বায়ু দূষণে বিপন্ন শিশুর ভবিষ্যৎ

ঢাকা পোষ্ট আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার প্রকাশিত: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১:১৪

বায়ু দূষণ আজ বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্যের সবচেয়ে নীরব কিন্তু প্রাণঘাতী সংকটগুলোর একটি। দ্রুত শিল্পায়ন, নগরায়ন এবং জীবাশ্ম জ্বালানির বাড়তি ব্যবহার বিশ্বব্যাপী এই দূষণকে আরও ভয়াবহ সংকটে পরিণত করেছে। এই দূষণ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে শিশুদের ওপর।


বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এর তথ্যমতে, পৃথিবীর প্রায় ৯৩ শতাংশ শিশু প্রতিদিনই এমন বাতাসে শ্বাস নিয়ে থাকে যার দূষণের মাত্রা WHO–এর সুপারিশকৃত মানমাত্রার থেকে অনেক বেশি। শিশুদের শারীরিক বৃদ্ধি, মস্তিষ্কের বিকাশ, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং ভবিষ্যৎ উৎপাদনশীলতার ওপর এই দূষণের প্রভাব দীর্ঘমেয়াদি ও অপরিবর্তনীয়। ফলে দূষণের ক্ষতি তাদের ভবিষ্যতকে অন্ধকার করে দিতে পারে।


শিশুদের শারীরিক বৈশিষ্ট্য, শ্বাস-প্রশ্বাসের হার এবং দূষকের প্রতি অতিরিক্ত সংবেদনশীলতা তাদের বায়ু দূষণের প্রধান শিকার করে তুলেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রতিবছর বিশ্বে প্রায় ৭ মিলিয়ন মানুষ বায়ু দূষণজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায় এবং এর মধ্যে প্রায় সাত লাখ শিশুর মৃত্যু ঘটে যাদের বয়স পাঁচ বছরের নিচে।


ইউনিসেফের তথ্য অনুযায়ী, পৃথিবীর প্রায় ১.৮ বিলিয়ন শিশু এমন এলাকায় বসবাস করে যেখানে বায়ু দূষণের মাত্রা WHO–এর নির্ধারিত মানের থেকেও বহুগুণ বেশি। অর্থাৎ পৃথিবীর প্রতি তিন জন শিশুর মধ্যে দুই জন নিয়মিত অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর বা বিপজ্জনক বাতাসে শ্বাস নিচ্ছে, যা তাদের ভবিষ্যৎ জীবনকে বহুমুখী সংকটের মধ্যে ফেলে দিচ্ছে।


বিজ্ঞানীরা বলছেন, শিশুদের ফুসফুসের তুলনামূলক ছোট আকার, শ্বাস নেওয়া হার বেশি হওয়া এবং বাইরে অধিক সময় কাটানো, এই কারণগুলো তাদের বায়ু দূষণের প্রতি সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ করে তোলে। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব এনভায়রনমেন্টাল হেলথ সায়েন্সেস (NIEHS) অনুযায়ী, একটি শিশু প্রতি কেজি দৈহিক ওজনের তুলনায় একজন প্রাপ্তবয়স্কের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ পরিমাণ বাতাস গ্রহণ করে, ফলে একই পরিবেশে শিশু দূষক গ্যাস ও কণা বেশি গ্রহণ করে।


এছাড়া PM2.5 নামে পরিচিত অতিসূক্ষ্ম কণাগুলো এত ছোট যে তা শুধু ফুসফুসেই আটকে থাকে না, বরং রক্তনালীর মাধ্যমে মস্তিষ্কেও পৌঁছে যায়। ২০১৮ সালে ল্যানসেট কমিশনের একটি গবেষণায় প্রকাশ পায়, PM2.5–এর ঘনত্বে প্রতি 10 μg/m³ বৃদ্ধি শিশুর অকালমৃত্যুর ঝুঁকি অন্তত ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি করে।


শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে বায়ু দূষণের নেতিবাচক প্রভাব সবচেয়ে বেশি। কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটির একটি দীর্ঘমেয়াদি গবেষণা তথ্যমতে, গর্ভকালীন সময়ে উচ্চমাত্রার কার্বন ব্ল্যাক ও PAH (Polycyclic Aromatic Hydrocarbons)–এর সংস্পর্শে আসা শিশুদের মধ্যে পরবর্তীতে IQ স্কোর ৪–৫ পয়েন্ট কম পাওয়া যায়। আর IQ–এর এমন স্বল্প পরিবর্তনও জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে যেমন, শিক্ষা, কর্মসংস্থান, সিদ্ধান্তগ্রহণ ও মনোজাগতিক স্থিতিশীলতায় দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও