
ছবি সংগৃহীত
কে বড়, ওসি না এসআই?
আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০১৫, ১৯:০০
(ইনকিলাব) : রাজধানীর ওয়ারী থানার সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) ওমর আলীর অত্যাচার নির্যাতনে এলাকাবাসী অতিষ্ট হয়ে উঠছে। মাদক ব্যবসা ফুটপাতে চাঁদাবাজি, বিনা কারণে সাধারণ মানুষকে আটক করে অর্থ আদায়সহ ব্যাপক অভিযোগ পাওয়া গেছে তার বিরুদ্ধে। ওয়ারী থানার একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, এসআই ওমর আলী ওসি ডিসিকেও পাত্তা দেন না। মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ঢাকা মেট্রো পলিটনের গেন্ডারিয়া থানা থেকে ইতোপূর্বে তাকে বদলী করা হয়। ওয়ারী জোনের টিআই তার বিরুদ্ধে গত কয়দিন আগে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ হলো ফুটপাতের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করার। এ ব্যাপারে প্রতিবাদ করায় কয়েকদিন আগে ওই টিআইকে সে হুমকি দিয়েছে। একটি সূত্র জানায়, গত ৪/৫ দিন আগে এসআই ওমর আলী ওয়ারী এলাকার মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে একটি গোপন বৈঠক করে। তাদের মাদক ব্যবসার সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নগদ অর্থ হাতিয়ে নেয়। এ ছাড়া সে প্রতিদিন ওই এলাকার সকল ফুটপাতের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নগদ অর্থ হাতিয়ে নেয়। প্রতিদিন দুই টাকা করে না দিয়ে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ফুটপাতে বসতে দেয় না। এ অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী। ফলবিক্রতাসহ ফুটপাতের হকাররা। এছাড়া গেন্ডারিয়া থানায় থাকাকালীন ধূপখোলা মাঠ এলাকায় মাদক ব্যবসায়ী জোহা ও রবিনকে সঙ্গে নিয়ে পুরো এলাকায় মাদক ব্যবসার বিস্তার ঘটায়। জোহা ও রবিন ওই এলাকার বড় ধরনের মাদক ব্যবসায়ী। এলাকার যুব সমাজ থেকে শুরু করে উঠতি বয়সের তরুণরা মাদকের নেশায় জড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসী ওই ২ মাদক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে মিছিল ও বিক্ষোভ করে। পরে এলাকাবাসী জানতে পারেন ওই মাদক ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা করেন এসআই ওমর আলী। এলাকাবাসী অতিষ্ট হয়ে এসআই ওমর আলীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করে। এক পর্যায় গেন্ডারিয়া থানা থেকে তাকে বদলি করা হয় ওয়ারী থানায়। বর্তমানে সে ওয়ারী থানা এলাকাতে পুনরায় মাদক ব্যবসায়ীদের সহযোগী হিসাবে কাজ শুরু করেছে। গত কয়েকদিন আগে ফুটপাতে চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে ট্রাফিক পুলিশের টিআই আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে এসআই ওমর আলীর ঝগড়া হয়। এক পর্যায় টিআই সানোয়ার হোসেন বাধ্য হন তার বিরুদ্ধে থানায় জিডি করতে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে এসআই ওমর আলী বলেন, ভাই আমি গত ৪ মাস ধরে ওয়ারী থানায় আছি। এখন যৌথ অভিযান চলছে আমাকে অভিযানে যেতে হয়। তাই অনেককেই আটক করতে হয়। পরে যাচাই বাছাই করে ছেড়ে দেই। কোন টাকা পয়সা নেই না। ওমর আলী আরো বলেন, আমি যা করি তার সব কিছুই থানার ওসি জানেন। এমনকি ডিসি স্যারও জানেন। ফুটপাতের চাঁদাবাজি নিয়ে টিআই সানোয়ার হোসেনের সাথে দ্বন্দ্বের কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, টিআই লোক ভাল নয়, সে নিজেই একটা চাঁদাবাজ। এস আই ওমর আলীর বিভিন্ন কর্মকাণ্ড নিয়ে ওয়ারী থানায় ওসিসহ পুলিশের সকল কর্মকর্তাই বিরক্ত। এসআই ওমর আলী সম্পর্কে জানতে চাইলে ওসি তপন চন্দ্র সাহা বলেন, “ভাই সব পেশাতেই ২/৩ জন দুষ্টু লোক থাকে। সে অনেক সময় থানার মুন্সির কাছ থেকে পুরানো মামলার ওয়ারেন্ট নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় চলে যায়। ওসি আরো বলেন, অনেক সময় আমার নলেজে না দিয়েও সে বিভিন্ন স্থানে আসামী ধরার নাম করে চলে যায়। এতে করে আমাকে বেকায়দায় পড়তে হয়। তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। অভিযোগকারীরা বলেন, ওয়ারী থানার ওসি তাপস চন্দ্র সাহা যোগদান করার পর থেকে মাদক ব্যবসা কমে গেছে। তিনি খুব ভাল লোক। বিনা কারণে কাউকে হয়রানি করার কোন অভিযোগ এখন পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে পাওয়া যায় নি। ফুটপাতের একাধিক ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এসআই ওমর আলী ওসি স্যারের আদেশ নির্দেশ শুনে না, সে খুবই বেপরোয়া । তারা জানান, ওমর আলীর বাড়ী চাঁপাইনবাবগঞ্জ। পুলিশে যোগদানের পর থেকে তার কোন ভাল রেকর্ড নেই। তার কর্মকাণ্ড দেখে এলাকাবাসী প্রশ্ন তুলেছেন, থানার ওসি বড় না এসআই বড়। সৌজন্যে: ইনকিলাব
- ট্যাগ:
- বাংলাদেশ
- ঢাকা
- পুলিশ
- ওয়ারী থানা