বিশ্ব গণমাধ্যমে বাঙালির বিজয়

ঢাকা পোষ্ট রাহাত মিনহাজ প্রকাশিত: ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:৩৯

গণহত্যার খবর লুকাতে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ ঢাকায় অবস্থান করা প্রায় অর্ধ শতাধিক সাংবাদিককে ঢাকা ছাড়তে বাধ্য করেছিল পাকিস্তানের জান্তা সরকার। ওইদিন মেজর সিদ্দিক সালিকের সরাসরি তত্ত্বাবধানে খোলা ট্রাকে করে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেল থেকে ঢাকা বিমানবন্দরে নেওয়া হয়েছিল বিদেশি গণমাধ্যমে কর্মরত এই সাংবাদিকদের।


যদিও কোনোভাবেই সাড়ে সাত কোটি বাঙালির ওপর চালানো পাকিস্তানি বর্বরতা লুকিয়ে রাখা যায়নি। বলা যায় যুদ্ধের নয় মাস নানা প্রতিকূল পরিস্থিতি ও ঝুঁকির মধ্যে দিয়ে বাঙালির মুক্তি সংগ্রামের কথা, পাকিস্তানি হায়েনাদের বর্বরতার চিত্র বিশ্ববাসীর সামনে তুল ধরেছে সংবাদপত্রগুলো।


এই গণমাধ্যমগুলোই ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাঙালি জাতির অবিস্মরণীয় অর্জনের কথা, বিজয়ের কথা প্রকাশ করেছিল অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে। এখানে একটা কথা উল্লেখ করা প্রয়োজন, মার্চের শেষে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী বিদেশি সাংবাদিকদের ঢাকা থেকে বহিষ্কার করলেও যুদ্ধের শেষ দিনগুলোয় অনেক সাংবাদিক জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাংলাদেশের মুক্তাঞ্চলে প্রবেশ করেছিলেন। যাদের অনেকেই এ.কে. নিয়াজীর আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে ছিলেন। দেখেছেন পাকিস্তানিদের লজ্জাজনক পরাজয়।


পরাজয়ে প্রায় কান্নায় ভেঙে পড়েন টাইগার নিয়াজী


বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে এক অবিস্মরণীয় অবদান রেখেছিল লন্ডনভিত্তিক দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফ। সংবাদপত্রটির তরুণ প্রতিবেদন সায়মন জন ড্রিং জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঢাকার বুকে সংঘটিত গণহত্যা নিয়ে ‘ট্যাংক ক্রাশ রিভোল্ট ইন ইস্ট পাকিস্তান (TANKS CRUSH REVOLT IN PAKISTAN)’ তৈরি করেছিলেন। যা ছিল বিশ্ব গণমাধ্যমে প্রকাশিত বাংলাদেশের গণহত্যা নিয়ে প্রথম কোনো সংবাদ প্রতিবেদন।


আর ১৭ ডিসেম্বর ১৯৭১ সংবাদপত্রটি প্রকাশ করে রেসকোর্স ময়দানের পাকিস্তানি আত্মসমর্পণের এক বিস্তারিত বিবরণ। যার শিরোনাম ছিল ‘টাইগার নিয়ারলি ইন টিয়ার্স (TIGER NEARLY IN TEARS)’। অনেকেই জানেন যে, পাকিস্তানি জেনারেল এ.কে. নিয়াজী টাইগার! নামে পরিচিত ছিলেন। যিনি কয়েকদিন আগেও দম্ভভরে ঘোষণা দিয়েছিলেন শেষ পর্যন্ত লড়াই করার।


তিনি বলেছিলেন, ঢাকার প্রতিটি সড়কে যুদ্ধ হবে। আর ভারতীয়দের ঢাকায় প্রবেশ করতে হবে তার মরদেহের ওপর দিয়ে। এমন দম্ভ করা জেনারেল ১৬ ডিসেম্বর লজ্জাজনক আত্মসমর্পণ দলিলে সই করে প্রায় কেঁদে ফেলেছিলেন। সেই বর্ণনায় ১৭ ডিসেম্বর প্রকাশিত প্রতিবেদনে দিয়েছে দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফ। সংবাদপত্রটির বর্ণনায় বলা হয়েছে, Gen. "Tiger" Niazi, the East Pakistani Commander who boasted he would "fight to the end", was seen to be near tears after he had signed surrender terms on a table at Dacca Race Course.


He stripped off his epaulette of rank from his right shoulder, unloaded his revolver and handed over his ammunition to Lt. Gen. J. S. Aurora, the turbaned Sikh leader of the Indian forces. Then he pressed his forehead to that of the Indian General as an act of submission. Gen. Aurora was hoisted on his soldiers' shoulders amid cheering crowds crying "Zindabad" ("Long live "). (December 17, 1971, The Daily Telegraph.)


অর্থাৎ, পূর্ব পাকিস্তানের কমান্ডার জেনারেল টাইগার! নিয়াজী, যিনি গর্ব করে বলেছিলেন, "শেষ পর্যন্ত লড়াই করবেন", ঢাকা রেসকোর্সের একটি টেবিলে আত্মসমর্পণের দলিলে স্বাক্ষর করার পরে তাকে প্রায় কান্নারত অবস্থায় দেখা যায়।


তিনি তার ডান কাঁধ থেকে পদমর্যাদার ব্যাজ খুলে ফেলেন, রিভলভারটি তুলে দেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর শিখ কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল জে.এস. অরোরার হাতে। এরপর তিনি আত্মসমর্পণ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ভারতীয় জেনারেলের সামনে মাথা নত করেন। এসময় সেনারা জনতার মধ্যে জেনারেল অরোরাকে কাঁধে তুলে "জিন্দাবাদ" (দীর্ঘজীবী হও) বলে চিৎকার করে উল্লাস করতে থাকেন। (১৭ ডিসেম্বর ১৯৭১, দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফ)

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও