ছবি সংগৃহীত

এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলের যত খবর

priyo.com
লেখক
প্রকাশিত: ০৩ আগস্ট ২০১৩, ১৪:১০
আপডেট: ০৩ আগস্ট ২০১৩, ১৪:১০

এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় এবার গড় পাসের হার ৭৪ দশমিক ৩০ শতাংশ। মোট জিপিএ ৫ পেয়েছে ৫৮ হাজার ১৯৭ জন। ঢাকা বোর্ডে পাসের হার ৭৪ দশমিক শূন্য ৪, সিলেটে ৭৯ দশমিক ১৩, চট্টগ্রামে ৬১ দশমিক ২২, যশোরে ৬৭ দশমিক ৪৯, বরিশালে ৭১ দশমিক ৬৯, রাজশাহীতে ৭৭ দশমিক ৬৯, দিনাজপুরে ৭১ দশমিক ৯৪ ও কুমিল্লায় ৬১ দশমিক ২৯ শতাংশ। এ ছাড়া মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে ৯১ দশমিক ৪৬ ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে ৮৫ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছে। মোট পাস করেছে সাত লাখ ৪৪ হাজার ৮৯১ জন শিক্ষার্থী। শনিবার সকাল ১০টার দিকে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের নেতৃত্বে শিক্ষা বোর্ডগুলোর চেয়ারম্যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ফলের কপি হস্তান্তর করেন। বেলা একটায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে আনুষ্ঠানিকভাবে ফল ঘোষণা করেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। বেলা দুইটায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পরীক্ষার কেন্দ্র, ওয়েবসাইট ও মুঠোফোনের মাধ্যমে ফল পাওয়া যাবে। পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৬০ দিনের মাথায় ফল প্রকাশ করা হচ্ছে। এবার পরীক্ষার্থী ছিল ১০ লাখের বেশি।

৪ থেকে ১৩ আগস্ট পর্যন্ত ফলাফল পুনঃনিরীক্ষণ

প্রকাশিত এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল পুনঃনিরীক্ষণের জন্য রোববার থেকেই আবেদন করা যাবে। আগামী ১৩ আগস্ট অবধি ফলাফল পুনঃনিরীক্ষণের এ আবেদন প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে। ফল পুনঃনিরীক্ষণে শুধু টেলিটক প্রিপেইড কানেকশন থেকে মেসেজ অপশনে গিয়ে RSC লিখে স্পেস দিয়ে বোর্ডের প্রথম তিন অক্ষর, স্পেস দিয়ে রোল নম্বর, আবারও স্পেস দিয়ে বিষয় কোড লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে। এক্ষেত্রে প্রতিটি বিষয় ও পত্রের জন্য ১৫০ টাকা ফি নেওয়া হবে। এ ছাড়াও দুই পত্রের বিষয়গুলোর জন্য ফি হিসেবে ৩০০ টাকা কেটে নেওয়া হবে। পাঠানো এসএমএস’র ফিরতি এসএমএসে টাকা কেটে নেওয়ার তথ্য জানিয়ে পিন নম্বর দেওয়া হবে। এরপর আবেদনে রাজি থাকলে আবারও মেসেজ অপশনে গিয়ে RSC লিখে স্পেস দিয়ে YES লিখে স্পেস দিয়ে পিন নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে কনট্যাক্ট নম্বর লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে। একই এসএমএস’র মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে বিষয় কোড লিখে একাধিক বিষয়ের আবেদন করা যাবে।

ফল বিপর্যয়ের দায় পরীক্ষার্থীদের নয়, বিরোধীদলের: হাসিনা

বিরোধীদলের রাজনৈতিক কর্মসূচির ফলে এবার এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাসের হার ও জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে গেছে বলে দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গণভবনে শনিবার সকালে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের কাছ থেকে ফলাফল জেনে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, "এই দায় তাদের (পরীক্ষার্থীদের) নয়, এই দায় বিএনপি-জামায়াত-শিবিরের। আমি জানতে চাই, তারা (বিরোধীদল) এতে কী পেল?"

