ছবি সংগৃহীত

জিহ্বার জ্বলুনি কমানোর পন্থা

সাবেরা খাতুন
লেখক
প্রকাশিত: ৩০ এপ্রিল ২০১৬, ০৫:২৩
আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০১৬, ০৫:২৩

ফটো সোর্স : ahsmiles.co

(প্রিয়.কম)-  সাধারণত খুব বেশি গরম/ঝাল খাবার খেলে বা পানীয় পান করলে জিহবা পুড়ে যায়। কিন্তু স্পষ্ট কোন কারণ যেমন- ডেন্টাল বা ডাক্তারি কোন কারণ ছাড়াই যখন জিহ্বায় জ্বালাপোড়ার অনুভূতি হয় তখন তাকে বার্নিং টাঙ্গ সিন্ড্রোম বলে। জিহ্বার জ্বলনকে বার্নিং মাউথ সিন্ড্রোম বা গ্লোসোডাইনিয়া বা ওরাল ডাইসায়েস্থেসিয়া বা আইডিওপ্যাথিক গ্লোসোপাইরোসিস ও বলে। এর কারণকে দুটি শ্রেণীতে বিভক্ত করা হয়েছে যথা- প্রাইমারী ও সেকেন্ডারি কারণ। প্রাথমিক কারণটি স্বাদ ও সেন্সরি স্নায়ুর সমস্যার সাথে সম্পর্কিত। দ্বিতীয় কারণটি চিকিৎসা সংক্রান্ত কারণ যেমন- শুষ্ক মুখ, মুখের ঘা, পুষ্টির ঘাটতি, খাদ্যের অ্যালার্জি, আলগা দাঁতের দুর্বল ফিটিং, ঔষধের প্রতিক্রিয়ায়, GERD, এন্ডোক্রাইন ডিজঅর্ডার, মানসিক কারণ যেমন- অ্যাংজাইটি, ডিপ্রেশন বা স্ট্রেস।

ডায়াবেটিক রোগীদের ও পোস্ট মেনোপোজাল ষ্টেজে আছেন এমন নারীদের বার্নিং মাউথ সিন্ড্রোম হওয়ার ঝুঁকি বেশি। জিহবাতে পুড়ার অনুভূতির পাশাপাশি অন্য যে উপসর্গগুলো দেখা যায় তা হল- ধাতব বা তিক্ত স্বাদ অনুভূত হতে পারে, মুখের লালার নিঃসরণ স্বাভাবিক থাকা সত্ত্বেও মুখ শুষ্ক অনুভব করা, তৃষ্ণা বৃদ্ধি পাওয়া, স্বাদ কমে যাওয়া এবং জিহ্বা লাল হয়ে ফুলে যাওয়া। এই লক্ষণগুলো হঠাৎ করে দেখা দিতে পারে বা ধীরে ধীরেও বৃদ্ধি পেতে পারে। এই সমস্যাটি বৃদ্ধি পেলে খেতে ও ঘুমাতে সমস্যা হয়, ডিপ্রেশন বা অ্যাংজাইটি হয়। এর থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আপনি একজন ডাক্তারের সাথে কথা বলতে পারেন। উপসর্গের তীব্রতা কমানোর জন্য এবং জটিলতা প্রতিরোধের জন্য ঘরোয়া কিছু উপায় অবলম্বন করতে পারেন, যেমন:

১। ঠান্ডা পানি

যখনই আপনার জিহ্বায় পুড়ার অনুভূতি হবে তখনই ঠান্ডা পানিতে চুমুক দিন। এতে আপনার জিহ্বার স্নায়ু অসাড় হবে জ্বালাপোড়া ও ব্যথা কমবে। আইসক্রিম ও খেতে পারেন।

২। ভিটামিন বি

ভিটামিন বি এর ঘাটতির কারণে মুখ ও জিহ্বার টিস্যু প্রভাবিত হয়। তাই ভিটামিন বি সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে যেমন- আস্ত শস্যদানার পাউরুটি, দুধ, ডিম, দই, পনির, ওটস, ভুষি, অ্যাভোকাডো, কলা ও কলিজা ইত্যাদি।

৩। বেকিং সোডা

অন্য একটি কার্যকরী ঘরোয়া প্রতিকার হচ্ছে বেকিং সোডা। এটি মুখের pH  লেভেলের ভারসাম্য রক্ষা করে। মুখের ইনফেকশনের বিরুদ্ধেও কাজ করে। জিহ্বার জ্বলনের উপসর্গ কমতে সাহায্য করে বেকিং সোডা এবং পরবর্তী জটিলতা প্রতিরোধ করে। ১ গ্লাস উষ্ণ গরম পানিতে ১/২ টেবিল চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে নিন। দিনে কয়েকবার এই মিশ্রণটি দিয়ে গারগল করুন।

৪। মধু

আরেকটি প্রাকৃতিক উপাদান হচ্ছে মধু যা জিহ্বার জ্বলন কমাতে ও ইনফেকশন প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। সরাসরি আপনার জিহ্বায় কাঁচা মধু লাগান। কয়েক মিনিট রেখে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। দিনে কয়েকবার এভাবে লাগান।  

জিহ্বার জ্বলন নির্ণয়ের জন্য নির্দিষ্ট কোন টেস্ট নেই। সবার জন্য একই ধরণের চিকিৎসা পদ্ধতিও কার্যকরী নয়। চিকিৎসক আপনার উপসর্গ দেখে ঔষধ দেবেন যাতে আপনার সমস্যাটির সমাধান হয়।           

লিখেছেন-

সাবেরা খাতুন

ফিচার রাইটার, প্রিয় লাইফ

প্রিয়.কম