ছবি সংগৃহীত

জেনে নিন হলুদের দারুণ কিছু ঔষধি গুণ

প্রিয় লাইফ
লেখক
প্রকাশিত: ০৪ মার্চ ২০১৪, ০৫:৩০
আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৪, ০৫:৩০

কথায় বলে হলুদ একটি সর্বজনীন মশলা, কারণ প্রায় সব রান্নায় হলুদ ব্যবহার করা হয়। আমাদের বাঙালিয়ানা কোন রান্না হলুদ ছাড়া কল্পনাই করা যায় না। আমাদের প্রত্যেকের রান্নাঘরের সহজলভ্য একটি উপাদান। শুধু রান্নার কাজেই নয়, সেই প্রাচীন কাল থেকেই হলুদ ব্যবহৃত হয়ে আসছে নানান রকম চিকিৎসায় এবং সৌন্দর্যচর্চায়। সর্বজনীন মশলার মতই হলুদের রয়েছে অনেক ধরণের রোগ নিরাময়ের গুণাগুণ। হলুদের এই অসাধারণ ঔষধি গুণাগুণ নিয়েই আজকে আমাদের লেখা।

আয়ু বাড়াতে হলুদ চা

ডঃ আন্ড্রু ওএইল বলেন প্রতিদিন ১ কাপ হলুদের চা আয়ু বাড়াতে সাহায্য করে। জাপানের ওকিনাওয়া পৃথিবীর সব চাইতে দীর্ঘায়ু জাতি, তারাও এব্যাপারে একমত। তারা প্রতিদিন পান করেন হলুদ চা। ৪ কাপ পানিতে ১ চা চমচ হলুদ গুঁড়ো ফুটিয়ে নিয়ে এতে আদা এবং মধু মিশিয়ে তৈরি করে পান করুন হলুদের চা প্রতিদিন।

পা মচকানোর ঔষধ হিসেবে হলুদ

দুর্ঘটনাবশত অনেক সময় অনেকের পা মচকে যেতে পারে। এই পা মচকানোর প্রাচীন এবং হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা করা হয় হলুদ দিয়ে। দ্রুত পা মচকানো নিরাময়ের জন্য এই পদ্ধতিটি সব চাইতে কার্যকরী। একটি বাটিতে ১:২ অনুপাতে লবন এবং হলুদ গুঁড়ো নিয়ে একে ঘন পেস্ট করার মত পানি দিন। এরপর এই পেস্টটি মচকে যাওয়া জয়েন্টে লাগান এবং একটি কাপড় দিয়ে ব্যান্ডেজ করে রাখুন ১ ঘণ্টা। দেখবেন মচকে যাওয়া জয়েন্টের যন্ত্রণা কমে জয়ার সাথে সাথে ফোলাভাবও কমে আসছে। দ্রুত ভালো ফল পেতে সারাদিন এই ব্যান্ডেজটি লাগিয়ে রাখতে পারেন।

পেটের যে কোন সমস্যা সমাধানে হলুদ

উল্টাপাল্টা খাবার কিংবা বাজে খাদ্যাভ্যাসের কারণে অনেকেই অনেক সময় পেটের সমস্যায় ভোগেন। পেতে ব্যথা, পেট খারাপ ইত্যাদির কারণে অসুস্থ থাকেন অনেকেই। এই সমস্যা সমাধান করবে হলুদ। ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ হেলথ এর মতে ৫০০ মিলি. গ্রাম কাঁচা হলুদ প্রতিদিন ৪ বার খেলে পেটের সকল ধরণের সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব।

বাতের ব্যথা উপশমে হলুদ

একটু বয়স্ক ব্যক্তিরা বাতের ব্যথায় চলাচল করতে অক্ষম হয়ে পড়েন। এই বাতের ব্যথার চিকিৎসাও হলুদ দিয়ে করা সম্ভব। ৫০০ মিলি. গ্রাম কাঁচা হলুদ দিনে ২ বার খেলে হলুদের ‘কারকিউমিন’ বাতের ব্যথা উপশমে কাজ করে। নিয়মিত খেলে বাতের ব্যথা দূর হবে নিমেশেই।

লিভারের সুরক্ষায় হলুদ

অষ্ট্রিয়ার মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটি গ্রাজ এর গবেষকগণের মতে প্রতিদিন কাঁচা হলুদ খাওয়া লিভার পরিস্কারের মত কাজ করে। এতে লিভার সিরোসিসের মত মারাত্মক রোগের হাট থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব। হলুদের ‘কারকিউমিন’ নামক উপাদানের লিভার সিরোসিস প্রতিরোধ করার ক্ষমতা রাখে।

ক্যান্সারের চিকিৎসায় হলুদ

ইউনিভার্সিটি অফ লুইসভিলের গবেষকগণ বলেন, হলুদের রয়েছে স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধ এবং প্রতিকারের ক্ষমতা। ‘কারকিউমিন’ নামক একটি হলুদের উপাদান ক্যান্সার জনিত টিউমারের আকার কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে বলে তারা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছান। তারা আরও বলেন,‘কারকিউমিন’ক্যান্সারে আক্রান্ত টিস্যুর সংখ্যা কমাতে সক্ষম।এছাড়া ইউনিভার্সিটি অফ টেক্সাস এর গবেষকগণ স্কিন ক্যান্সার প্রতিরোধেও হলুদের কার্যকারিতা দেখতে পান। তারা কারকিউমিনকে বর্তমানে ২ মিলিমিটার একটি ক্যাপস্যুলের আকার দিয়েছেন যাতে কারকিউমিন রয়েছে ২০০ মিলিগ্রাম।

মাথার খুশকি সমস্যা সমাধানে হলুদ

সাধারণ খুশকি যখন বেড়ে যায় তখন এটি মারাত্মক আকার ধারন করে ইনফেকশনের সৃষ্টি হয় যা নিরাময় অনেক কষ্টসাধ্য ব্যাপার। কিন্তু হলুদের সাহায্যে সহজে খুশকির সমস্যা সমাধান সম্ভব। নারকেল তেলের সাথে ২/৩ চা চমচ হলুদ মিশিয়ে মাথার ত্বকে ১৫ মিনিট লাগিয়ে রেখে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যাবহারে মাথার ত্বকে পোড়া মোটা খুশকির স্তর দূর হবে ইনফেকশনের কোন ভয় থাকবে না।