ছবি সংগৃহীত

৬ দিন ধরে বিকাশ নেটওয়ার্কে গোলযোগ: গ্রাহক-এজেন্টদের দুর্ভোগ

এম. মিজানুর রহমান সোহেল
জেষ্ঠ্য প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪, ০৬:১১
আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪, ০৬:১১

বাংলাদেশের শীর্ষ মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান 'বিকাশ' টানা ৬ দিন ধরে তাদের সেবা বন্ধ করে রেখেছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের লাখ লাখ গ্রাহক। "নেটওয়ার্ক ও প্লাটফর্ম উন্নয়নের কাজ করছে বিকাশ" শিরোনামে একটি প্রজ্ঞাপন দেয়া হলেও কবে নাগাদ এ সমস্যা সমাধান হবে তা সঠিকভাবে বলতে পারছে না বিকাশ কর্তৃপক্ষ। আর বিকাশের প্রধান নির্বাহী কামাল কাদির বলছেন, গ্রাহকরা ভোগান্তিতে পড়লেও হিসাব নিয়ে শঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। দ্রুত সমস্যা কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করছি আমরা। গত সোম ও মঙ্গলবার কিছু কিছু এলাকার গ্রাহক সেবা পেলেও অনেক জায়গায়ই ভোগান্তির শিকার হতে হয়। বুধবার সকাল থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১২টা পর্যন্ত সেবাটি একেবারেই বন্ধ হয়েছিল। শুক্রবার সকালে কোন কোন এলাকায় লেনদেন করা গেলেও আজ শনিবার পর্যন্ত এ সমস্যা অব্যাহত রয়েছে। বিকাশে লেনদেন করতে সমস্যা হচ্ছে বলে খিলগাঁও এলাকার মো. আরিফুল ইসলাম প্রিয়.কমকে জানান, আমরা অনেক চেষ্টার পরও টাকা পাঠাতে পারছিলাম না। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানালে তারা বলেন, নেটওয়ার্ক উন্নয়নের কাজ চলছে। সাময়িকভাবে একটু সমস্যা হবে। তবে দ্রুত ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু তিনদিন হয়ে গেছে তারপরও আমরা গ্রাহকদের সেবা দিতে পারছি না। কবে ঠিক হবে তাও সঠিকভাবে বলতে পারছেন না তারা। বিকাশে লেনদেন সমস্যা প্রসঙ্গে বিকাশের বাণিজ্যিক ও বাজার সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আতিকুর রহমান বলেন, ‘সার্ভার সমস্যার কারণে গত কয়েকদিন কোন এজেন্ট লেনদেন করতে পারছেন না। বিকাশের সার্ভারে কাজ চলছে। তাই এই সমস্যাটা সৃষ্টি হয়েছে। এই সমস্যা কবে নাগাদ সমাধান হবে তা জানাতে পারেননি বিকাশের এই কর্মকর্তা।

এ ব্যাপারে ব্র্যাক ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট মামুনুর রশিদ জানান, বিকাশের প্রযুক্তিগত উন্নয়নের জন্য সাময়িক সমস্যা হয়েছে। শিগগির সব ঠিক হয়ে যাবে বলে তিনি জানান। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মাহফুজুর রহমান জানান, প্ল্যাটফর্ম ও নেটওয়ার্কের কারিগরি উন্নয়নের কারণে বিকাশের গ্রাহকরা সাময়িক ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। এ সমস্যা আরো এক সপ্তাহ থাকতে পারে। বিকাশের প্রধান নির্বাহী কামাল কাদির এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘প্লাটফর্ম ও নেটওয়ার্কের কারিগরি উন্নয়নের কারণে গ্রাহকরা সাময়িক ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। গ্রাহকরা ভোগান্তিতে পড়লেও হিসাব নিয়ে শঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। দ্রুত সমস্যা কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করছি আমরা।’ কবে সমস্যার সমাধান হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নির্ধারিত তারিখ বলা যাবে না। কাজ চলছে, বেশ কিছু এলাকায় এ সমস্যার সমাধান হয়েছে। আশা করি অতিদ্রুত সারা দেশে এ সেবা দিতে পারবো। প্রসঙ্গত, দেশে ২৮টি ব্যাংককে এ সেবা চালুর অনুমতি দেয়া হলেও ১৯টি ব্যাংক চালু করতে পেরেছে। এ সেবায় সবচেয়ে বেশি গ্রাহক ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান বিকাশের। দেশে মোবাইল ব্যাংকিং সেবায় এক কোটি ৩২ লাখ গ্রাহকের মধ্যে এক কোটি সাত লাখই বিকাশের। সেবা দিতে প্রতিষ্ঠানটি এজেন্ট নিয়োগ করেছে ৮৫ হাজার। গ্রামীণফোন, রবি, বাংলালিংক ও এয়ারটেলের গ্রাহক রেজিস্ট্রেশন করে সেবাটি নিচ্ছেন। ২০১১ সালে কার্যক্রম শুরু করা বিকাশ ব্যাংকিং সেবা বহির্ভূত বাংলাদেশের একটি বিশাল জনগোষ্ঠীকে সেবা প্রদানের লক্ষ্যে নানা ধরনের মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস চালু করেছে। বিকাশ- ব্র্যাক ব্যাংক, ইউএস ভিত্তিক মানি ইন মোশন ও ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স করপোরেশনের যৌথ মালিকানাধীন একটি প্রতিষ্ঠান।