পোড়া বস্তিতে নিঃস্ব হওয়ার বেদনা, সঙ্গে ক্ষোভ-সন্দেহ
নির্ঘুম রাত কাটিয়ে ভোরের আলো ফুটতেই মেয়েকে বোনের কাছে রেখে নিজের পোড়াঘরে এলেন নাজমা বেগম। পুড়ে ভেঙে পড়া টিন আর ছাইয়ের গাদার মধ্যে হাতড়ে বেড়াচ্ছিলেন তিনি—১৪ বছরের সংসারের কিছু পাওয়ার আশায়।
বুধবার সকাল ৮টার দিকে গিয়ে দেখা গেল, তার বাড়িতে অনেক মানুষের ভিড়; বেশিরভাগই উৎসুক জনতা। ভিড়ের মধ্যে নিজের কাজটাও করতে পারছিলেন না বলে অন্যদের তাড়াতে বকাঝকা করছিলেন নাজমা।
বলছেন, “সবাই আইছে তামশা দেখপার। আর আমরা রাইতে ঘুমাইতে পারি না, পোলাপাইনডি সকাল থাইকা এহনো কিছু খায় নাই। আর হ্যারা আইসা খালি ভিড্যু করে।”
নাজমার ঘরের জায়গায় অনেকটা তেড়েই এলেন একজন; আশরাফ পরিচয় দেওয়া এ তরুণ বলছেন, “আমাগো এইহানে আগুন দিছে, আপনারা এইসব লেখেন না কেন। ফেসবুকে দেহেন।”
আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে—এমন সন্দেহের কথা বলেছেন অনেক বস্তিবাসী। আর সন্দেহের উৎস হিসেবে বলেছন ফেইসবুকে দেখা ‘তথ্যকে’। নিজেরা সন্দেহজনক কিছু দেখেছেন—এমন কথা কেউ বলেননি।
সেখানে বয়োজ্যেষ্ঠ আব্দুল মতিন বলছেন, “এইখানে নাকি মার্কেট করব, হেইজন্যি উচ্ছেদ করতে আগুন লাগাই দিছে। আমাগেরে ভালোভাবে কইলেই তো আমরা চইল্যা যাইতাম।”
৯০ একর জমি নিয়ে গড়ে ওঠা ৮০ হাজার মানুষের এ আবাসস্থলই ঢাকার সবচেয়ে বড় বস্তি। ঢাকার অভিজাত এলাকা গুলশান ও বনানী লাগোয়া কড়াইল বস্তির বাসিন্দাদের প্রায় সবাই খেটে খাওয়া মানুষ। আশপাশের বাসা-বাড়ি, অফিস, দোকানে কাজ পাওয়া যায় অনেকটা সহজেই, সেই কারণে কিছুটা কষ্ট করে হলেও কড়াইলের বাসিন্দা হয়েছেন অনেকেই।
- ট্যাগ:
- বাংলাদেশ
- অগ্নিকাণ্ড
- ক্ষোভ প্রকাশ