পদ্মার চরের নিয়ন্ত্রণ: অস্ত্রধারী ছাড়া বাকি সবাই ‘বোবা’
নাটোরের লালপুরের গৌরীপুর ও লক্ষ্মীপুর ঘাট থেকে নৌকায় করে পদ্মা নদীর ভেতরের বালুমহাল দেখতে যেতে চাইলে অনেকেই নিরুৎসাহিত করলেন।
আগ্রহ দেখে কেউ কেউ ঘাবড়ে গেলেন। একজন বললেন, “ওখানে কেন? জায়গাটা তো ভালো না!”
তা ঠিক; মাত্রই তিনটি খুন হয়েছে। বেশ কয়েকজন মাঝিকে অনুরোধ করেও রাজি করানো গেল না। বালুমহালে যেতে চাওয়ায় কথা না বাড়িয়ে পাশ কাটিয়ে চলে গেলেন। শেষমেষ পরিচিত একজনকে অনেক বুঝিয়ে রাজি করানো গেল।
গৌরীপুর, লক্ষ্মীপুরের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে পদ্মা নদী। পশ্চিমে রাজশাহীর বাঘা, পূর্বে পাবনার ঈশ্বরদী আর দক্ষিণে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলা।
পদ্মার প্রবাহের নানা পরিবর্তন এবং গতিপথ বদলের কারণে নদী এলাকায় তৈরি হয়েছে বিস্তীর্ণ বালুচর। মূল নদীতে পড়তে হলে আগে সরু খাল বা ছোট নদী বেয়ে যেতে হয়।
তেমনি এক ছোট নদী পার হয়ে পদ্মায় নামার আগে থেমে যায় নৌকা। মাঝির মোবাইলে বারবার ফোন আসতে থাকে। মাঝিকে একটু উদ্বিগ্ন মনে হয়।
তিনি কাছে এসে বললেন, “ভাই, পদ্মায় নামা যাবে না। কাঁকন বাহিনীর অনুমতি না নিয়ে ওখানে যাওয়া যাবে না। নৌকা ঘুরাতে হবে।”
মাঝিকে অভয় দিয়ে বা বুঝিয়েও কোনো কাজ হল না। নৌকা ঘুরে আবার খাল-নদী বেয়ে গৌরীপুর ঘাটে ফিরে এল।
ঘাটে আরেক মাঝি বললেন, “কাঁকন বাহিনীর অনুমতি ছাড়া পদ্মায় গেলে রাতেই মরতে হত।”
মাঝির কথার সুর পাওয়া গেল পুলিশ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আমজাদ হোসাইনের কথাতেও। তিনি চলতি বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নাটোরের পুলিশ সুপার ছিলেন। বর্তমানে আছেন গাজীপুরের শিল্প পুলিশে।