
ছবি সংগৃহীত
যশোর সফটওয়্যার পার্কে ১০ হাজার কর্মসংস্থান
আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০১৬, ১৩:০৯
(প্রিয় টেক) দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের তরুণ প্রজন্মের স্বপ্ন পূরণের গন্তব্য হয়ে ওঠার পথে রয়েছে যশোর সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক। এই পার্কের মাধ্যমে কর্মসংস্থান হবে এই অঞ্চলের ১০ হাজার তরুণের। ২০২১ সাল নাগাদ পাঁচ বিলিয়ন ডলারের রফতানি আয়ের দ্বারও উন্মোচিত হবে। বাংলাদেশের ব্যাঙ্গালোর আর সিলিকন ভ্যালি হয়ে উঠবে আইটি পার্কটি। রোববার সকালে যশোরে নির্মাণাধীন পার্ক ভবনে স্কিল ডেভেলপমেন্ট ট্রেনিং কোর্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক।
যশোর সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) জাহাঙ্গীর আলম জানান, কম্পিউটারের সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, ফ্রিল্যান্সিং, কল সেন্টার ও রিচার্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট— এ ৪টি সেক্টরে দেশ-বিদেশের আইটি (তথ্য ও প্রযুক্তি) শিল্প উদ্যোক্তারা বিনিয়োগের সুযোগ পাবেন। তিনি বলেন, আমাদের দেশে ১০ কোটি শিক্ষিত বেকার যুবসমাজ রয়েছে। তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে এখাতে লাগাতে পারলে বাংলাদেশ গামের্ন্টস শিল্পের মতো আইটি খাতও অর্থনৈতিকভাবে বিশ্বে লিড দিতে পারবে। কেননা আইটি খাতে আমাদের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, এই পার্কে কাজ করতে আসা ১০ হাজার কর্মীর চোখের স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য পার্কের মূল ভবনের সামনে পাঁচ একরের একটি বিশাল জলাধার থাকছে। যেখানে স্বচ্ছ পানিতে ছাড়া হবে দেশি-বিদেশি নানা প্রজাতির মাছসহ জলজ প্রাণী, থাকবে দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা। প্রকল্পের নকশায় এর নাম দেয়া হয়েছে ‘ইকো ট্যুরিজম পার্ক’। এছাড়া মূল ভবনের দক্ষিণ পাশে থাকবে সবুজ বেষ্টনী। যেখানে কর্মীদের পায়ে হাঁটার জন্য আঁকা-বাঁকা পথ থাকবে। নকশায় এর নাম রাখা হয়েছে ‘গ্রিন জোন’।
জেলা প্রশাসক ড. হুমায়ুন কবীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ, যশোর-২ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহীদুল ইসলাম মিলন, বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসনে আরা বেগম, সাপোর্ট টু ডেভেলপমেন্ট অব কালিয়াকৈর প্রল্পের পরিচালক এএনএম সফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, ২০১০ সালের ২৭ ডিসেম্বর যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস উদ্বোধনের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দেন ‘বেকারত্ব নিরসন, উত্পাদনমুখী জনবল সৃষ্টি এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে যশোরে আন্তর্জাতিক মানের একটি আইটি পার্ক স্থাপন করা হবে।’ প্রধানমন্ত্রীর আগ্রহে ২০১৪ সালের ২৫ এপ্রিল যশোর শহরের বেজপাড়া এলাকায় এই প্রকল্পের কাজ শুরু করা হয়।
ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীনে প্রায় সাড়ে ৯ একর জমি ও জলাধারের উপর প্রকল্পের কাজ দ্রুতিগতিতে এগিয়ে নেয়া হচ্ছে। ২৮৩ কোটি টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্পের অবকাঠামো নির্মাণের কাজ প্রায় শেষের দিকে। প্রকল্পের মূল ভবন ভূমিকম্প প্রতিরোধক কম্পোজিট স্ট্রাকচারে (স্টিল ও কংক্রিট) নির্মিত হচ্ছে।
প্রথম দফায় ১৫ তলা ভিত্তির উপর পাঁচতলা ভবন নির্মিত হচ্ছে। পাঁচটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রকল্পের পাঁচটি অংশে কাজ করছে। আগামী জুন মাসে পার্কের উদ্বোধন করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। পার্কটি চালু হলে আইটি খাতে উদ্যোক্তারা এখানে ব্যবসা করবেন। এখানে ঠিকানা হবে দেশ-বিদেশের স্বনামধন্য সব সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠানের। এই পার্কের মাধ্যমে পুরো খুলনা বিভাগের ১০ জেলার অর্থনৈতিক চেহারা পাল্টে যাবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।