ভারতীয়রা ঋষিদের বংশধর, বানরের নয়: বিজেপি সাংসদ

মানবজমিন প্রকাশিত: ২০ জুলাই ২০১৯, ০০:০০

চার্লস ডারউইনের তত্ত্ব অস্বীকার করে ভারতের এক সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও বর্তমান সাংসদ জানিয়েছেন, ভারতীয়রা বানরের বংশধর নয়, তারা ঋষিদের সন্তান। শুক্রবার পার্লামেন্টে এমনটা দাবি করেন বিজেপির সাংসদ সাংসদ সত্যপাল সিংহ। লোকসভায় তিনি জানান, তার বিশ্বাস হচ্ছে, ভারতীয়রা ঋষিদের সন্তান, বানরের নয়। তার এই মন্তব্যের পরে লোকসভায় তীব্র হট্টগোল শুরু হয়। বিরোধীপক্ষ তার মন্তব্যের প্রবল প্রতিবাদ জানায়। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার মন্তব্য নিয়ে শুরু হয় হাসি-তামাশা। এ খবর দিয়েছে এনডিটিভি।খবরে বলা হয়, শুক্রবার মানবাধিকার সংক্রান্ত একটি বিল সম্পর্কে আলোচনায় অংশ নিয়েছিলেন সত্যপাল। তখনই তিনি বিতর্কিত ওই মন্তব্য করেন। বিজেপি সরকারের গত শাসনামলে তিনি মানবস¤পদ উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রী ছিলেন ও এর আগে মুম্বইয়ের পুলিশ কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেছেন।সত্যপাল বলেন, ভারতীয় সংস্কৃতি মানবাধিকারকে গুরুত্ব দেয় না এবং মানবাধিকার কর্মীদের ব্যাপারেও কোনো ধারণা পোষণ করে না। আমাদের সংস্কৃতি বলে, আমরা ঋষিদের সন্তান। যারা বিশ্বাস করেন মানুষ বানরের সন্তান তাদের কষ্ট দিতে চাই না কিন্তু আমাদের সংস্কৃতি অনুসারে আমরা ঋষিদের সন্তান।তার এই মন্তব্যে বিস্ময় প্রকাশ করেন তৃণমূলের সাংসদ মহুয়া মৈত্র। সংসদের অধিবেশন শুরুর দিনেই তার ভাষণে সাড়া ফেলেছিলেন মহুয়া। মোদি সরকার কীভাবে ফ্যাসিবাদী হয়ে উঠছে, তা বিস্তারিত তুলে ধরেছিলেন। শুক্রবার সত্যপালের মন্তব্যের পর অবাক বিস্ময়ে তিনি তাকে প্রশ্ন করেন, আপনার মা কি গরু?এর প্রতিক্রিয়ায় সত্যপাল বলেন, যে মানুষেরা মানবাধিকার কর্মীদের মূল্য জানে না তারাই আমার কথার বিরোধিতা করবে।তিনি আরো বলেন, আমাদের সংস্কৃতি বলে মানবাধিকার কর্মীদের কোনো প্রয়োজন নেই। আমাদের দরকার ভাল ও ন্যায়নিষ্ঠ মানুষ হয়ে ওঠা। আমরা মানুষের সঙ্গে তেমনটাই করি, যেমনটা আমাদের সঙ্গে করা উচিৎ বলে আমরা মনে করি। আমরা সব মানুষকে শ্রদ্ধা করতে চাই। এটাই আমাদের সংস্কৃতির আদর্শ।বিজেপি সাংসদ আরো দাবি করেন, মানবাধিকার কর্মীরা বিদেশি সংস্থার দ্বারা অর্থনৈতিক মদতপুষ্ট এবং তারা জঙ্গি, জাতীয়তাবাদ-বিরোধী ও ধর্ষকদের সমর্থক। তিনি বলেন, সরকার তাদের মানবাধিকার রক্ষায় ব্যস্ত যাদের সেটার প্রয়োজন আছে।ডিএমকে সাংসদ কানিমোঝি প্রাক্তন মন্ত্রীর সমালোচনা করে বলেন, আমরা হোমো স্যাপিয়েন্স। এই কক্ষে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি ঠিক রাখা উচিত।সত্যপালের তীব্র সমালোচনা করে তিনি আরো বলেন, দুর্ভাগ্যজনক হলেও, আমার পূর্বপুরুষরা ঋষি ছিলেন না। আমার পূর্ব পুরুষ হোমো স্যাপিয়েন্স ছিল। আর বিজ্ঞান বলে যে, আমার বাবা-মা হচ্ছে শূদ্র। তারা কোনো ঈশ্বরের গর্ভে জন্ম নেননি বা কোনো ঈশ্বরের অংশও নন। তারা পৃথিবীতে জন্ম নিয়েছেন। আর আমি অ্যা আমার রাজ্যের অনেক মানুষ আজ এখানে দাঁড়িয়ে আছি সামাজিক ন্যায়ের আন্দোলনের জন্য ও মানবাধিকারের জন্য। যে অধিকার নিয়ে আমরা আজও লড়ে যাচ্ছি ও লড়তে থাকবো। মানবাধিকার রক্ষা বিল, ২০১৯ লোকসভায় পাশ হয়েছে। তবে বহু বিরোধী সাংসদ আপত্তি জানিয়ে বলেছেন, এই বিলে অনেক ফাঁক আছে।উল্লেখ্য, সত্যপাল এই প্রথমই এমন বিতর্কিত মন্তব্য করেননি। এর আগে ২০১৮ সালেও তিনি ডারউইনের বিবর্তনবাদের তত্ত্ব অস্বীকার করেন ও সেটিকে পাঠ্যবই থেকে সরিয়ে ফেলার দাবি জানান।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও