ছবি সংগৃহীত

কাশির সাথে রক্ত আসার সম্ভাব্য কারণ ও চিকিৎসা

সাবেরা খাতুন
লেখক
প্রকাশিত: ০৮ এপ্রিল ২০১৬, ১৫:২৯
আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০১৬, ১৫:২৯

ফটো সোর্স : caughingupblaood.net

(প্রিয়.কম)-  রক্ত কাশি অর্থাৎ কফের সাথে যদি রক্ত আসে তাহলে তা খুবই ভয়ের অভিজ্ঞতা সৃষ্টি করে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় একে হিমপটোসিস বলে। ফুসফুস বা গলা থেকে রক্ত বা রক্ত মিশ্রিত মিউকাস ছিটকে বাহির হয়ে আসে। কাশির সাথে রক্ত আসার সম্ভাব্য কারণ সমূহ হচ্ছে : 

·         ব্রংকাইটিস

·         ফুসফুস ক্যান্সার বা নন-মেলিগ্নেন্ট ফুসফুস টিউমার

·         রক্ত পাতলা করার জন্য অ্যান্টিকোয়াগোলেশন ব্যবহার

·         নিউমোনিয়া

·         পালমোনারি এম্বোলিজম

·         কঞ্জেস্টিভ হার্ট ফেইলিওর

·         টিউবারকোলোসিস

·         ইনফ্লামেটরি অথবা অটোইমিউন কন্ডিশন

·         পালমোনারি আরটারিওভেনাস মালফরমেশন

·         দৈহিক আঘাত যেমন- গুলি লাগা বা দুর্ঘটনা  

·         ডাইইউলিফয় ডিজিজ

এছাড়াও ফুসফুসের বাহির থেকেও রক্তপাত হতে পারে। মারাত্মক আকারে নাক দিয়ে রক্ত পড়া বা রক্ত বমি হয় যখন পাকস্থলী থেকে রক্ত শ্বাসনালীতে চলে আসে এবং কফ আকারে বের হয়। অনেক মানুষের ক্ষেত্রেই হিমোসটোসিসের সঠিক কারণ চিহ্নিত করা যায়না।

টেস্ট

রক্তপাতের হাড় ও শ্বাসঝুঁকির কথা চিন্তা করেই পরীক্ষা করা হয়। তখন  হেমিপটোসিসের কারণ চিহ্নিত করা যায়। যে টেস্টগুলো করানো হয় তা হল

·         এক্সরে

·         কম্পিউটেড টমোগ্রাফি বা সিটি স্কেন

·         ব্রংকসকপি

·         কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট(CBC)

·         ইউরিনএলাইসিস বা ইউরিন টেস্ট  

·         ব্লাড কেমিস্ট্রি প্রোফাইল

·         কোয়াগোলেশন টেস্ট

·         আরটেরিয়াল ব্লাড গ্যাস

·         পালস অক্সিমেট্রি

চিকিৎসা

রক্ত কাশির চিকিৎসার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে রক্ত বন্ধ করা ও এর অন্তর্নিহিত কারণ নির্মূলের চেষ্টা করা। চিকিৎসা পদ্ধতি গুলো হচ্ছে

·         ব্রংকিয়াল আরটারি এম্বোলাইজেশন- এই পদ্ধতিতে ফুসফুসে রক্ত সরবরাহকারী কোন ধমনীতে রত্তপাত হচ্ছে তা নির্ণয় করে মেটাল কয়েল বা অন্য কিছু দিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ ধমনীটিকে ব্লক করা হয়। এতে রক্তপাত বন্ধ হয়।  

·         ব্রংকসকপি- এন্ডোস্কপির মতোই ব্রংকসকপিতে রক্তপাতের কারণ নির্ণয় করে সমাধান করা যায় যেমন- শ্বাসনালীর ভেতরে একটি বেলুন স্থাপন করে রক্তপাত বন্ধ করা হয়।

·         অপারেশন- যদি রক্তপাত জীবন সংশয়কারী হয় তাহলে ফুসফুসের অংশবিশেষ ফেলে দেয়ার প্রয়োজন হতে পারে।

এছাড়াও আরও কিছু চিকিৎসা হচ্ছে-

·         নিউমোনিয়া বা টিউবারকোলসিসের জন্য অ্যান্টিবায়টিক সেবন

·         ফুসফুস ক্যান্সারের জন্য কেমোথেরাপি বা রেডিয়েশন ব্যবহার

·         প্রদাহজনিত কারণে স্টেরয়াড ব্যবহার করা

কখন ডাক্তারের কাছে যাওয়া অত্যাবশ্যকীয়

·         মিউকাসের সাথে রক্ত আসা যদি এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে থাকে তাহলে জরুরী ভিত্তিতে ডাক্তারের শরণাপন্ন হোন।

·         বুকে ব্যথা

·         ওজন কমে যাওয়া

·         রাতের বেলায় শরীর ঘামে ভিজে গেলে

·         ১০১ ডিগ্রীর উপরে জ্বর থাকলে

·         স্বাভাবিক কাজের সময়ও শ্বাসকষ্ট হওয়া

রক্তবমি বা রক্তকাশির চিকিৎসায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হাসপাতালে থেকে চিকিৎসা নেয়ার প্রয়োজন হতে পারে।

লিখেছেন-

সাবেরা খাতুন

ফিচার রাইটার, প্রিয় লাইফ

প্রিয়.কম