যতই আধুনিক খাবার খাওয়া হোক না কেন, দিন শেষে একটুখানি ভাত না খেলে বাঙালির চলে না। দিনে একবার হলেও ভাত খাওয়া চাই-ই চাই। তবে সমস্যা হচ্ছে ওজন বেড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে। অনেকেই আজকাল মুটিয়ে যাবার ভয়ে ভাত খাওয়া একদম বাদ দিয়েছেন। অনেকে আবার প্রয়োজনের চাইতে বেশি ভাত খেয়ে ফেলছেন নানান কারণে। প্রত্যেক বয়সের মানুষের জন্যই আছে ভাতের নির্দিষ্ট পরিমাপ। যদি প্রত্যেকদিন ভাত খাওয়াটা আপনার অভ্যাস হয়ে থাকে, তাহলে অবশ্যই জেনে নিতে হবে এই হিসাবটা। প্রয়োজনের চাইতে বেশি খেলে যেমন মুটিয়ে যাবেন, তেমনই কম খেলে ভুগবেন অপুষ্টিতে।
মনে রাখবেন, চালভেদে ভাতের পুষ্টিগুণের তারতম্য হয়। আধা কাপ ভাতে(চাল নয় কিন্তু) ১২৫ থেকে ১৫০ কিলোক্যালরি পাওয়া যায়। এতে আছে ৭ শতাংশ ফ্যাট, ৮৫ শতাংশ কার্বোহাইড্রেট এবং ৮ শতাংশ প্রোটিন। ভাতে সোডিয়াম বেশি, পটাসিয়াম খুবই কম। তবে ভাত কোলেস্টেরলবর্জিত খাবার। কিন্তু রক্তের লিপিডের একটি উপাদান রয়েছে ট্রাইগি্লসারাইড। ভাত বেশি খেলে এটা বেড়ে যায়।
কোন বয়সে কতটুকু?
সাধারণ অবস্থায় প্রতিটি মানুষের জীবনের কয়েকটি পর্যায় রয়েছে। নবজাতক, শৈশব, কৈশোর, যৌবন, প্রৌঢ় ও বার্ধক্য। দেহের চাহিদা, রক্ষণাবেক্ষণ ও কাজের ওপর ভিত্তি করে পুষ্টি উপাদান একেক সময় একক রকম হয়। সাধারণত শর্করাজাতীয় খাবারের চাহিদা বৃদ্ধি পায় কাজের রকমের ওপর। যাঁদের শারীরিক পরিশ্রম বেশি, তাঁদের কার্বোহাইড্রেট বেশি প্রয়োজন হয়। যাঁদের টেবিলে বসে কাজ, তাঁরা ভাত কম খাবেন। আটার রুটি, ওটসসহ চিনি ছাড়া করনফ্লেক্স, পাসতা, স্প্যাগেটি, ম্যাকারনি, জবের ছাতু ইত্যাদি খাবেন।
শৈশব :
এ সময় এক থেকে দেড় কাপ ভাত প্রয়োজন। বয়সের সাথে সাথে আস্তে আস্তে বাড়বে।
বাল্য :
সারা দিনের জন্য ৩ থেকে ৪ কাপ যথেষ্ট।
বয়ঃসন্ধিকালের শুরুতে :
সারাদিনের জন্য ৫ থেকে ৭ কাপ ভাত প্রয়োজন।
কিশোর-কিশোরী :
সারা দিনের জন্য ৬ থেকে ৮ কাপ ভাত দরকার।
প্রাপ্তবয়স্ক :
এই বয়সে সময় এক দিনের জন্য ৮ থেকে ১২ কাপ ভাত প্রয়োজন।
বৃদ্ধ :
এই বয়সে দৈনিক ছয় কাপ প্রয়োজন।
তথ্য সুত্র- পুষ্টিবিদ শামিমা আরা বেগমের লেখা গ্রন্থ
উল্লেখ্য যে-
১ কাপ বলতে চায়ের কাপের এক কাপ বোঝানো হয়েছে। মেজারিং কাপ নয়। যারা শর্করা ও শ্বেতসার জাতীয় খাবার বেশি পরিমাণে খেয়ে থাকেন, (যেমন বিস্কুট, নুডুলস, পাস্তা ও অন্যান্য খাবার) তাদের ক্ষেত্রে পরিমাণটা আরও কমিয়ে দিতে হবে।