্তু আফসোস, রংবাজ-এর শাকিব খান ছাড়িয়ে যেতে পারেনি শিকারী, সত্তা, রাজনীতি, নবাব-এর শাকিব খান’কে। সময় থাকতে কিং খানের উচিত যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত নেয়; সঠিক চিত্রনাট্য এবং সঠিক পরিচালকদের ছবিতে কাজ করা।
বুবলী অহংকার-এ যতটা দাপটের সাথে অভিনয় করেছেন, রংবাজ ছবিতে তার উল্টোটা। এ ছবিতে তিনি ‘শ্যোপিস’। তাকে অভিনয়ের সুযোগ-ই দেয়া হয়নি। তবে বুবলীর চেষ্টা চোখে পড়েছে। তিনি যতটুকুই অভিনয় করেছেন সপ্রতিভ, আত্মবিশ্বাসী ছিলেন। যদিও ‘রিমঝিম বৃষ্টি’ গানে শাকিব খানের অভিব্যক্তির পাশে বুবলীকে আড়ষ্ট মনে হয়েছে। আরো অভিব্যক্তি আশা করেছি।
নূতন বরাবারের মতই ‘লাউড’ অভিনয় করেছেন। তার জন্য নতুন কিছু নয়। বাকি চরিত্রগুলো অবহেলার শিকার হয়েছেন। কাজী হায়াত বরাবরের মতই প্রাণহীন। সাদেক বাচ্চু, শিবা শানু, চিকন আলী জ্বলে উঠবার সুযোগ পাননি। নতুন নায়িকা লিয়ানা লিয়া শুরুতে সম্ভাবনা দেখালেও শেষ অব্দি তার চরিত্রের কোনো কূলকিনারা হয়নি।
অর্থাৎ এক কথায় বললে, রংবাজ-এর কোনো গল্পই নেই। কোনো আবেগ নেই। কোনো টুইস্ট নেই। Body beautiful, minus soul হলো রংবাজ। প্রত্যাশার সঙ্গে প্রাপ্তির মেলবন্ধন হয়নি। শোনা কথা, এ ছবিটি নাকি আব্দুল মান্নান নয়, শামীম আহমেদ রনি-ই পরিচালনা করেছেন। যদি তাই হয়, তাহলে বলবো এই নির্মাতার রানা পাগলা, বসগিরি, ধ্যততেরিকি’র মত আরো একটি ছন্দপতনের নাম-রংবাজ!
সোনা বন্ধু
পরিচালক: জাহাঙ্গীর আলম সুমন
অভিনয়ে: ডি এ তায়েব, পপি, পরীমণি, আনোয়ারা, ঝুনা চৌধুরী, মাহমুদুল হাসান মিঠু
রেটিং: ১/ ৫
সমালোচনা লিখবার গুরুদায়িত্ব কাঁধে নিয়েছি, তার ওপর ঈদের ছবি-দেখতে তো হবেই। সোনা বন্ধু দেখবার আগে মনকে স্থির করে নিয়েছিলাম, এ ছবিটি থেকেও সম্পূর্ণ বিনোদন নেবার চেষ্টা করবো। ডি এ তায়েব ছোট পর্দায় দীর্ঘদিন ধরে অভিনয় করেছেন। তাকে বড় পর্দায় প্রধান নায়ক হিসেবে মেনে নেয়াটা শুরুতে কষ্টকর ছিল। তবে সোনা বন্ধু যত-ই এগিয়েছে, ততই গল্পের ভেতর ঢুকে গিয়েছি। ছবি দেখা শেষ করে মনে হয়েছে, ডি এ তায়েব ‘নয়ন’ চরিত্রে সৎ ছিলেন। তার কাজে আন্তরিক ছিলেন। ক্যরিকেচার হয়ে ওঠেননি।
‘সোনা বন্ধু’ নাকি দর্শকরা দেখছেন না। এর পেছনে যথেষ্ট কারণ আছে। ছবিটিকে গানের ছবি, প্রাণের ছবি হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। অথচ মাত্রাতিরিক্ত গান কাহিনির ধারাবাহিকতা ব্যাহত করেছে। যদিও বারী সিদ্দিকী ও সালমার গাওয়া বেশ কিছু বহুল প্রচলিত গানের নতুন সংগীতায়োজন মন ছুঁয়ে গেছে। তবে এটাও সত্যি, ‘সোনা বন্ধু’ ছবিতে এমন কিছু নেই, যা দর্শকরা আগে দেখেননি কিংবা শোনেননি। ব্যক্তিগতভাবে আমি এ ছবিতে মাটির গন্ধ পেয়েছি। ছবির শব্দগ্রহণ চমৎকার। পানির টলমল শব্দ, কোকিলের ডাক-সবকিছুই সংগীত পরিচালক উপস্থাপন করেছেন দারুণভাবে। সবুজ গ্রাম, বাউলের দোতারা-সবকিছুই কাহিনিকে যোগ্য সঙ্গত করেছে। ছবির কাহিনিতে বড় ধরনের একটি টুইস্ট আছে। এই টুইস্টটি দেখার পর দর্শকরা নড়েচড়ে বসেছিলেন। তবে এরপর আর কাহিনি খুব বেশি এগোয়নি। ছবির সম্পাদনা, দুর্বল চিত্রনাট্য এ ক্ষেত্রে দায়ী। বেশ কয়েকটি দৃশ্যে কন্টিনিউটিরও বড় ধরনের সমস্যা ছিল। যে দৃশ্যে নায়িকা নায়ককে বলেন, আমি আদেশ করছি কাজলকে তুমি বিয়ে করো, সে দৃশ্যের আগে পপির চুল ছিল সোজা ও লম্বা। একই দৃশ্যে কিছুক্ষণ পর পপির চুল পরিবর্তন হয়ে কোঁকড়া ও ছোট হয়ে যায়। জাদু বন্ধু’র ছোঁয়ায় হলো কিনা, স্পষ্ট নয়!
