
ছবি সংগৃহীত
দিল্লি বেড়াতে গেলে যে ১০ টি স্থান অবশ্যই দেখে আসবেন!
আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, ০৫:২২
(প্রিয়.কম) দিল্লি, ইন্ডিয়ার রাজধানী। পুরাতন শহর এই দিল্লির রয়েছে অনেক ইতিহাস। অনেক ঐতিহ্যবাহী মসজিদ, কেল্লা, স্থাপত্য রয়েছে এখানে। তাই পুরাতন দিল্লি অথবা নয়া দিল্লি, উভয় স্থানেই বেড়ানোর আছে অনেক জায়গা।
আসুন জেনে নিই দিল্লির এমন ১০ টি জায়গার কথা যেখানে অবশ্যই বেড়াবেন। মজার ব্যাপার হল, এই তালিকার বেশির ভাগ জায়গাই আপনি বেড়াতে পারবেন বিনামূল্যে।
লাল দূর্গ বা Red fort:
দিল্লির অনেক পুরাতন আর ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্য লাল দূর্গ। দূর্গটি মোঘল সাম্রাজ্যের কথা মনে করিয়ে দেওয়া হয়। দূর্গের দেয়াল ২ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। লাল ইটের এই দেয়াল তৈরি করা হয় ১৬৩৮ সালে যাতে শত্রুর আক্রমণ থেকে দূর্গকে রক্ষা করা যায়। যদিও মোঘলরা শিখ এবং পরবর্তীতে বিটিশদের হাত থেকে একে রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়।পর্যটকদের মনে মোঘল সাম্রাজ্যের সেই প্রাচীন অনুভুতি এনে দিতে প্রতি সন্ধ্যায় একটি লাইট শো হয় যেখানে ইতিহাসের বেশ কিছু ঘটনা তুলে ধরা হয়।
অবস্থান- চাঁদনী চকের বিপরীতে, পুরাতন দিল্লি
প্রবেশ মূল্য- বিদেশী পর্যটকদের জন্য ২৫০ রুপী, দেশী পর্যটকদের জন্য ১০ রুপী, ১৫ বছরের নীচে শিশুদের জন্য বিনামূল্যে প্রবেশের ব্যবস্থা রয়েছে।
জামা মসজিদ বা Jama Mosque:
পুরাতন দিল্লির আরেকটি চমৎকার স্থাপনা হল জামা মসজিদ। এটি ইন্ডিয়ার সবচেয়ে বড় মসজিদ। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, এই মসজিদের অঙ্গনে একত্রে ২৫০০ জন মুসলমান ব্যাক্তি নামাজ পড়তে পারেন। মসজিদটি তৈরি করতে সময় লেগেছে ১৩ বছর। ১৬৫০ সালে এর নির্মাণ কাজ শেষ হয়। মসজিদের দক্ষিণ মিনারের চূড়ায় ওঠা যথেষ্ঠ শ্রমসাধ্য। কিন্তু উপর থেকে আপনি যে অসাধারণ দৃশ্য দেখতে পাবেন তা আপনার ক্লান্তি দূর কর দেবে নিমিষে।মসজিদে প্রবেশের ক্ষেত্রে পোশাক পরিধানের কিছু নিয়ম রয়েছে। মানে আপনাকে অবশ্যই মাথায় কাপড় দিয়ে সম্পূর্ণ হাত এবং পা ঢেকে প্রবেশ করতে হবে। তবে চিন্তার কিছু নেই। পোশাক ওখানেই পাওয়া যাবে।
প্রবেশ মূল্য- ফ্রি, কিন্তু ক্যামেরা নিলে ৩০০ রুপী দিতে হয়।
সময়- প্রতিদিনই খোলা থাকে, শুধু নামাজের সময় প্রবেশ নিষেধ। সূর্যাস্তের আগে বন্ধ করে দেওয়া হয়।
স্বামী নারিয়ণ আকশারধাম:
অবস্থান- নদীয়া মোড়ের কাছে, নয়া দিল্লি।
প্রবেশ মূল্য- ফ্রি, তবে বিশেষ প্রদর্শনীর ক্ষেত্রে টিকেট নিতে হয়।
সময়- মঙ্গলবার থেকে রবিবার সকাল ৯.৩০ থেকে সন্ধ্যা ৬.৩০ পর্যন্ত। সোমবার বন্ধ।
বাদশা হুমায়ূনের কবর:
১৫৭০ সালে মুঘল সাম্রাজ্যের ২য় বাদশাহ হুমায়ূনের কবর দেয়া হয় একটি রাজমহল নির্মাণ করে। ভারতবর্ষে এটিই প্রথম এ ধরণের স্থাপত্য। এরপর সাড়া ভারত জুড়ে মুঘলরা এরকম আরো অনেক স্থাপত্য নির্মাণ করেছেন। বাদশা হুমায়ূনের কবরটি ভবনের বিশাল কমপ্লেক্স জুড়ে করা হয়েছে। ভেতরে খুব সুন্দর একটি বাগান রয়েছে।
অবস্থান- পূর্ব নিজামুদ্দীন, নতুন দিল্লি
প্রবেশ মূল্য- বিদেশী পর্যটকদের জন্য ২৫০ রুপী, দেশী পর্যটকদের জন্য ১০ রুপী, ১৫ বছরের নীচে শিশুদের জন্য বিনামূল্যে প্রবেশের ব্যবস্থা রয়েছে।
সময়- সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রতিদিন। তবে বাগানটি বিকেলে দেখতেই বেশি ভালো লাগে।
পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু মিনার হচ্ছে দিল্লির এই কুতুব মিনার। এটি শুরুর দিকের ইন্দো-ইসলামিক আর্কিটেকচারের একটি অনন্য নিদর্শন। এটি নির্মিত হয় ১২০৬ সালে, নির্মানের কারণ এখনো একটি রহস্য। অনেকে মনে করেন এটি ভারতবর্ষে মুসলিমদের আগমণের স্মারক। আবার অনেকে মনে করেন এটি ছিল বিশ্বাসীদের প্রার্থণার পবিত্র স্থান। এর স্থাপত্য শৈলীর অনন্যতা সকল পর্যটকদের আকর্ষণ করে।
প্রবেশ মূল্য- বিদেশী পর্যটকদের জন্য ২৫০ রুপী, দেশী পর্যটকদের জন্য ১০ রুপী, ১৫ বছরের নীচে শিশুদের জন্য বিনামূল্যে প্রবেশের ব্যবস্থা রয়েছে।
সময়- সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রতিদিন।
লোদী গার্ডেন:
শহুরে জীবনে লোদী গার্ডেন যেন প্রশান্তির ছোঁয়া। ক্লান্ত অবসান্ত মনকে বিশ্রাম দিতে এখানে ভীড় করেন পর্যটকেরা। এই বিশাল বাগানটি নির্মিত হয়েছিল ১৯৩৬ সালে। ১৫ এবং ১৬ শতকের শাসকদের কবরকে ঘিরে এই বাগানের বিস্তৃতি। সকালে যারা জগিং করেন বা যোগ ব্যায়াম করেন নিয়মিত তারা এখানে আসেন। তরুণ যুগলদেরও প্রিয় জায়গা এটি।
অবস্থান- মধ্য দিল্লি
লিখেছেন
আফসানা সুমী
ফিচার রাইটার, প্রিয় লাইফ
প্রিয়.কম