পাসের হার কমেছে রাজনৈতিক অস্থিরতা কারণে : শিক্ষামন্ত্রী

গতবারে চেয়ে পাসের হার কমে যাওয়ায় হরতালসহ রাজনৈতিক অস্থিরতাকে দায়ী করলেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। শনিবার দুপুরে সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিক সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা বলেন। শিক্ষমন্ত্রী বলেন, “একটি পরীক্ষা বাদে সব পরীক্ষার সময় কোনো না কোনো স্থানে হরতাল ছিল। এর মধ্যে জাতীয়ভাবে হরতাল ছিল নয় দিন। অন্যান্য দিনেও স্থানীয়ভাবে হরতাল ছিল। এর কারণে চট্রগ্রাম বোর্ডের ইংরেজি পরীক্ষার তারিখ চার বার পরিবর্তনসহ ৩২টি বিষয়ের তারিখ পরিবর্তন করা হয়েছে। ফলে পরীক্ষার্থীরা মানসিক অশান্তিতে ভোগায় তাদের ফলাফল খারাপ হয়েছে।”

ফলাফলে সেরা দশ: শীর্ষে রাজউক কলেজ

এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় দেশসেরা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় অবস্থান অক্ষুণ্ন রেখেছে রাজধানীর রাজউক উত্তরা মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং নরসিংদীর আব্দুল কাদির মোল্লা সিটি কলেজ। একইসঙ্গে গত বছরের ধারাবাহিকতায় এবারও সারা দেশে সেরা ১০ প্রতিষ্ঠানের প্রথম চারটি ঢাকা বোর্ডের। পরীক্ষার্থী, পাসের হার ও জিপিএ-৫ প্রাপ্তির ভিত্তিতে আন্তঃশিক্ষা বোর্ডের মানদণ্ডে দেশসেরা ফল করা ঢাকা বোর্ডের রাজউক উত্তরা মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের মোট পয়েন্ট ৯৭ দশমিক ২৯ । এ প্রতিষ্ঠানের ১ হাজার ২১৮ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে একজন বাদে সবাই পাস করেছে। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ হাজার ১২৭ জন। ওই মানদণ্ডে ৯২ দশমিক ৯৬ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে নরসিংদীর আব্দুল কাদির মোল্লা সিটি কলেজ। এ প্রতিষ্ঠানের ৩৭৮ জন পরীক্ষার্থীর সবাই পাস করেছ; জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩৩৩ জন। তৃতীয় অবস্থানে ঢাকার ভিকারুন্নিসা নুন স্কুল অ্যান্ড কলেজের পয়েন্ট ৯২ দশমিক ৫২ । এ প্রতিষ্ঠানের এক হাজার ৩৪৭ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে দুইজন বাদে সবাই পাস করেছে। জিপিএ-৫ পেয়েছে এক হাজার ৩৫জন। আর ঢাকার রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের অবস্থান এবার সারা দেশে চতুর্থ। তাদের পয়েন্ট ৯০ দশমিক ৭২। এ প্রতিষ্ঠান থেকে অংশগ্রহণকারী ৬৬২ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ফেল করেছে দুই জন। আর জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪৮৭ জন পরীক্ষার্থী। সেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্বাচনের জন্য নিবন্ধিত শিক্ষার্থীর মধ্যে নিয়মিত পরীক্ষার্থীর শতকরা হার, পাসের হার, মোট শিক্ষার্থীর মধ্যে জিপিএ-৫ প্রাপ্তির হার, পরীক্ষার্থীর সংখ্যা এবং প্রতিষ্ঠানের গড় জিপিএ- এই পাঁচটি সূচক মূল্যায়ন করা হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানান। এই বিচারে রাজশাহী কলেজ ৯০ দশমিক ৪৭ পয়েন্ট নিয়ে পঞ্চম স্থানে রয়েছে। আর ৯০ পয়েন্ট নিয়ে যৌথভাবে ষষ্ঠ অবস্থানে আছে সাতটি ক্যাডেট কলেজ। এগুলো হলো ময়মনসিংহ গার্লস ক্যাডেট কলেজ, রাজশাহী ক্যাডেট কলেজ, পাবনা ক্যাডেট কলেজ, ফেণী গার্লস ক্যাডেট কলেজ, ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজ, ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজ, বরিশাল ক্যাডেট কলেজ এবং রংপুর ক্যাডেট কলেজ। এছাড়া ৮৯ দশমিক ৮৪ পয়েন্ট নিয়ে রংপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ সপ্তম, ৮৯ দশমিক ৬৮ পয়েন্ট নিয়ে ঢাকা নটরডেম কলেজ অষ্টম, ৮৯ দশমিক ৪৩ পয়েন্ট নিয়ে সিলেট ক্যাডেট কলেজ নবম এবং ৮৮ দশমিক ৭৫ পয়েন্ট নিয়ে ঢাকার ক্যামব্রিয়ান কলেজ দশম স্থানে রয়েছে।

