ছবি সংগৃহীত

ভাদ্র মাসের তাল

nusrat jahan champ
লেখক
প্রকাশিত: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৩, ০৪:৫১
আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৩, ০৪:৫১

ভাদ্র মাস অথচ ভাদ্র মাসের অন্যতম ফল এখনো খাননি, তা কি হয়? হ্যা, তালের কথা বলছি! ভাদ্র মাসের এই তালপাকা গরমে সত্যি সত্যি তাল পেকে গেছে! ফল হিসেবে তাল বাংলাদেশে খুবই জনপ্রিয়। তাই ভাদ্র মাস এলেই তাল ও তালের পিঠা খাওয়ার ধুম পড়ে যায়! তালের আদিনিবাস আফ্রিকাতে হলেও পরে তা ছড়িয়ে পড়ে এশিয়া ও নিউগিনিতে। আমাদের দেশে যে তাল পাওয়া যায় তার ইংরেজি নাম Asian Palmyra Palm এবং বৈজ্ঞানিক নাম Borassus flabellifer। এর আদিনিবাসও এই ভারতীয় উপমহাদেশেই! আরো ভালো করে বলতে গেলে দক্ষিণ ভারতে। একেকটি তালগাছ ১০০ বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারে। গাছগুলো লম্বায় ৩০ মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে। এর পাতাগুলো হয় ছড়ানো পাখির পাখার মতো। পাতা ২ থেকে ৩ মিটার পর্যন্ত বড় হতে পারে। তালগাছের কোনো কিছুই ফেলনা নয়। এর পাতা দিয়ে ঘরের ছাউনি, মাদুর, ঝুড়ি, হাতপাখা, টুপি, ছাতা তৈরি করা হয়।

অতীতে তালপাতা লেখা ও ছবি আঁকার উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত হতো। তাল ফল ছোট থাকা অবস্থায় 'তালখুর' হিসেবে খাওয়া হয়। পাকা তালের রস দিয়ে পিঠা, ক্ষীর, বড়া ইত্যাদি তৈরি করা হয়। খেজুর গাছের মতো তালগাছ থেকেও রস সংগ্রহ করা হয়। এই রস দিয়ে পাটালি গুড়, মিছরি, তাড়ি ইত্যাদি তৈরি করা হয়। তালের বীজ তালশাঁস হিসেবে খাওয়া হয়। দক্ষিণ ভারতে তালশাঁসের সরবত খুবই জনপ্রিয়। শুধু খাবার হিসেবে নয়, তালগাছ সাহিত্যের পাতাতেও স্থান দখল করে আছে। যেমন - 'ঐ দেখা যায় তালগাছ, ঐ আমাদের গাঁ' অথবা রবিঠাকুরের 'তালগাছ একপায়ে দাঁড়িয়ে' ইত্যাদি। ফল হিসেব তালের পুষ্টিগুণও কম নয়। পাকা তালের প্রতি ১০০ গ্রাম খাদ্যযোগ্য অংশে রয়েছে - খাদ্যশক্তি- ৪৩ কিলোক্যালরি জলীয় অংশ- ৮৭.৬ গ্রাম আমিষ- .৮ গ্রাম চর্বি- .১ গ্রাম শর্করা- ১০.৯ গ্রাম খাদ্যআঁশ- ১ গ্রাম ক্যালসিয়াম- ২৭ মিলিগ্রাম
ফসফরাস- ৩০ মিলিগ্রাম আয়রন- ১ মিলিগ্রাম থায়ামিন- .০৪ মিলিগ্রাম রিবোফ্লেভিন- .০২ মিলিগ্রাম নিয়াসিন- .৩ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি- ৫ মিলিগ্রাম
  • তাল ফল হিসেবে ভিটামিন বি-এর আধার। তাই ভিটামিন বি-এর অভাবজনিত রোগ প্রতিরোধে তাল গুরুত্বপূর্ণ পালন করে।
  • তালে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস। যা দাঁত ও হাড়ের ক্ষয় প্রতিরোধে সহায়ক।
  • কোষ্ঠকাঠিন্য ও অন্ত্রের রোগ দূরীকরণে তালের গুরুত্ব রয়েছে।