ছবি সংগৃহীত

যখন পুরুষ গোলকৃমি হয় স্ত্রী গোলকৃমির মৃত্যুর কারণ

প্রিয় লাইফ
লেখক
প্রকাশিত: ২২ ডিসেম্বর ২০১৩, ১০:১৫
আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৩, ১০:১৫

অনেক প্রাণী প্রজাতির স্ত্রী সদস্যরা শুধুমাত্র তাদের পুরুষ সঙ্গীর সন্তান জন্ম দেয়ার জন্য বেঁচে থাকে। সন্তান জন্ম দেয়ার পর পরই সে মারা যায়। গবেষকদের কাছে এ আবিষ্কার একেবারেই অপ্রত্যাশিত ছিল। তারা Caenorhabditis elegans নামে এক প্রজাতির গোলকৃমি নিয়ে গবেষণা করার সময় এ তথ্যটি জানতে পারেন। শুক্রাণু ও শুক্রাণুর তরল অংশ যখন স্ত্রী গোলকৃমির দেহে প্রবেশ করে তখন এটা ধীরে ধীরে এটা ক্ষয়ে যেতে বা সংকুচিত হতে শুরু করে। নতুন গোলকৃমি জন্ম দেয়ার পর পরই স্ত্রী কৃমিটি মারা যায়।

প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের মতে, খুব সম্ভবত স্ত্রী কৃমিটি যেন সন্তান জন্ম দেয়ার পর অন্য কোন পুরুষ কৃমির সাথে মিলিত হতে না পারে সেজন্যই হয়তো এই অদ্ভুত খেয়াল প্রকৃতির।" গবেষকরা আরো বলেন, পুরুষ কৃমির শুক্রাণু ও এর জলীয় অংশ যখন স্ত্রী কৃমির দেহে প্রবেশ করে তখন স্ত্রী কৃমির দেহ পানিশূন্যতায় ভুগতে থাকে, অকাল বার্ধক্য শুরু হয় ও মারা যায়। এতে তাদের আয়ুষ্কাল কমে আসে তিন ভাগের অর্ধেকে। স্ত্রী কৃমির জীবনের বিনিময়ে পুরুষ কৃমিটির জিনোম বিস্তৃতি লাভ করে। Caenorhabditis elegans কে বিভিন্ন গবেষণায় প্রায়ই ব্যবহার করা হয় কারণে এদের জিনগত অনেক প্রক্রিয়ার সাথে মানুষের মিল রয়েছে। বিজ্ঞানীদের ধারণা, গোলকৃমির মত সরল প্রাণীদের ক্ষেত্রে এটা ঘটলে অন্যান্য উচ স্তরের প্রাণীদের ক্ষেত্রেও এরকম ঘটতে পারে। যেকোন প্রজাতির পুরুষ প্রাণীরই তার নিজের জিন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মাঝে স্থানান্তরিত করার জন্য স্ত্রী প্রাণীটির সাহায্য প্রয়োজন।
একবার শুক্রাণু প্রবেশ করলেই একটি স্ত্রী কৃমি হাজার হাজার নতুন কৃমির জন্ম দিতে পারে। আর নতুন এই কৃমিগুলোর কোন ধরণের বিশেষ যত্নেরও প্রয়োজন হয় না তাদের মায়ের কাছ থেকে। আর এভাবেই পুরুষ কৃমিরা কিছু জিনগত সুবিধা আদায় করে নেয়। গবেষকরা আরো দেখেছেন, শুধু এই এক প্রজাতির কৃমি নয়, Caenorhabditis গণের অন্তর্ভুক্ত আরো কয়েক ধরণের কৃমিতেই এই ঘটনা ঘটে থাকে। এই গবেষণা পত্রটি ‘সায়েন্স’ জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।