জেলা প্রশাসনে কমিটি নিয়ন্ত্রণ এবং পদে যখন ডিসির স্ত্রী

প্রথম আলো নাহিদ হাসান প্রকাশিত: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১:৪২

জেলা বা উপজেলা প্রশাসনে যেভাবে বিভিন্ন কমিটি হতো, সেভাবেই হতে দেখা যাচ্ছে এখনো। গণ–অভ্যুত্থানের পর আগের মতোই চলছে জনপ্রশাসন, এখানে কোনো সংস্কার নেই। সম্প্রতি গাইবান্ধায় জেলা মহিলা ক্রীড়া সংস্থার আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা নিয়ে স্থানীয়ভাবে সমালোচনা তৈরি হয়। সেখানে পদাধিকারবলে আহ্বায়ক হয়েছেন ডিসির স্ত্রী। ডিসির স্ত্রী কীভাবে ‘পদবি’ হতে পারে, তা জানি না। আইনি কাঠামো প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের আগে প্রভু বানাত। চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে এ পরিস্থিতি কতটুকু বদলাল?


জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের গঠনতন্ত্রের ধারা অনুযায়ী, জেলা মহিলা ক্রীড়া সংস্থার সভানেত্রী হবেন জেলা প্রশাসক কর্তৃক মনোনীত জেলার একজন নারী ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব। কিন্তু বিগত বছরগুলোতে জেলা প্রশাসকদের অনেকেই তাঁদের স্ত্রীকে এই সংস্থার পদে বসিয়েছেন। এখনো এর ধারাবাহিকতা দেখা যাচ্ছে। এতে যেমন জেলা নারী ক্রীড়া ব্যক্তিত্বরা মূল্যায়ন হওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, ক্রীড়া ক্ষেত্রে তাঁরা ভূমিকা রাখতে পারছেন না, অন্যদিকে জেলা প্রশাসকদের ক্ষমতাচর্চার নমুনাও প্রকাশ পাচ্ছে।


অতীতে ডিসিরা প্রশাসন ক্যাডারের জন্য পৃথক ব্যাংক, স্পেশাল ফোর্স, দিবস উদ্‌যাপনে কোটি টাকা বরাদ্দ, জ্বালানি তেল ব্যবহারের সীমা তুলে দেওয়া এবং ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসক নিয়োগের ক্ষমতা চেয়েছিলেন। চেয়েছিলেন বিচারিক ক্ষমতাও। শেখ হাসিনার আমলে সর্বশেষ ডিসি সম্মেলনে তাঁরা চেয়েছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের রাজনীতি বন্ধ করতে। প্রস্তাবের ফর্দে ছিল ২৪৪টি দাবি।­


উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কমিটিতে চেয়ারম্যান হন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। উপদেষ্টা হিসেবে থাকেন স্থানীয় সংসদ সদস্য। শরীয়তপুরের ডিসি শিক্ষা কমিটিতে চেয়ারম্যানদের বদলে ইউএনওকে চেয়ারম্যান করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। অথচ বাংলাদেশ ইউনেসকো ও আইএলওর সদস্য। সদস্যদেশের শিক্ষকেরা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত থেকে দেশ গঠনে ভূমিকা রাখার সুযোগ পান।


সংবিধান বলছে, নির্বাচিতদের সমন্বয়ে গঠিত প্রতিষ্ঠানের ওপর ‘স্থানীয় শাসনের’ ভার থাকবে। উপজেলা পরিষদ বাতিলবিষয়ক কুদরত-ই-ইলাহি পনির মামলার ঐতিহাসিক রায়ে বলা হয়েছিল, জেলাসহ প্রতিটি প্রশাসনিক একাংশ সব পরিস্থিতিতে শুধু নির্বাচিতরাই চালাবেন। প্রয়াত সাংবাদিক মিজানুর রহমান খান পরোক্ষ ভোটে জেলা পরিষদ সৃষ্টির সময় আশঙ্কা করেছিলেন, আমলাতন্ত্র মাঠের নির্বাচিতদের গিলে খাবে।


অথচ দেখেছি, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানদের সরিয়ে ইউএনওদের শিক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান বানাতে চায়। অন্যদিকে আপিল বিভাগের রায় অনুসারে ইউএনও এবং ডিসির এসিআর লেখার কথা উপজেলা ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানদের। কারণ, সংবিধানের ৫৯ অনুচ্ছেদ বলছে, প্রতিটি জেলার ‘স্থানীয় শাসনে’ তিনটি বিষয় থাকবে—(ক) প্রশাসন ও সরকারি কর্মচারীদের কার্য, (খ) জনশৃঙ্খলা রক্ষা, (গ) জনসাধারণের কার্য ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন। মানে ডিসিদের যেসব প্রস্তাব প্রতিবছর তুলে ধরা হয়, তার ৯০ শতাংশ তোলারই এখতিয়ার তাঁদের নেই।


১৯৫৬ সালে পাকিস্তানের সংবিধান ও ১৯৭২ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়নের সময়ও তারা বিচার বিভাগকে আলাদা করার বিরোধী ছিল। ২০০৭ সালে মাসদার হোসেন মামলার যে রায় এসেছিল, তা ডিসিরা মানতে পারছিলেন না। অন্তর্বর্তী সরকারকে ধন্যবাদ, সুপ্রিম কোর্টের আলাদা সচিবালয় করে বিচার বিভাগকে স্বাধীন করার ঐতিহাসিক পদক্ষেপ তারা নিল।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও