ছবি সংগৃহীত
গরমে সুতির পোশাক
আপডেট: ১৯ মে ২০১৬, ১৪:১৩
ছবি: শামছুল হক রিপন। মডেল: রিমু রোজা খন্দকার। পোশাক : কে-ক্রাফট ও ইয়াং-কে। মেকআপ : ওমেন্স ওয়ার্ল্ড ।
(প্রিয়.কম) চলছে গ্রীষ্মের শেষ সময়। কিন্তু গরম কমেনি এখনো। সুন্দর আবহাওয়া হলেও গুমোট একটি গরম থাকছেই। তাই এই গরমে সবচেয়ে উপযুক্ত হচ্ছে সুতি পোশাক। মানুষ এখন সুন্দরের পাশাপাশি সবার আগে চায় নিজের আরামবোধ। পোশাকের ক্ষেত্রেও তাই এর ব্যতিক্রম নয়। আর আরামদায়ক পোশাকের জন্য কেউ কেউ ঢুঁ মারেন বিভিন্ন ফ্যাশন হাউসগুলোতে। কেউ আবার টেইলারের দোকান থেকে তৈরি করে নিচ্ছেন সুতি কাপড়ের বিভিন্ন আরামদায়ক পোশাক।
গরমে সুতির পোশাকের বিকল্প নেই- এই কথা আমরা সবাই জানি। সুতির জামাকাপড় যেমন হালকা হয় তেমনই পরেও আরাম। হাওয়া চলাচল করতে পারে সহজে। শরীর ঠাণ্ডা রাখতে সাহায্য করে। এসব কারণেই সুতির পোশাকই গরমকালের জন্য চরম আরামদায়ক। পাতলা তাঁত ও খাদি কাপড়ের পোশাকও এ সময় পরা যায়। গরম এলেই সুতি কাপড়ের প্রসঙ্গ চলে আসে।
সুতি পোশাক সহজে ঘাম শুষে নেয়। তা ছাড়া প্রাকৃতিক তন্তুর তৈরি বলে মসৃণও হয়। তাই এখন সুতি কাপড়ের পোশাক পরার পরামর্শ দেন সবাই। কৃত্রিম তন্তুর তৈরি কাপড়ের পোশাক এ সময় একেবারেই বাদ দেওয়া ভালো। কারণ গরমের সময় এ কাপড় পরলে ত্বকে অ্যালার্জি হতে পারে। তা ছাড়া এ কাপড় ঘাম শুষে নিতে পারে না, ফলে পোশাকটা শরীরে চিটচিটেভাবে লেগে থাকে; যা অস্বস্তি সৃষ্টির পাশাপাশি দৃষ্টিকটুও।
গরমে পরার শাড়ির ক্ষেত্রেও সুতির ছাপা শাড়ি, ব্লক, অ্যাপ্লিকের শাড়ি বেশ চলছে। ব্লাউজের গলাটা পেছনদিকে বড় ও ম্যাগি হাতা হলে বেশ আরাম পাওয়া যাবে।সাদা নীল শরতের আকাশে রোদের তীব্রতায় আরামের পোশাক হিসেবে সুতি শাড়ির বিকল্প নেই।
বাঙালি নারীর কাছে সুতি শাড়ির কদর সম্পর্কে বলার মতো কিছু নেই। কেননা একমাত্র শাড়িতেই লুকিয়ে আছে বাঙালিয়ানা। তবে গরমে অনেকেই শাড়ি এড়িয়ে চলেন। তারপরও মাঝেমধ্যে শাড়ি না পরলেই নয়। আর এমন পরিস্থিতিতে সব থেকে আরামদায়ক শাড়ি হলো সুতি শাড়ি। দেশীয় সুতি শাড়ি সাজে আনে নতুনত্ব এমনকি আপনাকে ফুটিয়ে তুলে আপন ঢঙে।
গরমের সেলোয়ার কামিজ পোশাকের ধরনেও এসেছে নানা বৈচিত্র্য। তরুণীরা পছন্দ করছে ছোট হাতার লম্বা ফতুয়া, হাতাকাটা কামিজ বা ছোট হাতার শার্ট। সালোয়ারের ক্ষেত্রে ধুতি ও প্যান্ট-ধাঁচের সালোয়ারটা বেশ পছন্দ করছে সবাই। সুতির ছাপা কামিজও খুব চলছে এ সময়। শুধু প্রতিদিনের ব্যবহারে সুতি পোশাক নয়, এখন বিভিন্ন উৎসবে ও অনুষ্ঠানেও সুতির রাজত্ব চলছে। সে ক্ষেত্রে একটু হালকা কারুকাজটা পছন্দ করছেন অনেকেই। তা ছাড়া সুতি অ্যান্ডি কাপড়ের তৈরি পোশাকে বেশ অভিজাত দেখায়। জমকালো অনুষ্ঠান উপলক্ষেও পরা যায়।
যদি কাপড় কিনে টেইলর থেকে বানিয়ে পরতে চান তাহলে ফুল, লতাপাতার বড় ছাপার কাপড়ের কামিজের সঙ্গে এক রঙের সালোয়ার-ওড়না নিয়ে নিতে পারেন। তবে এ সময় একটু ঢিলেঢালা ফিটিংয়ের পোশাক পরাই ভালো।
আর রঙ এর ক্ষেত্রে গরমের পোশাকের ক্ষেত্রে সাদা, হালকা গোলাপি, হালকা বেগুনি, হালকা নীল, বাদামি, আকাশি, হালকা হলুদ, ধূসরসহ হালকা রঙের পোশাকগুলো প্রাধান্য দেয়া উচিত। গরমে সাদা ও অন্যান্য হালকা রঙের পোশাক শুধু তাপ শোষণই করে না, সেই সঙ্গে চোখকে দেয় প্রশান্তি।
নগরের বিভিন্ন দেশীয় বুটিক হাউজগুলোতেই গ্রীষ্মের তৈরি এসব সুতি পোশাক ও শাড়ি পাওয়া যাচ্ছে। দেশীয় ফ্যাশর ঘর, বিবিয়ানা, সাদা-কালো, দেশাল, দেশী দশ, কে-ক্রাফট, অঞ্জনস্, নগরদোলা, যাত্রা, অরণ্য, বাংলার মেলা ইত্যাদিতে বিভিন্ন ধরনের সুতি শাড়ি পাওয়া যাবে। আজিজ সুপার মার্কেটের বিভিন্ন ফ্যাশন হাউসে পাওয়া যাবে সুতি শাড়ি ও সোলোয়ার কামিজ, ফতুয়ার সম্ভার। দামের ক্ষেত্রেও এসব গ্রাহকদের হাতের নাগালে।
সুতি সালোয়ার-কামিজের দামটা শুরু হয়েছে ৫০০ থেকে। ফতুয়া ৩৫০ থেকে, শাড়ি ৫৫০ থেকে। ৫ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকায় পেয়ে যাবেন বিভিন্ন মানের সুতি শাড়ি। তাঁতের ডিজাইনের শাড়িগুলোর দাম পড়বে সাড়ে ৬০০ থেকে ৩ হাজার টাকার মধ্যে। ব্লক করা শাড়ি ও অ্যাপ্লিক, এম্ব্রয়ডারি করা শাড়ির দাম পড়বে দাম ১ হাজার ২০০ থেকে ৩ হাজার টাকা।
সুতি সেলাই ছাড়া সালোয়ার-কামিজের কাপড় পাবেন নিউমার্কেট, চাঁদনীচকসহ নগরের বিভিন্ন শপিং মলে ৩০০ থেকে ৫৫০ টাকায়। প্রিন্টের গজ কাপড় পাবেন ৩৫ থেকে ৬৫ টাকায়, বাটিক গজ কাপড় ৮০ থেকে ১২০ টাকায়। এক রঙের ভয়েল কাপড় ও চায়নিজ পপলিন পাবেন ৪৫ থেকে ১২০ টাকায়। সুতি ও শিফন ওড়না পাবেন ১২০ থেকে ৩৫০ টাকায়।
সর্বপরি, সুতির পোশাকে প্রকাশ পায় এক আভিজাত্য। তবে যত্ন নিতে হবে সুতির পোশাকেরও। যাতে অনেকদিন পর্যন্ত রং ও কোয়ালিটি বজায় থাকে। সুতির জামাকাপড় আরামদায়ক ও দেখতে সুন্দর হলেও রং চটে যাওয়ার ভয় থাকে।
- ট্যাগ:
- ফ্যাশন