এ ছবির পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম সুমন আরেকটু কৌশলী হতে পারতেন। কস্টিউম, মেকআপ অনেক ক্ষেত্রেই বিশ্বাসযোগ্য ছিল না। বেশ কিছু উদ্ভট, হাস্যকর পরচুলা এবং দাড়ি-গোঁফ ব্যবহার করা হয়েছে। সম্পাদনা জোড়াতালি না দিয়ে আরেকটু নিখুঁত করা যেত। একদম হুট করেই ছবিটা শেষ হয়। এ কারণেই হয়তো আমার পরিবার-পরিজন বলছিলেন, মনে হচ্ছে টেলিফিল্ম শেষ হলো। কয়েকটি গান ফেলে দিলে তো ছোট পর্দাতেই এই টেলিফিল্ম প্রচার করা যেত!
তবে আমি আশাবাদী মানুষ। আশায় বাঁচতে চাই। আগেই বলেছি, ডি এ তায়েব আমাকে দারুণভাবে মুগ্ধ না করলেও বিরক্তির কারণ হননি। তিনি সর্বোচ্চ চেষ্টা করে গেছেন। তবে আমি মুগ্ধ পপি এবং পরীমণিকে দেখে। দুজনই বেশ ভালো করেছেন। বিশেষ করে দীর্ঘদিন পর পপি’কে পরিশীলিতভাবে কোনো চলচ্চিত্রে পাওয়া গেল। চাইলে তিনি এখনো ভালো ছবিতে নিয়মিত কাজ করতে পারেন। যদিও দুই/একটি দৃশ্যে তার ডাবিং ছিল না। পত্রিকার মাধ্যমে জেনেছি, তিনি এ ছবিটি নিয়ে সন্তুষ্ট নন। তবে আমি বলবো, পপি যথেষ্ট ভালো অভিনয় করেছেন। তাকে দেখতেও অনন্য সুন্দরী মনে হয়েছে। যেমনটি লাস্যময়ী মনে হয়েছে পরীমণিকে। বাংলা চলচ্চিত্রে এত সুন্দরী নায়িকা এ মুহূর্তে খুব কম-ই আছে। অভিনয়েও ভালো করেছেন তিনি। যদিও গ্রামীণ চরিত্রে তার শহুরে টান, উচ্চারণ কিছু দৃশ্যে কানে লেগেছে, তবে সবকিছু বিবেচনায় এনে পরীমণি আমাদের মুগ্ধই করেছেন। আরো বেশি মুগ্ধ হয়েছি, পপি এবং পরীমণি একই সঙ্গে একই ছবিতে কাজ করেছেন। যা আজকাল দেখাই যায়না। আগে মাল্টিস্টারার ছবিগুলো নিয়ে দর্শকদের আগ্রহ থাকতো বেশি। এখনও যদি মাহি-পরীমণি, নূসরাত ফারিয়া-মাহি, পরীমণি-নূসরাত ফারিয়া, মীম-মাহি, ববি-পরীমণি, মীম-পরীমণি, মাহি-ববি-আঁচল এমনকি পপি-শাবনূর, পপি-মৌসুমী, পূর্ণিমা-মাহি, পূর্ণিমা-পরীমণি এরকম সমন্বয় আমরা পর্দায় দেখতে পেতাম, অবশ্যই সবাই দলে দলে প্রেক্ষাগৃহে ভীড় করতাম। এ ক্ষেত্রে শুধু তারকাদের সদিচ্ছা নয়, সমান্তরাল ভাবে তাদের গুরুত্ব দিয়ে চিত্রনাট্য লেখা এবং দক্ষ পরিচালনার কথাও আমাদের ভাবতে হবে। সোনা বন্ধু ছবিতে মিমো-ও আছেন, আইটেম গানে। তবে তার গান অতটা দোলা দিতে পারেনি দর্শক মনে। এক বাক্যে বললে, ঈদের ছবি হিসেবে সোনা বন্ধু নিয়ে আমাদের তেমন কোনো প্রত্যাশাই ছিল না। প্রাপ্তির খাতায়ও তাই খুব বেশি কিছু যোগ হয়নি।
আমার আফসোস এখানেই। কেন এমনটি হবে? একটি বড় উৎসবে একটি ভালো লাগার মত মানসম্পন্ন ছবিও কেন দর্শক পাবেন না? দলাদলি, বয়কট, আন্দোলন, নির্বাচন এসবের বিরতিতে চলচ্চিত্রের মান উন্নয়ন নিয়ে কি কেউ ভাববেন না? দর্শকের বিনোদনের কথা ভাববেন না? দেশীয় চলচ্চিত্রকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিত করবার কথা ভাববেন না? সময় হয়েছে সব ভুলে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দর্শকদের জন্য কিছু করবার। দেশীয় প্রযোজনা না যৌথ? মৌলিক না নকল?-সরল দর্শক এত কিছু ভাবেন না। তারা শুধু সুস্থ বিনোদন পেতে চায়। সুনির্মিত চলচ্চিত্র দেখে প্রেক্ষাগৃহে নিয়মিত হতে চায়। কিন্তু আমরা কি সে সুযোগ তাদের দিচ্ছি? বাঁচতে হলে ভাবতে হবে। নইলে হবে বড় ধরনের ছন্দপতন। এবারের ঈদ সেই অশনি সংকেত-ই দিয়ে গেল কিন্তু!
প্রিয় বিনোদন/সিফাত বিনতে ওয়াহিদ