
ছবি সংগৃহীত
কিতাবুল ইমান : প্রবন্ধ নং- ১০ : ফেরেশতার প্রতি ঈমান
প্রকাশিত: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৪, ১১:৫০
আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৪, ১১:৫০
আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৪, ১১:৫০
ফেরেশতার প্রতি ঈমান
ঈমানের রোকনসমূহের একটি হলো ফেরেশতার প্রতি ঈমান। ফেরেশতার প্রতি ঈমানের অর্থ হলো- এ দৃঢ় বিশ্বাস পোষণ করা যে আল্লাহ তাআলার ফেরেশতা রয়েছে, যারা নূর দ্বারা সৃষ্ট, যারা আল্লাহর কোনো নির্দেশই অমান্য করেন না এবং আল্লাহ তাআলা তাদের যে দায়িত্বে নিয়োজিত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন, তারা তা যথার্থরূপে পালনরত। [দেখুন আল আস-ইলা ওয়াল আজওয়েবা আল উসূলিয়া: পৃ: ২১] ফেরেশতা হলো আল্লাহ তাআলার এক প্রকার মাখলুক। তাঁদের অস্তিত্ব এবং কোরান-সুন্নাহয় তাদের যেসব গুণাবলি ও কর্মের কথা উল্লিখিত আছে তার প্রতি কোনো কমবেশ ও বিকৃতিসাধনের আশ্রয়ে না গিয়ে, ঈমান না-আনলে কারও ঈমানই শুদ্ধ হবে না। আল্লাহ তাআলা বলেন , آَمَنَ الرَّسُولُ بِمَا أُنْزِلَ إِلَيْهِ مِنْ رَبِّهِ وَالْمُؤْمِنُونَ كُلٌّ آَمَنَ بِاللَّهِ وَمَلَائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ لَا نُفَرِّقُ بَيْنَ أَحَدٍ مِنْ رُسُلِهِ وَقَالُوا سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا غُفْرَانَكَ رَبَّنَا وَإِلَيْكَ الْمَصِيرُ ‘রাসূল তার নিকট তার রবের পক্ষ থেকে নাযিলকৃত বিষয়ের প্রতি ঈমান এনেছে, আর মুমিনগণও। প্রত্যেকে ঈমান এনেছে আল্লাহর উপর, তাঁর ফেরেশতাকুল, কিতাবসমূহ ও তাঁর রাসূলগণের উপর, আমরা তাঁর রাসূলগণের কারও মধ্যে তারতম্য করি না। আর তারা বলে, আমরা শুনলাম এবং মানলাম। হে আমাদের রব! আমরা আপনারই ক্ষমা প্রার্থনা করি, আর আপনার দিকেই প্রত্যাবর্তনস্থল’- (সূরা আর বাকারা , ২৮৫)। সহিহ বুখারি ও মুসলিমে ওমর (রাযি.) থেকে বর্ণিত হাদিসে জিবরিলে এসেছে। ‘ঈমান কি?’ জিবরীল আলাইহিস সালামের এ প্রশ্নের জবাবে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,‘তুমি আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফেরেশতাদের প্রতি, তাঁর কিতাবসমূহের প্রতি, তাঁর রাসূলগণের প্রতি, শেষ দিবসের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করবে এবং ভাগ্যের ভালোমন্দের প্রতিও বিশ্বাস স্থাপন করবে।’ [বুখারি ও মুসলিম] ফেরেশতাদের অস্তিত্ব অকাট্য দলিল দ্বারা প্রমাণিত, এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই। এ কারণেই ফেরেশতাদের অস্তিত্ব অস্বীকার করা আল কোরান ও মুসলমানদের ঐকমত্য অনুযায়ী কুফরি। ইরশাদ হয়েছে , وَمَنْ يَكْفُرْ بِاللَّهِ وَمَلَائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ وَالْيَوْمِ الْآَخِرِ فَقَدْ ضَلَّ ضَلَالًا بَعِيدًا ‘আর যে ব্যক্তি আল্লাহ, তাঁর ফেরেশতাগণ, তাঁর কিতাবসমূহ, তাঁর রাসূলগণ এবং শেষ দিনকে অস্বীকার করবে, সে ঘোর বিভ্রান্তিতে বিভ্রান্ত হবে’-(সূরা আন-নিসা , ১৩৬)। কোরান হাদিসের যেসব জায়গায় ফেরেশতা, তাদের গুণাবলি, কর্ম ও অবস্থা সম্পর্কে কথা এসেছে, তা ঘেঁটে দেখলে বুঝা যায় যে, তা অধিকাংশ ক্ষেত্রে আল্লাহর সঙ্গে ফেরেশতাদের সম্পর্ক, মানুষ ও মহাবিশ্বের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক বিষয়ে আলোচনা করেছে। অর্থাৎ আল্লাহ তাআলা ফেরেশতাদের এমন বিষয়গুলোই আমাদের জানিয়েছেন, যা অন্তর পবিত্রকরণ ও আমল শুদ্ধিকরণের জন্য আমাদের প্রয়োজন। তবে ফেরেশতার হাকীকত কী, আল্লাহ তাদের কীভাবে সৃষ্টি করেছেন, তাদের বিস্তারিত অবস্থা কী, এ সব বিষয়ের জ্ঞান আল্লাহ তাআলা নিজের কাছেই রেখে দিয়েছেন। বরং ইসলামী আকীদার এটি একটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য যে তা মহাবৈশ্বয়িক বাস্তবতার পরিচিতি ঠিক সে-পরিমাণেই উল্লেখ করেছে যে পরিমাণ মানুষের মেধাবুদ্ধি ধারণ করতে পারবে এবং তাদের ইহ-পরকালীন অবস্থার পরিশুদ্ধিতে উপকারী হবে। অতএব আল্লাহ তাআলা আমাদের সকল অদৃশ্য বিষয়গুলো জানাননি, হোক তা তাঁর সত্তা, গুণাবলি ও নাম বিষয়ক, অথবা অদৃশ্য সৃষ্টিজীব বিষয়ক। সে হিসেবে একজন মুমিন, আল্লাহ তাআলা যেসব বিষয়ের সংবাদ দিয়েছেন তার সবগুলির প্রতিই সংক্ষিপ্ত অথবা বিশ্লিষ্ট আকারে ঈমান আনে এবং এ ক্ষেত্রে কোরান-সুন্নাহয় যা বর্ণিত আছে তাতে কোনো কমবেশ করে না । উপরন্তু যেসব বিষয় জানানো হয়নি তাতে ঘাঁটাঘাঁটি করতেও যায় না, তা আলোচনার বিষয় বানায় না। মূল : ড. মুহাম্মাদ নাঈম ইয়াসিন বাংলা অনুবাদ : ড. মাওলানা শামসুল হক সিদ্দিক- ট্যাগ:
- পাঁচ স্তম্ভ
- ইসলাম
- কালিমা
- ঈমান
- কিতাবুল ইমান
- ফেরেশতা
৩ মিনিট আগে
৮ মিনিট আগে