৫ এমপি ও ২ গুণিজনকে সংবর্ধনা
হবিগঞ্জের ৫ এমপি ও একুশে পদক প্রাপ্ত ২ গুণিজনকে সংবর্ধনা দিয়েছে হবিগঞ্জ এসোসিয়েশন, ঢাকা। সংবর্ধিতরা হলেন বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট মাহবুব আলী এমপি, এডভোকেট মো. আবু জাহির এমপি, এডভোকেট আব্দুল মজিদ খান এমপি, গাজী মো. শাহনেওয়াজ এমপি ও সৈয়দা জোহরা আলাউদ্দিন এমপি এবং একুশে পদক প্রাপ্ত অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম ও বিশিষ্ট কণ্ঠশিল্পী সুবির নন্দী। অনুষ্ঠনে তাদের উত্তরীয় ও সম্মননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। তবে এডভোকেট আব্দুল মজিদ খান এমপি বিদেশে ও কণ্ঠশিল্পী সুবীর নন্দী গুরুতর অসুস্থ থাকায় তাদের পক্ষে অন্যরা উত্তরীয় ও ক্রেস্ট গ্রহণ করেন। গতকাল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠান হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. সি এম দিলওয়ার রানা।এতে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি বলেন, বৃহত্তর সিলেট তথা হবিগঞ্জ জেলা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের ক্ষেত্রেও হবিগঞ্জ বাসীর ভূমিকা কোনো অংশে কম নয়। সংবর্ধিত অতিথিগণ শুধু হবিগঞ্জেরই অহংকার নয় বরং বাংলাদেশের সৌভাগ্যের ধারক ও বাহক। হবিগঞ্জবাসীকে নিজ নিজ স্থান থেকে হবিগঞ্জের সার্বিক কল্যাণে তথা বাংলাদেশের উন্নয়নে অংশীদার হওয়ার অনুরোধ জানান। তিনি আরো বলেন, সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আমাকে প্রধান অতিথি করায় আয়োজকদেরকে জানাই প্রাণঢালা অভিনন্দন ও গভীর কৃতজ্ঞতা। হবিগঞ্জ ও কুমিল্লা জেলার পাশ্ববর্তী হওয়ায় ঐতিহাসিকভাবে আমাদের মধ্যে রয়েছে আন্তরিক ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক। উভয় জেলার শিক্ষা ও সংস্কৃতির সঙ্গে রয়েছে অনেক মিল। হবিগঞ্জ বাসী সত্যিই সৌভাগ্যের অধিকারী। হবিগঞ্জের মানুষের আন্তরিকতা, সামাজিক সম্প্রীতি সত্যিই অতুলনীয়। পরিশেষে তিনি হবিগঞ্জ এসোসিয়েশন, ঢাকা এর সফল্য কামনা করেন। হবিগঞ্জ-৪ আসনের এমপি এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট মাহবুব আলী অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, আমি ছোট মানুষ। তাই অনুভূতিও ছোট। আমি নির্বাচিত হয়ে কাউকে জেলে ঢুকাইনি বা কাউকে বেরও করিনি। আমৃত্যু পর্যন্ত জনগণের সেবা করার কথা ব্যক্ত করেন তিনি। হবিগঞ্জে আরো কীভাবে শিক্ষার আলো ছাড়ানো যায় তার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এই জেলায় একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় হতে যাচ্ছে। লেখা-পড়া আরো কীভাবে বাড়ানো যায় সেদিকে নজর দিতে হবে। তিনি বলেন, এক সময় বিমানকে ক্ষতিগ্রস্ত করার প্রক্রিয়া ছিল। এটা এখন আর নেই। এখন আর বিমানের সিট খালি যায় না। ১৫ মিনিটের মধ্যে বিমানবন্দর থেকে লাগাজ নিয়ে বের হতে পারেন যাত্রীরা। সংবর্ধনা গ্রহণকারী জেলার আরেক এমপি এডভোকেট মো. আবু জাহির বলেন, হবিগঞ্জ জেলা এখন আর অবহেলিত নয়। এটি এখন মডেল জেলা। তিনি বলেন, গত ১০ বছরে নতুন নতুন অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করেছি। লাখাই ও শায়েস্তাগঞ্জে ঘরে ঘরে বিদ্যুতের আলো পৌঁছেছে। অনুষ্ঠানে সংবর্ধনা নেয়ার পর আরেক এমপি গাজী মো. শাহনেওয়াজ বলেন, নবীগঞ্জ-বাহুবলে আগামী ৫ বছরে ৫০ হাজার লোকের কর্মসংস্থান করা হবে। তিনি বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থার উপর গুরুত্ব দিচ্ছি। দু’বছরে টার্গেট। হবিগঞ্জ জেলা শিক্ষায় পিছিয়ে আছে। যোগাযোগ ও শিক্ষায় উন্নয়ন করতে হবে। পরিবেশ বান্ধব শিল্প গড়ে তুলার প্রতি গুরুত্ব দেন তিনি। সংরক্ষিত আসনের এমপি সৈয়দা জোহরা আলাউদ্দিন বলেন, হবিগঞ্জে মহিলাদের উন্নয়নে কাজ করে যাবো। এ জেলায় শিক্ষা থেকে অনেকে বাঞ্চিত, সেদিকে আমাদের নজর দিতে হবে। বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও সাহিত্যিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক, একুশে পদকপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, এই পুরস্কারে দায়িত্ব অনেক বেড়ে গেলো। তিনি বলেন, হবিগঞ্জ জেলা শিক্ষায় পিছিয়ে। শিক্ষা ও যোগাযোগ ব্যবস্থায় আরো উন্নত করা দরকার। তাহলে হবিগঞ্জ সত্যিকারের উন্নতি হবে।অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্যে রাখেন অর্থ বিভাগের সচিব জালাল আহমেদ, প্রকৌশলী আজিজুর রহমান, সংবর্ধনা উপ-কমিটির আহবায়ক অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান তরফদার, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক সৈয়দ ফখরুল হাসান মুরাদ, মাহমুদা আক্তার মিনা প্রমুখ। বিশিষ্ট কণ্ঠশিল্পী সুবির নন্দী অসুস্থ থাকায় তার পক্ষে সংগঠনের প্রবীণ সদস্য জাকারিয়া খান চৌধুরী এবং এডভোকেট আব্দুল মজিদ খান এমপি ভারতে থাকায় তার পক্ষে সাবেক সচিব অশোক মাদব রায় ক্রেস্ট ও উত্তরীয় গ্রহণ করেন।