পাসের হারে এগিয়ে মাদরাসা বোর্ড

বরাবরের মতো এবারো পাসের হার সবচেয়ে বেশি মাদরাসা বোর্ডে। দ্বিতীয় অবস্থানে কারিগরি বোর্ড। এবার মাদ্রাসা বোর্ডে ৯১ দশমিক ৪৬ শতাংশ শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছে। আর কারিগরি বোর্ডে পাস করেছে ৮৫ দশমিক ০৩ শতাংশ। গতবার মাদরাসা বোর্ডে পাসের হার ছিল ৯১ দশমিক ৭৭ শতাংশ, আর কারিগরি বোর্ডে ৮৪ দশমিক ৩২ শতাংশ। সাধারণ বোর্ডের মধ্যে সিলেটে ৭৯ দশমিক ১৩ শতাংশ, রাজশাহীতে ৭৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ, ঢাকা বোর্ডে ৭৪ দশমিক ০৪ শতাংশ, দিনাজপুরে ৭১ দশমিক ৯৪ শতাংশ, যশোরে ৬৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ, কুমিল্লায় ৬১ দশমিক ২৯ শতাংশ, চট্টগ্রামে ৬১ দশমিক ২২ শতাংশ শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছে।

আট সাধারণ শিক্ষাবোর্ডে সেরা সিলেট

২০১৩ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় গড়ে উত্তীর্ণ হয়েছে ৭৪ দশমিক ৩০ শতাংশ শিক্ষার্থী। এর মধ্যে সিলেট বোর্ডে পাসের হার ৭৯ দশমিক ১৩ শতাংশ। শনিবার সিলেট বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. আবদুল মান্নান খান আনুষ্ঠানিকভাবে ফল ঘোষণা করেন। তিনি জানান, সিলেট বোর্ডে এবার ৪২ হাজার ৯৮০ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ৩৪ হাজার ৯ জন। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ হাজার ৫৩৫ জন। সার্বিক ফলে শীর্ষস্থান ধরে রাখলেও এবার জিপিএ-৫ প্রাপ্তদের সংখ্যা কমেছে ৫৩০টি।

এবার এগিয়ে ছেলেরা

এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় এবার জিপিএ ৫ ও পাসের হারে মেয়েদের চেয়ে ছেলেরা এগিয়ে। এবার মোট জিপিএ ৫ পেয়েছে ৫৮ হাজার ১৯৭ জন। এর মধ্যে ছেলে ৩১ হাজার ৬৩৮ আর মেয়ে ২৬ হাজার ৫৫৯ জন। এছাড়া এবার ছেলে পাস করেছে পাঁচ লাখ ৩০ হাজার ছয়জন। পাসের হার ৭৪.৩২ শতাংশ। অন্যদিকে মেয়ে পাস করেছে চার লাখ ৭২ হাজার ৪৯০ জন, পাসের হার ৭০.২৯ শতাংশ। পরীক্ষায় আটটি সাধারণ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে এবার অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১০ লাখ দুই হাজার ৪৯৬ জন। এর মধ্যে পাস করেছে সাত লাখ ৪৪ হাজার ৮৯১ জন। পাসের হার ৭৪.৩০ শতাংশ।

