সরাসরি খামার থেকে সংগ্রহ করা গাভীর দুধে সহনীয় মাত্রার চেয়ে বেশি কীটনাশক ও নানা ধরনের এন্টিবায়োটিকের উপাদান পাওয়া গেছে। একই সঙ্গে পাওয়া গেছে বিভিন্ন অণুজীবও। অন্যদিকে প্যাকেটজাত গাভীর দুধেও মাত্রাতিরিক্ত এন্টিবায়োটিক ও সিসার অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। দুগ্ধজাত পণ্য দইয়েও মিলেছে মানবদেহের জন্য বিষাক্ত সিসা। সরকারি প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ফুড সেফটি ল্যাবরেটরির (এনএফএসএল) এক গবেষণায় উঠে এসেছে এমন ভয়াবহ তথ্য। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) আর্থিক সহায়তায় গোখাদ্য, দুধ, দই ও প্যাকেটজাত দুধ নিয়ে এমন গবেষণা করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিভাগীয় প্রধান ও এনএফএসএল’র প্রধান অধ্যাপক ড. শাহলীনা ফেরদৌসীর নেতৃত্বাধীন দল। গতকাল রাজধানীর জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আবুল কালাম আজাদের সামনে গবেষণার ফল তুলে ধরেন তিনি। প্রতিবেদনে বলা হয়, গো-খাদ্যের ৩০টি নমুনা গবেষণা শেষে দেখা গেছে, এর মধ্যে কীটনাশক (২ নমুনায়), ক্রোমিয়াম (১৬টি নমুনায়), টেট্রাসাইক্লিন (২২টি নমুনায়), এনরোফ্লোক্সাসিন (২৬টি নমুনায়), সিপ্রোসিন (৩০টি নমুনায়) এবং আফলাটক্সিন (৪টি নমুনায়) গ্রহণযোগ্য মাত্রার চেয়ে বেশি মাত্রা পাওয়া গেছে। গাভীর দুধের ৯৬টি নমুনার মধ্যে ৯ শতাংশ দুধে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি কীটনাশক, ১৩ শতাংশে টেট্রাসাইক্লিন, ১৫ শতাংশে সহনীয় মাত্রার চেয়ে বেশি মাত্রায় সিসা পাওয়া যায়। ৯৬ শতাংশ দুধে বিভিন্ন অণুজীবের অস্তিত্ব মেলে। প্যাকেটজাত দুধের ক্ষেত্রে ৩১টি নমুনায় ৩০ শতাংশে সহনীয় মাত্রার চেয়ে বেশি হারে আছে টেট্রাসাইক্লিন। একটি নমুনায় পাওয়া গেছে সিসার অস্তিত্ব। একই সঙ্গে ৬৬ থেকে ৮০ শতাংশ দুধের নমুনায় বিভিন্ন অণুজীব পাওয়া গেছে। দইয়ের ৩৩টি নমুনা পরীক্ষা করে একটিতে সহনীয় মাত্রার চেয়ে বেশি সিসা পাওয়া গেছে। আর ৫১ শতাংশ নমুনায় মিলেছে বিভিন্ন অণুজীব। প্রায় সব গো-খাদ্যে সহনীয় মাত্রার চেয়ে বেশি অ্যান্টিবায়োটিকের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। কীটনাশকও মিলেছে কোনো কোনো খাবারে। সিসা ও ক্রোমিয়ামও আছে। মানুষের রোগ প্রতিরোধ শক্তির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে এসব ক্ষতিকারক উপাদান। ক্যানসারের মতো জটিল রোগ হতে পারে সিসা ও ক্রোমিয়ামের কারণে। গবেষণার বিষয়ে শাহলীনা ফেরদৌসী মানবজমিনকে বলেন, দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে গাভীর দুধের ৯৬টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। ঢাকাসহ তিন জেলার ছয়টি উপজেলাসহ ১৮টি স্থান থেকে দুধের পাশাপাশি অন্যান্য নমুনাও সংগ্রহ করা হয়। গাভীর দুধ ও গো-খাদ্য সরাসরি খামার থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। ঢাকা শহরের বিভিন্ন ব্র্যান্ড দোকান ও আশেপাশের উপজেলার দোকান থেকে সংগ্রহ করা হয় দই। বিভিন্ন সুপার স্টোর থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে বাজারে প্রচলিত প্রায় সব ব্র্যান্ডের প্যাকেটজাত তরল দুধ এবং আমদানি করা প্যাকেট দুধ। এগুলো নির্দিষ্ট নিয়মে ল্যাবরেটরিতে পৌঁছানোর পর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। দুধ, দই ও গো-খাদ্যে এমন সব রাসায়নিকের উপস্থিতি এড়াতে নিবিড় নজরদারি বাড়াতে হবে বলে গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি, সারা দেশের পরিস্থিতি জানতে অধিকতর গবেষণা প্রয়োজন বলে সুপারিশ করেছে গবেষক দল। গুঁড়োদুধ ও দুগ্ধজাত খাবারে মাইক্রোবিয়াল দূষণ ঠেকাতে জিএমপি প্রযুক্তি ব্যবহারেরও তাগিদ দেয়া হয়েছে।
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
We use cookies to ensure you get the best experience on our website.