
ছবি সংগৃহীত
নিয়মিত পেট ফাঁপা থাকা যে রোগগুলোর লক্ষণ প্রকাশ করে
আপডেট: ০৩ জুন ২০১৬, ০৩:৩৬
ফটো সোর্স : www.today.com
(প্রিয়.কম)- পেট ফাঁপার সমস্যার সাধারণ কারণ হচ্ছে ধূমপানের অভ্যাস বা খাদ্য থেকে সৃষ্ট গ্যাস। কিন্তু নিয়মিত পেট ফাঁপার সমস্যা শুধু এই কারণগুলোর জন্যই হয়না। যদি আপনার নিয়মিত এবং মারাত্মক ধরণের পেট ফাঁপার সমস্যাটির সাথে সাথে ওজন কমে যায় এবং পেটে ব্যথা থাকে তাহলে আপনার দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া প্রয়োজন। কারণ এটি মারাত্মক কোন রোগের লক্ষণ হতে পারে যেমন-
১। যকৃতের রোগ
অ্যাসসাইটেস নামক যকৃতের রোগের কারণে পেটে ও পেলভিসে অস্বাভাবিক তরল জমে। এর ফলে পেট ফাঁপা, ওজন বৃদ্ধি পাওয়া এবং কোমরের সম্প্রসারণ হয়। অ্যাসসাইটেস সাধারণত লিভার ডিজিজের কারণে হয়ে থাকে। কিন্তু ক্যান্সারের কারণে হওয়ার সম্ভাবনা ১০%। ব্লটিং ও জন্ডিস যদি একত্রে দেখা দেয় যার কারণে চোখ ও ত্বক হলুদ দেখায় তাহলে এই লক্ষণ ক্যান্সার হওয়ার ইঙ্গিত দেয় যা লিভারে ছড়িয়ে গেছে। এছাড়াও হেপাটাইটিসের কারণেও এমন লক্ষণ প্রকাশ পেতে পারে।
২। ক্যান্সার
নিয়মিত পেট ফাঁপার সমস্যায় ভোগা ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে। পাকস্থলী, ডিম্বাশয় বা অন্ত্রের ক্যান্সারের কারণে তরল জমা হয় ফলে পেট ফাঁপার সমস্যাটি দেখা দেয়। টিউমার পেটে চাপের সৃষ্টি করে বলে পেট ফাঁপার সাথে সাথে পেটে ব্যথাও হতে পারে।
৩। গ্যাস্ট্রোএন্টেরাইটিস
পাকস্থলী ও অন্ত্রের প্রদাহজনিত রোগ গ্যাস্ট্রোএন্টেরাইটিস নামক রোগের সাধারণ লক্ষণ হচ্ছে পেট ফাঁপা। এটি স্টোমাক বাগ নামেও পরিচিত। সাধারণত পাকস্থলীতে ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে এই রোগ হতে পারে।
৪। বাউয়েল অবস্ট্রাকশন
পেট ফাঁপার সাথে সাথে মারাত্মক ধরণের পেটে ব্যথা, বমি বমি ভাব এবং বমি হওয়া বাউয়েল অবস্ট্রাকশন এর লক্ষণ। অন্ত্রের এই বাঁধার ফলে প্রচন্ড ব্যথা হয়। পেটের অবরুদ্ধ অংশে গ্যাস্ট্রিক জুস ও খাবার জমা হয়। জমা হওয়া খাদ্য যখন নীচের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করে তখন ব্যথা সৃষ্টি হয়। যদি সঠিক সময়ে যত্ন নেয়া না হয় তাহলে জটিল অবস্থা (যেমন- অন্ত্র ছিদহওয়া) সৃষ্টি হতে পারে।
৫। দীর্ঘমেয়াদী কোষ্ঠকাঠিন্য
সপ্তাহে তিনবারের কম মল ত্যাগ হলে এবং এই অবস্থাটি যদি কয়েকমাস যাবত চলতে থাকে তাহলে আপনার ক্রনিক কনস্টিপেশন আছে বোঝা যায়। বাধাপ্রাপ্ত মল ও বায়ু অন্ত্রে আটকা পড়ে থাকে বলে পেট ফাঁপার সমস্যাটি হয়।
৬। ডাইভারটিকোলাইটিস
ইনফেকশন বা প্রদাহজনিত কারণে কোলনে ছোট ছিদ্রের সৃষ্টি হলে তাকে ডাইভারটিকোলাইটিস বলে। সাধারণত ৫০ বছরের বেশি বয়সের মানুষের ডাইভারটিকোলাইটিস হয়ে থাকে। এটি হলে পেটে ব্যথার পাশাপাশি ক্ষুধা কমে যাওয়া, জ্বর, কোষ্ঠকাঠিন্য এবং ডায়রিয়া হতে পারে।
৭। হরমোনের পরিবর্তন
প্রেগনেন্সির সময় এবং পিরিয়ডের আগে নারীদের প্রোজেস্টেরন হরমোনের নিঃসরণ বৃদ্ধি পায়। এর ফলে অন্ত্রের কাজ ধীর গতির হয় অর্থাৎ খাদ্য খুব আস্তে আস্তে পরিপাক হয়। ফলে পেট ফাঁপা ও কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হতে পারে। পেট ফাঁপা প্রতিহত করার জন্য প্রতিদিন ৩০ মিনিট হাঁটুন। তরল খাবারের পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে ফল, আস্ত শস্য ও সবজি খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করা যায়।
লিখেছেন-
সাবেরা খাতুন
ফিচার রাইটার, প্রিয় লাইফ
প্রিয়.কম