ঢাকার সেরা ২০

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে সেরা ২০-এর তালিকায় এবারো সেরা রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে নরসিংদীর আব্দুল কাদির মোল্লা সিটি কলেজ আর তৃতীয় অবস্থানে ভিকারুননিসা কলেজ। এরপরে চতুর্থ অবস্থানে রেসিডেনশিয়াল মডেল কলেজ, পঞ্চম অবস্থানে ময়মনসিংহ গার্লস ক্যাডেট কলেজ, ৬ষ্ঠ অবস্থানে নরটডেম কলেজ, সপ্তম অবস্থানে গুলশানের ক্যামব্রিয়ান কলেজ, ৮ম অবস্থানে মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজ, নবম অবস্থানে হলিক্রস এবং দশম অবস্থানে রয়েছে ঢাকা কলেজ।
১১ থেকে ২০তম স্থান অধিকারী কলেজগুলো হচ্ছে- খিলগাঁওয়ের ন্যাশনাল আইডিয়াল কলেজ, মিরপুরের এসওএস হারমান মেইনার কলেজ, ঢাকা সেনানিবাসের আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ, লালবাগের বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজ, ডেমরার শামসুল হক খান স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ধানমন্ডির ঢাকা সিটি কলেজ, মিরপুরের ঢাকা কমার্স কলেজ, মতিঝিলের আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ময়মনসিংহের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম কলেজ ও উত্তরার ট্রাস্ট কলেজ।

চট্টগ্রামের সেরা ২০

শিক্ষামন্ত্রণালয় নির্ধারিত পাঁচ ক্যাটাগরিতে ২০১৩ সালের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় (এইচএসসি) চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে সেরা ২০ কলেজ নির্ণয় করেছে কর্তৃপক্ষ। বোর্ডে প্রথম স্থানে আছে ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজ। দ্বিতীয় চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ। তৃতীয় হয়েছে সরকারি বাণিজ্য কলেজ এবং ইস্পাহানী পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ চতুর্থ হয়েছে। এছাড়া চিটাগাং পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ পঞ্চম, ষষ্ঠ সরকারি হাজী মুহম্মদ মহসীন কলেজ, সপ্তম স্থানে চট্টগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজ এবং চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজ অষ্টম স্থান অর্জন করেছে। নৌ বাহিনী কলেজ নবম হয়েছে। দশম হয়েছে কক্সবাজার সরকারি কলেজ। ১১তম আছে ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ। ক্রমানুসারে ১২তম বিএএফ শাহীন কলেজ, ১৩তম পটিয়া সরকারি কলেজ, ১৪তম চট্টগ্রাম ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটি স্কুল এন্ড কলেজ, ১৫তম বাংলাদেশ মহিলা সমিতি স্কুল এন্ড কলেজ, চিটাগং কলেজিয়েট স্কুল, ১৭তম আগ্রাবাদ মহিলা কলেজ। এছাড়া কাপাসগোলা সিটি করপোরেশন মহিলা কলেজ ১৮তম, ১৯তম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ এবং হাজেরা তজু ডিগ্রি কলেজ ২০ তম স্থান দখল করেছে।

রাজশাহীর সেরা ২০

এইচএসসি পরীক্ষায় ফলাফল ভালো করায় রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে সেরা ২০ কলেজের মধ্যে প্রথম স্থান দখল করেছে রাজশাহী কলেজ। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে পাবনা ক্যাডেট কলেজ ও রাজশাহী ক্যাডেট কলেজ। তৃতীয় হয়েছে জয়পুরহাট গার্লস ক্যাডেট কলেজ। বগুড়া ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজের অবস্থান চতুর্থ। রাজশাহী সরকারি নিউ ডিগ্রি কলেজের অবস্থান পঞ্চম। ষষ্ঠ অবস্থানে রয়েছে বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজ। নাটোরের কাদিরাবাদ ক্যান্টনমেন্ট সাপার কলেজ এবার বোর্ডে সপ্তম স্থান দখল করেছে। অস্টম অবস্থানে রয়েছে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া বিজ্ঞান কলেজ। নবম সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজ। দশম অবস্থানে রয়েছে পাবনার শহীদ বুলবুল কলেজ। ১১তম স্থানে রাজশাহী সরকারি সিটি কলেজ। ১৪তম স্থানে বগুড়ার এসওএস হারভাইজিভিনিয়া কলেজ। ১৫তম পাবনার বেড়া উপজেলার আল হেরা একাডেমি স্কুল অ্যান্ড কলেজ। ১৬তম নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজ। ১৭তম পাবনা সরকারি মহিলা কলেজ। ১৮তম যৌথভাবে রাজশাহী সরকারি মহিলা কলেজ ও জয়পুরহাট সরকারি কলেজ। ১৯তম বগুড়া শেরপুর উপজেলার পল্লী উন্নয়ন একাডেমি ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং ২০তম স্থানে রয়েছে নাটোরের সিংড়া দমদমা পাইলট স্কুল অ্যান্ড কলেজ।

বরিশালের সেরা ২০

বরিশাল শিক্ষাবোর্ডে এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় ২৬৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে পরীক্ষার্থীরা অংশ নেন। পরীক্ষার্থীদের সংখ্যা, পাসের হার, জিপিএ-৫ ও প্রাপ্ত পয়েন্টের ভিত্তিতে সেরা ২০ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকা করেছে বরিশাল শিক্ষা বোর্ড। ২০১২ সালের মত এ তালিকায় এবারো প্রথম স্থানে রয়েছে বরিশাল ক্যাডেট কলেজ। দ্বিতীয় স্থানে বরিশাল অমৃত লাল দে কলেজ। তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে বরিশাল সরকারি মহিলা কলেজ। চতুর্থ স্থানে রয়েছে বরিশাল সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজ । এরপরও পর্যায়ক্রমে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার মাহিলাড়া ডিগ্রি কলেজ, বরগুনার আমতলী কলেজ, বরগুনার পাথরঘাটা কলেজ, পিরোজপুরের স্বরূপকাঠীর শহীদ স্মৃতি কলেজ, উজিরপুর উপজেলার হাবিবপুর সৈয়দ আজিজুল হক কলেজ, পিরোজপুর সরকারি বালিকা কলেজ, বরিশালের উজিরপুর উপজেলার গুঠিয়া আইডিয়াল কলেজ, বরিশাল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, পটুয়াখালীর দুমকি জনতা কলেজ, বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার শহীদ আ. রব সেরনিয়াবাত ডিগ্রি কলেজ, ভোলার সরকারি কলেজ, বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার বাবুগঞ্জ কলেজ, বরিশালের হিজলা উপজেলার হিজলা কলেজ, বরগুনার বেতাগী ডিগ্রী কলেজ, বাবুগঞ্জের আগরপুর কলেজ, সবশেষে রয়েছে বরিশালের উজিরপুর উপজেলার আলহাজ্ব বিএন খান ডিগ্রি কলেজ।

