ছবি সংগৃহীত

শিশুদের ক্ষেত্রে এন্টিবায়োটিক ব্যবহারে বিশেষ সতর্কতা!

প্রিয় লাইফ
লেখক
প্রকাশিত: ২০ নভেম্বর ২০১৩, ০৫:২৫
আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০১৩, ০৫:২৫

American Academy of Pediatrics (AAP) Committee on Infectious Diseases গত সোমবার এক বিবৃতিতে জানায়, শিশুদের কানের সংক্রমণ, সর্দি কিংবা গলাব্যথা হলেই যেন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞরা তাদের এন্টিবায়োটিক না দেন। কারণ এন্টিবায়োটিক শুধু ব্যাকটেরিয়া ঘটিত রোগের ক্ষেত্রে কার্যকর। কিন্তু ভাইরাস ঘটিত রোগের ক্ষেত্রে নয়। এখনো বেশ কিছু গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফল বলছে, অনেক স্থানেই শিশু থেকে শুরু করে প্রাপ্তবয়স্ক পর্যন্ত সবাইকে ভাইরাস ঘটিত কাশি কিংবা সর্দির ক্ষেত্রে এন্টিবায়োটিক দেয়া হয়। এটি রোগীর কোন উপকার তো করেই না, উল্টো জীবাণুদেরকে এন্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে আরো বেশি প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সাহায্য করে। ডক্টর থিওক্লিস জাওটিস বলেন, “সাধারণ মানুষ জানেই না এর ফলে কি ভয়াবহ সমস্যা তৈরি হতে যাচ্ছে।“ তিনি American Academy of Pediatrics (AAP) Committeeর একজন সদস্য ও পেনসিলভিনিয়ার ফিলাডেলফিয়ার চিল্ড্রেন’স হসপিটালের শিশুদের সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ।

আমেরিকার সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশন এর মতে প্রতি বছর প্রায় ২ মিলিয়ন লোক এন্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের শিকার হয় ও ২৩,০০০ লোক মারা যায়। যেকোন ধরণের এন্টিবায়োটিকের ব্যবহার-হোক তা সঠিক কিংবা ভুল, এই ঝুঁকিকে আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে। এর ফলে শিশুরা ডায়রিয়া ও এলার্জিজনিত নানা সমস্যায় আক্রান্ত হয়। তাই বিশেষজ্ঞদের মতে, শিশুরোগ নিয়ে যারা কাজ করছেন তাদের উচিত খুব সতর্কতার সাথে এন্টিবায়োটিকের ব্যবহার নিশ্চিত করা, যখন প্রয়োজন। যেমন কানে ব্যথার ক্ষেত্রে শিশু যদি দুই কানেই ব্যথা অনুভব করে তবে সেক্ষেত্রে এন্টিবায়োটিক ভাল কাজে দেয়। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই ব্যথা নিজে থেকেই চলে যায়। তাই সাথে সাথেই এন্টিবায়োটিক না দিয়ে কিছু সময় অপেক্ষা করে দেখা উচিত যে ব্যথা চলে যায় কিনা। সর্দি-কাশির ক্ষেত্রেও যদি তা দীর্ঘস্থায়ী হয় তবেই এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করা উচিত, নয়তো নয়। আর শিশুদের গলাব্যথার ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের আগে নিশ্চিত হয়ে নেয়া উচিত শিশুটির গলা ফুলে গিয়েছে কিনা , টনসিল বা জ্বরের লক্ষণ দেখা দিয়েছে কিনা।
যদি এন্টিবায়োটিক ব্যবহার একান্তই জরুরি হয়ে পড়ে, তবে শিশুদের কানের সংক্রমণ বা সাইনুসাইটিসের সমস্যার ক্ষেত্রে এমোক্সিসিলিন কিংবা এমোক্সিসিলিনের সাথে ক্ল্যাভুনালেট গ্রুপের এন্টিবায়োটিক দেয়া যেতে পারে। তবে দ্বিতীয় ক্ষেত্রে প্বার্শ-প্রতিক্রিয়া হিসেবে ডায়রিয়া বা পাকস্থলীর অন্যান্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। ডক্টর জেফ্রি লিন্ডার বলেন, চিকিৎসকদের উচিত রোগীদের এটি বলা কখন তাদের এন্টিবায়োটিক গ্রহণ করা প্রয়োজন আর কখন নয়। “ তিনি আরো বলেন, “এখনো প্রচুর মানুষ সর্দি-কাশি সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে চলে আসেন। তাদেরকে এটা খুব কম চিকিৎসকই বলেন যে তাদের আদৌ হাসপাতালে আসার দরকার আছে কিনা। নাকি এতে শুধু রোগীদের সময় ও অর্থের অপচয় হয়।“ আর থিওক্লিসের মতে শিশুদেরকে এন্টিবায়োটিক প্রয়োগের ব্যপারে আরো বেশি সচেতন হতে হবে।