
সোচ্চার আজীবন সদস্যরা, আদালতের শোকজ
রেডক্রিসেন্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া ইউনিটের নির্বাচন আয়োজনে অনিয়মের বিরুদ্ধে সোচ্চার আজীবন সদস্যরা। আদালতে মামলা এবং সোসাইটির মহাসচিবের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন তারা। আদালত এক আদেশে নির্বাচনী কার্যক্রমে কেন অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে না সে বিষয়ে ৩ দিনের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলেছে ইউনিটের নির্বাচনী সমন্বয়ক গোলাম মহিউদ্দিন খান খোকন, ভাইস চেয়ারম্যান জায়েদুল হক ও সেক্রেটারি মো. শাহআলমকে। সদর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের বিচারক বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত এক মোকদ্দমার প্রেক্ষিতে এই আদেশ দেন বলে জানিয়েছেন বাদী পক্ষের আইনজীবী তারিক হোসেন জুয়েল। এদিকে ব্যাংক হিসাব পরিচালনার বিষয়ে ইউনিটের সেক্রেটারির করা আরেকটি মামলা খারিজ করে দিয়েছেন চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। সম্পূর্ণ বেআইনি ও অবৈধভাবে ইউনিটের গোপন নির্বাচন আয়োজনের অভিযোগ এনে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চেয়ে দেওয়ানী মোকদ্দমাটি (৩০৫/২০১৯) দায়ের করেন মিনারা আলমসহ ইউনিটের মোট ৯ জন আজীবন সদস্য। মামলার আর্জিতে বলা হয়, মামলার ১ নম্বর বিবাদী গোলাম মহিউদ্দিন খান খোকন এবং মামলার অপর ২ বিবাদী জায়েদুল হক ও শাহআলম একই দলের হওয়ায় পরস্পর যোগসাজশে ভোটার ও নির্বাচন ছাড়াই তাদের মনোনীত ব্যক্তিদের নির্বাচিত করার কূটকৌশল হিসেবে গোপনে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন। বিধি মোতাবেক সোসাইটির বার্ষিক কোনো সাধারণ সভা বা সাধারণ সভার কোনো ধরনের পূর্ব নোটিশও দেননি তারা। উল্লেখ্য, নিরপেক্ষ লোকের বদলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ইউনিটের নির্বাচনের জন্যে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম মহিউদ্দিন খান খোকনকে সমন্বয়কারী করে তার মাধ্যমে স্থানীয় দুটি সংবাদপত্রে ২০শে আগস্ট নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। তফসিল অনুসারে ২৬শে আগস্ট প্রার্থী মনোনয়ন বিক্রি, ২৮শে আগস্ট মনোনয়ন দাখিল এবং ৭ই সেপ্টেম্বর নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়। এরপরই নির্বাচনী তফসিলকে বে-আইনি, অবৈধ, অকার্যকরী এবং গঠনতন্ত্র ও বিধিমালা পরিপন্থি ঘোষণার আবেদন জানিয়ে আদালতে মোকদ্দমাটি করা হয়। এদিকে নজরুল ইসলামসহ আরো ৫ জন আজীবন সদস্য নতুন তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন সোসাইটির মহাসচিবের কাছে। ৫ই সেপ্টেম্বর দেয়া ওই আবেদনে তারা অভিযোগ করেন পরিপত্র অনুসারে নির্বাচনের কোনো কিছুই করা হয়নি। ভোটার তালিকা যথাযথ প্রক্রিয়ায় হালনাগাদ করা হয়নি। দলীয় লোককে করা হয়েছে সমন্বয়কারী। ঘোষিত তফসিলে প্রার্থীদের মনোনয়নের টাকা পরিপত্রের বেশি নির্ধারণ করা হয়েছে। জনস্বার্থে এবং আজীবন সদস্যদের মৌলিক অধিকার রক্ষায় নতুন তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন করার দাবি জানান তারা। এর আগে রেডক্রিসেন্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া ইউনিটের চেয়ারম্যান শফিকুল আলম নানা অনিয়মের মাধ্যমে নির্বাচন করার বিষয়ে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। যাতে নির্বাচনের ৩০ দিন পূর্বে তফসিল ঘোষণা করার কথা থাকলেও ঠিক ১৭ দিন আগে স্থানীয় সংবাদপত্রে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয় বলে অভিযোগ করা হয়। নির্বাচনের ১৫ দিন আগে ওজিএম (ওর্ডিনারি জেনারেল মিটিং) স্থান সম্পর্কিত চিঠি পোস্ট অফিসের মাধ্যমে আজীবন সদস্যদের কাছে প্রেরণ না করে ইউনিটের সাড়ে ৯ হাজার সদস্যকে নির্বাচনের বিষয়ে অন্ধকারে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। এদিকে ব্যাংক হিসাব পরিচালনা করার বিষয়ে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ইউনিটের সেক্রেটারি মো. শাহআলমের দায়ের করা একটি মামলাও একইদিন আদালত খারিজ করে দেয়। ইউনিটের ভাইস চেয়ারম্যান ও সেক্রেটারি স্বাক্ষরিত চেক আইনসঙ্গত না হওয়ায় জনতা ব্যাংক ব্রাহ্মণবাড়িয়া কর্পোরেট শাখা সেটি গ্রহণ না করায় মামলাটি করা হয়। এ ব্যাপারে ৩ দিন শুনানির পর আদালত আদেশ দেয়। এই মামলায় ব্যাংকের আইনজীবীদের একজন তারিক হোসেন জুয়েল জানান- ইউনিটের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, সেক্রেটারি ও ইউনিট কর্মকর্তার স্বাক্ষরে ব্যাংক হিসাব পরিচালনা করার নিয়ম।
- ট্যাগ:
- বাংলাদেশ
- রেড ক্রিসেন্ট
- শোকজ
- ব্রাহ্মণবাড়িয়া