যশোরের সেরা ২০

এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় যশোর বোর্ডের সেরা ২০টি কলেজের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজ। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে খুলনার ফুলতলা মিলিটারি কলেজিয়েট স্কুল। যশোর ক্যান্টনমেন্ট কলেজ রয়েছে তৃতীয় অবস্থানে। ৪র্থ স্থান দখলে রয়েছে খুলনা সরকারি গার্লস কলেজের। খুলনার সরকারি এম এম সিটি কলেজ ৫ম স্থানে। ৬ষ্ঠ স্থানে থাকা কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ। ৭ম স্থানে রয়েছে খুলনা পাবলিক কলেজ। ৮ম স্থানে রয়েছে চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ। ৯ম স্থানে থাকা খুলনা বিএল কলেজ। যশোর আকিজ কলেজিয়েট স্কুলের অবস্থান ১০ -এ। খুলনার সরকারি পাইওনিয়র গার্লস কলেজের অবস্থান ১১তম। যশোরের শার্শার ডা. আফিল উদ্দিন কলেজের অবস্থান ১২ম। ১৩তম স্থানে থাকা বাগেরহাটের সরকারি পিসি কলেজ। ১৪তম স্থান সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের। খুলনার রূপসার বঙ্গবন্ধু কলেজের অবস্থান ১৫তম। ১৬তম মাগুরার বিহারীলাল শিকদার কলেজ। খুলনা নৌবাহিনী স্কুল অ্যান্ড কলেজের অবস্থান ১৭তম। ১৮তম স্থানে থাকা যশোর সরকারি এমএম কলেজ। যশোরের বিএএফ শাহীন কলেজ রয়েছেন ১৯তম অবস্থানে। শীর্ষ ২০ এর সর্বনিম্ন অবস্থানে রয়েছে যশোরের হামিদপুর আল হেরা কলেজ।

মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের সেরা দশ

২০১৩ সালের মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের অধীনে আলিম পরীক্ষার ফলাফলে পাসের হার ৯১ দশমিক ৪৬। আর সেরা ১০ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শীর্ষে রয়েছে ঝালকাঠি সদরের এনএস কামিল মাদ্রাসা। মাদ্রাসাটির ১৬৫জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ১৬৪ জন। এর মধ্যে জিপিএ ৫ পেয়েছে ১২১ জন। ২য় হয়েছে ঢাকা জেলার ডেমরা থানার দারুন্নাজাত সিদ্দিকীয়া কামিল মাদ্রাসা। প্রতিষ্ঠানটির মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৩২৭জন। এর মধ্যে ৩২৬জন উত্তীর্ণ হয়। জিপিএ-৫ পায় ১৮৯জন। শীর্ষে থাকা আরও ৮ প্রতিষ্ঠান হচ্ছে- গাজীপুর জেলার টঙ্গী থানার তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসা, রংপুর সদরের ধাপ সাতগাড়া বায়তুল মোকাররম কামিল মাদ্রাসা, ঢাকার যাত্রাবাড়ি তামিরুল মিল্লাত মাদ্রাসা, পিরোজপুর ছারছিনা দারুছুন্নাত কামিল মাদ্রাসা নেসারাবাদ, ঢাকার ডেমরার তামিরুল মিল্লাত মাদ্রাসা মহিলা শাখা, নরসিংদী সদর থানার জামেয়া-ই-কাসেমিয়া কামিল মাদ্রাসা, পাবনা সদর থানার পাবনা ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা ও চট্টগ্রামের জামেয়া আহমাদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসা।

কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের সেরা দশ

২০১৩ সালের কারিগরি বোর্ডের অধীনে এইচএসসি ভোকেশনাল/বিএম (বিজনেস ম্যানেজমেন্ট) ও ডিআইবিএস পরীক্ষার ফলাফলে পাসের হার ৮৫ দশমিক ০৩। সেরা ১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শীর্ষে রয়েছে দিনাজপুরের পার্বতীপুর আদর্শ ডিগ্রি কলেজ। অন্য ৯ প্রতিষ্ঠান হচ্ছে- কুমিল্লা চান্দিনার আবেদ নূর বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট, জামালপুর মাদারীগঞ্জ এলাকার মাহমুদা বেলাল বিএম টেকনিক্যাল কলেজ, জামালপুরের মেলান্দহ মহিলা টেকনিক্যাল কলেজ, দিনাজপুরে খানসামার পাকেরহাট সায়েন্স অ্যান্ড টেকনিক্যাল কলেজ, সোনাতলার বয়রা টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজ, কুড়িগ্রাম ভূরুঙ্গামারির এফ এ উইমেন টেকনিক্যাল অ্যান্ড আইটি ইনস্টিটিউট, রাজশাহী বাঘার ইসলামী একাডেমি টেকনিক্যাল অ্যান্ড এগ্রিকালচারাল কলেজ, জামালুপর ইসলামপুরের দাবরাইপাঁচ টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজ ও যশোর কাসেবপুর আবু শরাফ সাদেক টেকনিক্যাল অ্যান্ড কমার্স কলেজ।

জিপিএ ৪ পেয়েছেন লিমন

র‌্যাবের কথিত বন্দুকযুদ্ধে পা হারানো লিমন হোসেন এইচএসসি পরীক্ষায় পাস করেছেন। তার এখন স্বপ্ন ব্যারিস্টার হবেন। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় পিরোজপুরের কাউখালী পিজিএস ডিগ্রি কলেজ থেকে পরীক্ষায় অংশ নেন লিমন। গত বছর এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়ার কথা থাকলেও ২০১১ সালে র‌্যাবের গুলিতে আহত হওয়ায় প্রথম সেমিস্টার পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি লিমন। ২০১১ সালের ২৩ মার্চ বিকেলে ঝালকাঠী জেলার রাজাপুর উপজেলার সাতুরিয়া গ্রামের তোফাজ্জেল হোসেনের কলেজ পড়ুয়া ছেলে লিমন র‌্যাবের অভিযানে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ পা হারান।

পাশের হার কমেছে বিদেশি কেন্দ্রেও

গতবারের পাশের হারের তুলনায় এবার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় বিদেশি কেন্দ্রেগুলোতেও পাসের হার কমেছে। এবার বিদেশে ৯০ দশমিক ২৪ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে। তবে গতবার পাশের হার ছিল ৯৪ দশমিক ৪১ শতাংশ। ১৪৮ জন পরীক্ষার্থী পাস করেছে। এদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩২ জন। এবারের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ১৬৪ জন অংশ নেয়। দোহার একটি কেন্দ্র থেকে ২২ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে ১৯ জন পাস করেছে। ২ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে। পাশের হার ৮৬ দশমিক ৩৬ শতাংশ। আবুধাবি থেকে ২৪ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়ে ১৯ জন পাস করেছে, জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ জন। জেদ্দার কেন্দ্র থেকে ৪৮ জন পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছে ৪৫ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৪ জন পরীক্ষার্থী। রিয়াদে ৬০ জন পাস করেছে। সেখানে ৬৫ জন অংশ নেয়। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৪ জন। ত্রিপোলি একটি কেন্দ্রে থেকে ৫ জন পরীক্ষা দিয়ে সবাই পাস করলেও জিপিএ-৫ নেই এ কেন্দ্রে। গতবারের পরীক্ষায় মোট ১৭৯ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। তাদের মধ্যে ১৬৯ জন পাস করে। পাসের হার দাঁড়ায় ৯৪ দশমিক ৪১ শতাংশ। জিপিএ-৫ পান ৩২ জন।

ফেল করায় আত্মহত্যা

গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে এইচএসসি পরীক্ষায় ফেল করে জাকিদ কাজী (১৯) নামে এক কলেজছাত্র আত্মহত্যা করেছেন। শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ঘরের আঁড়ার সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। জাকিদ মুকসুদপুর উপজেলার গোহালা ইউনিয়নের পূর্ব-লখণ্ডা গ্রামের সৈকত কাজীর ছেলে।