ছোটোখাটো বিষয়ে কেঁদে ফেলেন কেউ কেউ। ছবি: সংগৃহীত

আপনি কি খুব অল্পতেই কান্নাকাটি করেন?

কে এন দেয়া
সহ-সম্পাদক
প্রকাশিত: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০৯:২৮
আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০৯:২৮

(প্রিয়.কম) ব্রেকআপ হোক, কর্মক্ষেত্রে সমস্যা হোক বা প্রিয়জনের রোগশোকে হোক- কান্না জীবনেরই একটি অংশ।  আবেগ-অনুভূতি প্রকাশ করা এবং কঠিন পরিস্থিতি উতরে যাওয়ার জন্য কান্না করাটা জরুরি।  কিন্তু অনেকেই ভাবেন, তারা সহজেই কেঁদে ফেলছেন। হয়তো বিষয়টা তেমন গুরুতর নয়, তারপরেও তার চোখ ছাপিয়ে কান্না ঝরছে। এমনকি কান্না নিয়ন্ত্রণও করতে পারছেন না তিনি।  এসব ক্ষেত্রে তার কোনো বড় ধরনের সমস্যা থাকতে পারে। জেনে নিন অনিয়ন্ত্রিত কান্নার পেছনে কারণগুলো-

১) ডিপ্রেশন

ডিপ্রেশন বা বিষণ্ণতা রোগে আক্রান্ত একজন মানুষের সর্বক্ষণই বিষাদ বা অসাড় অনুভূতি হতে পারে ও অকারণেই কান্নার বেগ আসতে পারে। এমন অনুভূতি ও হুটহাট কান্না দেখা দিলে আপনি ডিপ্রেশনে আক্রান্ত কিনা তার পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া ভালো।  বিষণ্ণতার পাশাপাশি থাকতে পারে দুঃখবোধ, হতাশা, শূন্যতা, উৎসাহ হারানো, ঘুমের সমস্যা ও ক্লান্তি।

২) অ্যাংজাইটি

অ্যাংজাইটি থেকে দেখা দিতে পারে অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা, খিটখিটে মেজাজ, মনোযোগের অভাব ও কান্নাকাটি। অ্যাংজাইটি থাকলে একজন মানুষ সহজেই বিচলিত হয়ে কেঁদে দিতে পারেন। এ ক্ষেত্রেও মানসিক রোগের চিকিৎসা নেওয়া উচিত।

৩) কম বয়সে ট্রমা

যেসব মানুষ ছোটো বয়সে অত্যাচার সহ্য করে বা ভয়াবহ কোনো ট্রমার মুখোমুখি হয়, তারা সহজেই কেঁদে ফেলতে পারেন। এটা তাদের স্নায়বিক একটি সমস্যা।

৪) স্ট্রেস

স্ট্রেসে থাকলে নিঃসন্দেহে দুশ্চিন্তা ও বিষণ্ণতা বাড়ে। পারিবারিক জীবন বা কর্মক্ষেত্র- যে কোনো পরিস্থিতিতেই স্ট্রেস কান্নার প্রবণতা বাড়িয়ে দিতে পারে।

৫) ব্যক্তিত্ব

ব্যক্তিত্বের দিক দিয়ে পৃথিবীর প্রতিটি মানুষই আলাদা। কেউ যেমন শত কষ্টেও চোখের পানি ফেলে না, তেমনি কেউ আবার চোখের পানি ফেলতে এক সেকেন্ডও সময় নেন না। শারীরিক দিক দিয়ে মস্তিষ্কের গঠনের কারণেও একটি মানুষের কান্নার প্রবণতা বেশি হতে পারে। তাদের ব্যক্তিত্বই সংবেদনশীল।

৬) হরমোন

হরমোন আমাদের শরীরের ক্ষুধা, প্রজনন, মেজাজ ও আবেগ এসবই নিয়ন্ত্রণ করে। বিভিন্ন সময়ে শরীরে হরমোনের ওঠানামা ঘটে। যেমন পিরিয়ডের আগে, সন্তান জন্ম দেওয়ার পর, বা মেনোপজের সময়ে। এসব সময়ে সহজেই কান্নাকাটি করতে পারেন একজন নারী।

৭) সামাজিক প্রভাব

কান্নার প্রবণতা পুরুষের তুলনায় নারীর মাঝে দেখা যায় বেশি, কারণ সমাজই আমাদেরকে এভাবে ভাবতে শেখায়। সমাজের প্রভাবে একজন পুরুষ ভাবতে শেখেন কান্নাকাটি করাটা মেয়েলি ব্যাপার। অন্যদিকে মেয়েরা ধরে নেন কান্না চেপে রাখার কোনো দরকার নেই তার।

৮) সিউডোবুলবার এফেক্ট

মস্তিষ্কে কোনো ধরনের আঘাত লাগা বা মস্তিষ্কের যে অংশে অনুভূতির প্রক্রিয়া চলে সেখানে কোনো সমস্যা দেখা দিলে সিউডোবুলবার এফেক্ট নামের স্নায়বিক সমস্যাটি দেখা যায়। তা কান্নাকাটির প্রবণতা বেড়ে যাওয়ার জন্য দায়ী হতে পারে। শুধু তাই নয়, হঠাৎ করে কান্নাকাটি, অনিয়ন্ত্রিত হাসি বা অকারণে রেগে যাওয়াটা হতে পারে এই এফেক্টের দোষ।  স্ট্রোক, মাথায় আঘাত, ডেমেনশিয়া এসব সমস্যায় এমন ঘটনা ঘটতে দেখা যায়।

সূত্র: ওম্যান’স ডে

প্রিয় লাইফ/আর বি /রুহুল